বিনোদন ডেস্ক, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫: বিশ্বজুড়ে বিয়ের বিভিন্ন রীতিনীতি রয়েছে। বিভিন্ন ধরণের আচার-নিয়ম পালন করা হয়। অনেক বিয়েতে জুতোয় মদ ঢেলে পান করার রীতি আছে, আবার কিছু জায়গায় বরকে ষাঁড়ে চড়িয়ে তাঁর শক্তি প্রদর্শন করতে হয়, আবার কিছু জায়গায় লোকেরা বর-কনের ওপর দিয়ে হেঁটে যাওয়ার রীতি আছে। কিন্তু জানেন কী এমনও একটি জায়গা আছে যেখানে বিয়ের আগে কনের দুটি দাঁত ভেঙে হয়? আজ্ঞে হ্যাঁ, ভাবতে অবাক লাগলেও এমন রীতিও রয়েছে।
চীনের গেলাও উপজাতির মধ্যে এখনও একটি প্রথা প্রচলিত আছে, যা বিশ্বজুড়ে প্রায় সব মানুষকেই অবাক করে। বিয়ের আগে, কনের মামা একটি ছোট হাতুড়ি ব্যবহার করে তাঁর দাঁত ভেঙে দেন। ঐতিহ্য অনুসারে, এই প্রথাটি কেবল একটি সাংস্কৃতিক প্রতীক এবং ক্ষত নিরাময়ের জন্য একটি বিশেষ ঔষধ ব্যবহার করা হয়।
এই প্রথাটি আধুনিক বিশ্বেও তার শিকড় বজায় রেখেছে এবং স্থানীয় সমাজে সম্মান ও পরিচয়ের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত হয়। দক্ষিণ চীনে বসবাসকারী গেলাও জাতি তাঁদের ঐতিহ্য এবং রীতিনীতির জন্য পরিচিত। বিয়ের আগে কনের দাঁত ভাঙার প্রথা শতাব্দী ধরে এই উপজাতিতে প্রচলিত। এটি কনের প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার এবং বিয়ের জন্য তাঁর প্রস্তুতির প্রতীক বলে মনে করা হয়। উল্লেখযোগ্য বিষয় হল এই প্রক্রিয়ায় কোনও সহিংসতা নেই বরং এটি একটি সাংস্কৃতিক রীতি হিসেবে পালন করা হয়।
কনের মামা এই ঐতিহ্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তিনি কনের দাঁতে হালকাভাবে আঘাত করার জন্য একটি ছোট কাঠের হাতুড়ি ব্যবহার করেন। এই কাজটি অত্যন্ত যত্ন এবং অভিজ্ঞতার সাথে করা হয়, যাতে দাঁত ভেঙে যায় কিন্তু গুরুতর আঘাত না লাগে।
দাঁত ভাঙার পর, মাড়িতে একটি বিশেষ ওষুধ প্রয়োগ করা হয়, যা দ্রুত আরোগ্য লাভ করায় এবং সংক্রমণের ঝুঁকি কমায়। এই প্রক্রিয়াটি সম্প্রদায়ের স্বাস্থ্য ও সুরক্ষা মানদণ্ড অনুসারে পরিচালিত হয়।
গেলাও সম্প্রদায় এটিকে পারিবারিক ঐতিহ্যের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ বলে মনে করে এবং এটি পরিবর্তন করার কোনও প্রচেষ্টা করা হয় না। এই প্রথাটি বাইরের বিশ্বের কাছে অস্বাভাবিক এবং বিতর্কিত বলে মনে হতে পারে কিন্তু স্থানীয় জনগণের কাছে এটি পরিচয়, ঐতিহ্য এবং প্রাপ্তবয়স্কতার প্রতীক। সমাজে এটিকে সম্মান ও মর্যাদার সাথে দেখা হয়। বিশেষজ্ঞরা বলেন যে, এই ধরণের অনন্য ঐতিহ্য মানব সমাজের বিশাল এবং জটিল সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য প্রদর্শন করে।

No comments:
Post a Comment