প্রেসকার্ড নিউজ বিনোদন ডেস্ক, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮:০০:০১ : অনেক পরিবারেই দেখা যায় যে তাঁদের মাত্র একটি সন্তান রয়েছে। সমাজের কিছু অংশে আবার এই ধারণা প্রচলিত যে এক সন্তান হওয়াকে নাকি অশুভ বা অপয়া বলা হয়। বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে এখনও অনেকেই মনে করেন, একটি সন্তান থাকলে পরিবারে নানা সমস্যার আশঙ্কা থাকে এবং যত দ্রুত সম্ভব দ্বিতীয় সন্তানের জন্ম দেওয়া উচিত। কিন্তু সত্যিই কি এক সন্তান হওয়া অমঙ্গলজনক? নাকি এটি নিছকই কুসংস্কার? জ্যোতিষশাস্ত্র কী বলছে এই বিষয়ে—আসুন জেনে নেওয়া যাক।
আধুনিক যুগের ভাবনা ও সমাজের কুসংস্কার
বর্তমান সময়ে পরিবার পরিকল্পনা, আর্থিক পরিস্থিতি এবং ব্যক্তিগত সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে অনেক দম্পতিই একটি সন্তানেই সন্তুষ্ট। তবে সমাজে এখনও এমন কিছু ভ্রান্ত ধারণা রয়ে গেছে, যেখানে বলা হয় এক সন্তান থাকলে বাড়িতে বিশেষ পূজা-পাঠ না করলে ঈশ্বর বা গ্রহের কৃপা পাওয়া যায় না। অনেক জায়গায় এটিকে ‘অপয়া’ বলেও চিহ্নিত করা হয়। প্রশ্ন হল—এই বিশ্বাসের কোনও বাস্তব বা শাস্ত্রীয় ভিত্তি আছে কি?
জ্যোতিষাচার্য গোপাল শর্মার মতে, এক সন্তান হওয়া কোনওভাবেই দোষ বা অশুভ নয়। তিনি স্পষ্ট করে জানান, একমাত্র পুত্র বা একমাত্র কন্যা থাকলে পরিবারে অমঙ্গল নেমে আসে—এই ধারণা সম্পূর্ণই অন্ধবিশ্বাস। কারও একটি সন্তান থাকলে ভয়ের কোনও কারণ নেই, এতে কোনও গ্রহদোষ বা নেতিবাচক প্রভাব পড়ে না।
কেন অনেকের একের বেশি সন্তান হয় না?
জ্যোতিষশাস্ত্র অনুযায়ী, যদি কারও একটি সন্তানের পর আর সন্তান না হয়, তার কারণ অনেক সময় জন্মকুণ্ডলীর গ্রহগত অবস্থান হতে পারে। কুণ্ডলীর পঞ্চম ভাবকে সন্তানের স্থান বলা হয়। এই স্থানে যদি গুরু, কেতু বা মঙ্গলের মতো কিছু গ্রহ অশুভ অবস্থানে থাকে বা খারাপ দৃষ্টিতে প্রভাব ফেলে, তবে সন্তান লাভে বাধা সৃষ্টি হতে পারে।
রাহু-কেতু ও সন্তান যোগ
যদি পঞ্চম ভাবে রাহু বা কেতু অবস্থান করে, তবে তাকে অনেক সময় নাগদোষ বা পুত্রদোষ বলা হয়। এর ফলে সন্তান লাভে বিলম্ব বা সমস্যা দেখা দিতে পারে। তবে জ্যোতিষীরা স্পষ্ট করে বলেন, এই দোষ থাকলেও এক সন্তান হওয়া মানেই সেই সন্তানের কোনও ক্ষতি হবে—এমন ভাবার কোনও কারণ নেই।
দোষ থাকলে কী করণীয়?
শাস্ত্র অনুযায়ী, যাঁরা নিজেদের কুণ্ডলীতে প্রজনন সংক্রান্ত বাধা বা দোষ অনুভব করেন, তাঁরা কিছু ধর্মীয় উপায় অবলম্বন করতে পারেন—
নাগদেবীর দুধ বা পঞ্চামৃত দিয়ে অভিষেক
শ্রীকালহস্তীর মতো পবিত্র তীর্থস্থানে গমন
রাহু-কেতু শান্তি পূজা
ভক্তিভরে দেবী দুর্গা ও ভগবান গণেশের আরাধনা
নবগ্রহ মন্দিরে দরিদ্রদের অন্ন বা বস্ত্র দান
এই সব উপায়ে গ্রহের অশুভ প্রভাব অনেকটাই কমে যায় বলে বিশ্বাস করা হয়।

No comments:
Post a Comment