ওসমান হাদীর মৃত্যুর ঘটনায় আবেগপ্রবণ ইউনূস! বাংলাদেশি দূতাবাসে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখার ঘোষণা

প্রেসকার্ড নিউজ ওয়ার্ল্ড ডেস্ক, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:০৫:০১ : গত বছর বাংলাদেশে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে সহিংস বিদ্রোহের সূত্রপাতকারী বিরোধীদলীয় নেতা ওসমান হাদী বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫) সিঙ্গাপুরে মারা গেছেন। কয়েকদিন আগে ওসমান হাদী গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হন। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনূস তার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন।

মহম্মদ ইউনূস জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণে বলেন, "আজ আমি আপনাদের জন্য অত্যন্ত দুঃখজনক সংবাদ নিয়ে আসছি। জুলাইয়ের বিদ্রোহের একজন নির্ভীক যোদ্ধা এবং ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান হাদী, যিনি সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন, তিনি আর আমাদের মধ্যে নেই। আল্লাহ যেন তাঁর শান্তিতে বিশ্রাম নেন। মাত্র কয়েক মুহূর্ত আগে, সিঙ্গাপুরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভিভিয়ান বালাকৃষ্ণান ফোনে আমাকে এই দুঃখজনক সংবাদটি জানিয়েছেন। আমি প্রার্থনা করি যে সর্বশক্তিমান ঈশ্বর যেন ফ্যাসিবাদ ও সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে সংগ্রামের এই অমর সৈনিককে শহীদ হিসেবে কবুল করেন।"

ইউনুস বলেন, "আসুন আমরা সকলে একসাথে প্রার্থনা করি। শরীফ ওসমান হাদীর অকাল মৃত্যুতে আমি গভীর শোক প্রকাশ করি। তাঁর মৃত্যু জাতির রাজনৈতিক ও গণতান্ত্রিক দৃশ্যপটের জন্য এক অপূরণীয় ক্ষতি। আমি তাঁর আত্মার শান্তি কামনা করি এবং তাঁর শোকাহত স্ত্রী, পরিবারের সদস্য, প্রিয়জন এবং সহকর্মীদের প্রতি আমার গভীর সমবেদনা জানাই। সরকার শহীদ ওসমান হাদীর স্ত্রী এবং তাঁর একমাত্র সন্তানের কল্যাণের দায়িত্ব নেবে। শহীদ শরীফ ওসমান হাদীর অকাল মৃত্যুকে সামনে রেখে, আমি আগামী শনিবার জাতীয় শোক দিবস ঘোষণা করছি। এই উপলক্ষে, শনিবার সকল সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সরকারি ও বেসরকারি ভবন এবং বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশি দূতাবাসে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত থাকবে।"

তিনি বলেন, "শুক্রবারের নামাজের পর শহীদ ওসমান হাদীর আত্মার শান্তি কামনা করে দেশের সকল মসজিদে বিশেষ প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হবে। আমি আপনাদের সকলকে অংশগ্রহণের জন্য আহ্বান জানাচ্ছি। অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের উপাসনালয়েও বিশেষ প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হবে। হাদির চিকিৎসায় সর্বোচ্চ আন্তরিকতা এবং পেশাদারিত্বের জন্য আমি সিঙ্গাপুর সরকারের প্রতি বিশেষ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। বিশেষ করে, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভিভিয়ান বালাকৃষ্ণান, যিনি একজন চিকিৎসকও, তিনি ব্যক্তিগতভাবে হাদির যত্ন নিয়েছিলেন এবং তার চিকিৎসার অবস্থা সম্পর্কে আমাকে নিয়মিত অবহিত করেছিলেন। এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত সকলকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বিচারের আওতায় আনা হবে এবং কঠোরতম শাস্তি দেওয়া হবে। এই ক্ষেত্রে কোনও ছাড় দেওয়া হবে না।"