ওয়ার্ল্ড ডেস্ক, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫: বাংলাদেশে হিন্দু যুবক দীপু চন্দ্র দাসের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের প্রতিধ্বনি এখন আন্তর্জাতিক স্তরে শোনা যাচ্ছে। সম্প্রতি লণ্ডনে বাংলাদেশ হাইকমিশনের বাইরে একটি বিশাল বিক্ষোভ শুরু হয়। তবে, এই শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভের সময় উত্তেজনা দেখা দেয়, যখন খালিস্তানি বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীগুলি বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতিরক্ষায় এগিয়ে আসে।
সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, শনিবার (২৭ ডিসেম্বর, ২০২৫) লণ্ডনে বসবাসকারী ভারতীয় ও বাংলাদেশি হিন্দুরা, দীপু দাস খুন এবং বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার বিরুদ্ধে হাই কমিশনের বাইরে একটি বিক্ষোভের আয়োজন করে। বিক্ষোভকারীরা অপরাধীদের কঠোর শাস্তি এবং হিন্দুদের সুরক্ষার দাবী জানায়। এই সময় আশ্চর্যজনকভাবে, খালিস্তানি সমর্থকরা বিক্ষোভের বিরোধিতা করতে পৌঁছে যায়।
প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, খালিস্তানি বিক্ষোভকারীরা মহম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ সরকারের ঢাল হিসেবে দাঁড়িয়েছিল। তারা কেবল খুনের প্রতিবাদকারী হিন্দুদের ভয় দেখানোর চেষ্টা করেছে তা নয় বরং তাদের বিরুদ্ধে উস্কানিমূলক স্লোগানও দেওয়া হয়। পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে দেখে লণ্ডন পুলিশ হস্তক্ষেপ করে এবং উভয় পক্ষের মধ্যে দেওয়াল হয়ে শান্তি বজায় রাখার চেষ্টা করে।
এই ঘটনা ভারতবিরোধী শক্তির মধ্যে ক্রমবর্ধমান জোটের দিকে ইঙ্গিত করে। খালিস্তানি সন্ত্রাসী সংগঠন শিখস ফর জাস্টিস (এসএফজে) এর নেতা গুরপতবন্ত সিং পান্নু ঘন ঘন ভারতবিরোধী বক্তব্য দিচ্ছেন। সম্প্রতি পান্নু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে একটি ভিডিও জারি করে বাংলাদেশি উগ্রপন্থীদের সমর্থন করেছিল।
পান্নু ভারতের উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলিকে বিভক্ত করার জন্য একটি নতুন ষড়যন্ত্র করেছেন। তিনি একটা বিতর্কিত মানচিত্র জারি করেছেন, যাতে আসাম, মেঘালয়, মণিপুর, মিজোরাম, ত্রিপুরা এবং নাগাল্যান্ড মিলে একটি পৃথক দেশ তৈরির দাবী করা হয়। পান্নু এই কাল্পনিক দেশটির নাম দিয়েছেন "ট্রাম্পল্যান্ড"। সেইসঙ্গে তিনি অরুণাচল প্রদেশকে চীনের অংশ হিসেবে দেখানোর সাহসও করেছেন।
উল্লেখ্য, এটিই প্রথমবার নয় যে, কেউ উত্তর-পূর্বকে ভারত থেকে আলাদা করার আহ্বান জানিয়েছে; এর আগেও কিছু বাংলাদেশি উগ্রপন্থী নেতা একই রকম দাবী করেছে।
গুরপতবন্ত সিং পান্নু কখনও ভারতের বিরুদ্ধে বিষোদ্গার করার সুযোগ হাতছাড়া করেন না। তিনি প্রায়শই পাকিস্তানি চ্যানেলগুলিতে উপস্থিত হন এবং ভারতবিরোধী এজেন্ডা প্রচার করেন। পান্নু ২০২৩ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপের সময় স্টেডিয়াম এবং বিমান নিশানা করার হুমকি দিয়েছিলেন। ২০২৫ সালে স্বাধীনতা দিবসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে ভারতীয় পতাকা উত্তোলন থেকে যে কেউ বাধা দেবে তার জন্য তিনি পুরষ্কার ঘোষণা করেছিল।

No comments:
Post a Comment