পিৎজা-বার্গারের নেশাই কেড়ে নিল ছাত্রীর প্রাণ! কী সতর্ক বার্তা চিকিৎসকের? - Press Card News

Breaking

Post Top Ad

Post Top Ad

Wednesday, December 24, 2025

পিৎজা-বার্গারের নেশাই কেড়ে নিল ছাত্রীর প্রাণ! কী সতর্ক বার্তা চিকিৎসকের?


ন্যাশনাল ডেস্ক, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫: ফাস্ট ফুডের নেশায় মৃত্যু এক মেধাবী ছাত্রীর। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর প্রদেশের আমরোহায়। মৃতার নাম অহনা। চাউমিন, ম্যাগি, পিৎজা এবং বার্গারের মতো জাঙ্ক ফুড খাওয়া ১৬ বছর বয়সী অহনার জন্য মারাত্মক প্রমাণিত হয়। অন্ত্রের সংক্রমণের পর তাঁর অবস্থার খুব বেশি অবনতি ঘটে। তাঁকে চিকিৎসার জন্য এইমস-এ নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি, অকালেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে সে। মেয়ের মৃত্যুতে শোকে মূহ্যমান গোটা পরিবার।


অহনার মৃত্যু আরও একবার ফাস্ট ফুড খাওয়া নিয়ে বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। পরিবারের সদস্যরা হয়তো কখনও ভাবেননি যে, তাদের মেয়ে যে খাবার খেতে এত ভালোবাসত, সেটাই শেষমেষ তাঁর জীবন কেড়ে নেবে। বিশেষজ্ঞরা আগেও এই ধরণের ফাস্ট ফুড অতিরিক্ত খাওয়ার নিয়ে সতর্ক করেছিলেন, কিন্তু তা সত্ত্বেও, কিছু মানুষ এখনও অসাবধানতা অবলম্বন করে চলেছেন। আর ফলস্বরূপ তাদের কেবল অনুশোচনাই করতে হচ্ছে।


আমরোহার মহল্লা আফগানানের বাসিন্দা কৃষক মনসুর খানের সবচেয়ে ছোট মেয়ে অহনা পড়াশোনায় খুব ভালো এবং হাশমি গার্লস ইন্টার কলেজের একাদশ শ্রেণীর ছাত্রী ছিল। পরিবারের সদস্যদের মতে, অহনার ফাস্ট ফুড খাওয়ার শখ ছিল প্রবল। ঘর থেকে না করা সত্ত্বেও, সে প্রায়ই বাইরের খাবার খেতে থাকত। শুরুতে কেউই ধারণা করেনি যে, এই অভ্যাস এত মারাত্মক প্রমাণিত হবে। সেপ্টেম্বরে, অহনার স্বাস্থ্যের হঠাৎ করে অবনতি ঘটে এবং তীব্র পেটে ব্যথা শুরু হয়। ৩০ নভেম্বর, তাঁর পরিবার তাঁকে মোরাদাবাদের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যায়, যেখানে পরীক্ষায় তাঁর অন্ত্রে একাধিক ছিদ্র আছে বলে নিশ্চিত করা হয়। ডাক্তাররা অনেকদিন ধরে ফাস্ট ফুড খাওয়াকেই এর মুখ্য কারণ বলে জানান। 


শারীরিক অবস্থা গুরুতর হয়ে উঠলে ছাত্রীটির অস্ত্রোপচার করা হয়। অস্ত্রোপচারের পর তাঁকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়, কিন্তু বাড়ি ফিরে আসার পরেও তাঁর স্বাস্থ্যের উন্নতি হয়নি। সে ক্রমাগত দুর্বল হয়ে পড়ে। চার দিন আগে স্বাস্থ্যের আবার অবনতি হলে তাঁর পরিবার তাঁকে দিল্লীর এইমস-এ নিয়ে যায়। এইমস-এ চিকিৎসার সময় তাঁর অবস্থার কিছুক্ষণের জন্য উন্নতি হয়, কিন্তু রবিবার রাতে হঠাৎ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে অহনার মৃত্যু হয়। 


সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, তাঁর মামা গুলজার খান ওরফে গুড্ডু বলেন, ডাক্তাররা স্পষ্ট ভাবে ফাস্ট ফুডকেই অন্ত্রের ক্ষতির কারণ বলেছেন। মেধাবী ছাত্রীর অকাল মৃত্যুতে পরিবার ভেঙে পড়েছে। সেইসঙ্গে পুরো এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।


ছাত্রীর মৃত্যুর বিষয়ে, আমরোহার সিএমও সত্যপাল সিং বলেন, "অমরোহায় একটি ঘটনা ঘটেছে যেখানে অতিরিক্ত ফাস্ট ফুড খাওয়ার ফলে মৃত্যু হয়েছে। এই বিষয়ে আমার বক্তব্য হল, শিশুদের পিৎজা, বার্গার, চাউমিনের মত ফাস্ট ফুড থেকে দূরে থাকা উচিৎ। কেননা ফাস্ট ফুডে মশলা, তেল বেশি থাকে, যাতে গ্যাস‌ কর্টেজ এবং ফ্যাটি লিভার হয়। এতে স্থূলতারও আসে এবং ঘন ঘন খাওয়ার ফলে গ্যাস্ট্রাইটিসের সমস্যা হয় এবং অন্ত্রের ক্ষতি হতেও শুরু করে।"


তিনি বলেন, এর ফলে লিভারও ড্যামেজ হয়। অতিরিক্ত ফাস্ট ফুড খেলে শরীরের ক্ষতি ছাড়া আর কিছুই করে না। শিশুদের স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া উচিৎ এবং পরিবারের সদস্যদের এই বিষয়ে ধ্যান দেওয়া উচিৎ। এর পাশাপাশি স্বাস্থ্য সম্পর্কিত যেকোনও সমস্যার জন্য তিনি একজন যোগ্য ডাক্তারের সাথে যোগাযোগেরও পরামর্শও দিয়েছেন, যাতে সময়মতো চিকিৎসা পাওয়া যায়।

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad