ওয়ার্ল্ড ডেস্ক, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫: গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকর থাকা সত্ত্বেও, ইজরায়েল এবং হামাসের মধ্যে সংঘর্ষের খবর প্রতিদিনই সামনে আসছে। এই আবহেই, হামাস একটি গুরুত্বপূর্ণ বিবৃতি জারি করেছে। হামাস বলেছে, তারা গাজা উপত্যকায় তাদের অস্ত্র সেই ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের কাছে সমর্পণ করতে প্রস্তুত, যারা এই অঞ্চলে শাসন করবে, যদি ইজরায়েলি দখল সম্পূর্ণভাবে শেষ হয়ে যায়।
হামাসের প্রধান বার্তাকার এবং গাজায় এর প্রধান খলিল আল-হায়্যা এক বিবৃতিতে বলেছেন যে, "আমাদের অস্ত্র কব্জা এবং আগ্রাসনের অস্তিত্বের সাথে সম্পর্কিত। কব্জা যদি শেষ হয়, তাহলে এই অস্ত্রগুলি দেশের অধীনে চলে যাবে।" হায়্যার কার্যালয় জানিয়েছে যে, তাঁর ইঙ্গিত একটি সার্বভৌম ও স্বাধীন ফিলিস্তিনি দেশের ছিল।
হায়্যা আরও বলেছেন যে, "আমরা জাতিসংঘের বাহিনীকে 'বিচ্ছিন্নতাবাদী বাহিনী' হিসেবে স্বীকার করছি, যার কাজ সীমান্ত পর্যবেক্ষণ করা এবং গাজায় যুদ্ধবিরতি পালন নিশ্চিত করা।" এইভাবেই, হামাস সেই আন্তর্জাতিক বাহিনীকে স্পষ্ট ভাবে খারিজ করে দিয়েছে, যার লক্ষ্য গাজা উপত্যকাকে সম্পূর্ণরূপে নিরস্ত্রীকরণ করা।
এরই মাঝে খবর, মার্কিন-মধ্যস্থতায় হওয়া যুদ্ধবিরতি চুক্তির পরবর্তী ধাপের অংশ হিসেবে বছরের শেষ নাগাদ গাজা পরিচালনার জন্য একটি আন্তর্জাতিক সংস্থা ঘোষণা করা হতে পারে। যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুসারে, 'শান্তি বোর্ড' নামে এই সংস্থা, যার সভাপতিত্ব করবেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, দুই বছরের জাতিসংঘের জনাদেশের অধীনে গাজার পুনর্গঠন তত্ত্বাবধান করবে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে আরব আধিকারিকরা এবং পশ্চিমা কূটনীতিকরা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি)- কে জানিয়েছেন যে, বোর্ডে পশ্চিম এশিয়া এবং পশ্চিমা বিশ্বের প্রায় এক ডজন নেতা অন্তর্ভুক্ত থাকবেন। যুদ্ধের পর গাজার দৈনন্দিন প্রশাসন পরিচালনার জন্য ফিলিস্তিনিদের একটি কমিটিও ঘোষণা করা হবে।
কায়রো থেকে ফোনে এপি-র সাথে কথা বলা একজন পশ্চিমা কূটনীতিক বলেছেন যে, এই মাসের শেষের দিকে ট্রাম্প এবং ইজরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর মধ্যে বৈঠকের সময় এটি ঘোষণা করা হতে পারে। যুদ্ধবিরতি চুক্তির অধীনে, নিরাপত্তা বজায় রাখা এবং হামাসের নিরস্ত্রীকরণ নিশ্চিত করার জন্য একটি সশস্ত্র আন্তর্জাতিক স্থিতিশীলতা বাহিনীও গঠন করা হবে।
এই ঘোষণা ট্রাম্পের ২০-দফা যুদ্ধবিরতি পরিকল্পনা বাস্তবায়নের দিকে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হবে। এই চুক্তি ১০ অক্টোবর থেকে কার্যকর হয়েছে। একজন আরব আধিকারিক বলেছেন যে, গাজার জন্য আন্তর্জাতিক বাহিনীতে কোন কোন দেশের সেনা সামিল হবেন, তা নিয়ে এখনও আলোচনা চলছে। তবে মোতায়েন ২০২৬ সালের প্রথম ত্রৈমাসিকে শুরু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

No comments:
Post a Comment