ন্যাশনাল ডেস্ক, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫: বিহার বিধানসভা নির্বাচনে পরাজয়ের এক মাস পর, জনসূরজ পার্টির নেতা প্রশান্ত কিশোর সম্পর্কে সামনৈ এসেছে এক বড়সড় খবর। সম্প্রতি কংগ্রেস সাংসদ এবং দলের সাধারণ সম্পাদক প্রিয়াঙ্কা গান্ধী ভাদ্রার সাথে দেখা করেছেন পিকে। তবে, উভয় দলের সূত্রই এই বৈঠকের গুরুত্বকে খাটো করে দেখেছে। সংসদ প্রাঙ্গণে এই বৈঠক সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা প্রশ্নের উত্তরে প্রিয়াঙ্কা গান্ধী বলেন, "এটাও কি খবর?" তবে, এই বৈঠক ঘিরে রাজনৈতিক গুঞ্জন শুরু হয়েছে। সূত্রের বরাত দিয়ে এনডিটিভি জানিয়েছে যে, গত সপ্তাহে সোনিয়া গান্ধীর ১০ জনপথের বাসভবনে দুজনের দেখা হয়েছিল। দুজনের মধ্যে প্রায় এক ঘন্টা কথা হয়।
দুই নেতৃত্বর মধ্যে এই সাক্ষাৎ তাৎপর্যপূর্ণ কারণ প্রশান্ত কিশোরের কংগ্রেস দলের সাথে দীর্ঘদিনের সম্পর্ক রয়েছে। ২০২১ সালে নীতীশ কুমারের দল, জনতা দল ইউনাইটেড (জেডিইউ) ত্যাগ করার পর, প্রশান্ত কিশোর কংগ্রেস দলে যোগ দেন। এমনকি ২০২২ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে তিনি কংগ্রেসকে পুনরুজ্জীবিত করার জন্য একটি নীলনকশাও তৈরি করেছিলেন। তবে, দলের মধ্যে অবস্থান এবং কর্তৃত্বের পার্থক্যের কারণে তাঁদের মধ্যে সম্পর্ক টানাপোড়েনের দিকে চলে যায়, যার ফলে বিচ্ছেদ ঘটে।
সেই সময়, পিকে কংগ্রেস দলের সাথে তাঁর সম্পর্ক তিক্তভাবে শেষ করে দিয়েছিলেন। তারপর থেকে, তিনি কংগ্রেস দলের সমালোচক হিসেবেই থেকে গেছেন। বিহার নির্বাচনী প্রচারণার সময়, তিনি যুক্তি দিয়েছিলেন যে, ভোটার তালিকার নিবিড় সংশোধন এবং রাহুল গান্ধীর ভোট চুরির প্রচারণা রাজ্যের নির্বাচনী বিষয় নয়। তবে, প্রশান্ত কিশোরের দল, যারা নির্বাচনকে ত্রিভুজাকার করার দাবী করেছিল, বিহার নির্বাচনে শোচনীয় পরাজয়ের সম্মুখীন হয়। তাঁর দল, জন সুরজ পার্টি, একটিও আসন জিততে ব্যর্থ হয়। মোট ২৩৮ জন প্রার্থীর মধ্যে ২৩৬ জনেল (অর্থাৎ ৯৯.১৬%) জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে।
অন্যদিকে, কংগ্রেসের পারফরম্যান্সও হতাশাজনক। কংগ্রেস ২৪৩টি আসনের মধ্যে ৬১টিতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে মাত্র ছয়টিতে জয়লাভ করেছে, যেখানে ২০২০ সালে এই সংখ্যা ছিল ১৯টি। ফলস্বরূপ, জল্পনা চলছে যে পরিবর্তিত রাজনৈতিক আবহাওয়ার কারণে, পিকে কংগ্রেসের সাথে পুনরায় সংযোগ স্থাপন করতে চাইছে। যদিও কংগ্রেস বা পিকে-র দল কেউই এই বৈঠকের বিষয়টি নিশ্চিত করেনি, তবে সূত্রগুলি ইঙ্গিত দেয়, একটি নতুন রাজনৈতিক কাহিনী তৈরি হচ্ছে। সেই কাহিনী কী, এই মুহূর্তে তা একটি বড় প্রশ্ন। এর উত্তর কেবল সময়ের অপেক্ষা।

No comments:
Post a Comment