ওয়ার্ল্ড ডেস্ক, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫: ইউক্রেনের বিরুদ্ধে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বাসভবনে হামলার অভিযোগ করেছে রাশিয়া। সোমবার রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ বলেছেন, "ইউক্রেন নভগোরোদ অঞ্চলে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বাসভবনে হামলার চেষ্টা করেছিল। তাই, মস্কো এখন আলোচনার বিষয়ে নিজ অবস্থান পর্যালোচনা করবে।" ল্যাভরভ বলেছেন যে, ২৮-২৯ ডিসেম্বর ইউক্রেন ৯১টি দূরপাল্লার ড্রোন দিয়ে রাশিয়ার রাষ্ট্রপতির রাষ্ট্রীয় বাসভবনে আক্রমণ করে, যেগুলো রাশিয়ার বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সম্পূর্ণরূপে নষ্ট করে দেয়।
ল্যাভরভ হুঁশিয়ারি দেন যে, এই ধরণের কর্মকাণ্ড বিনা জবাবে থেকে যাবে না। তিনি এটিকে সন্ত্রাসবাদী কাজ বলেও অভিহিত করেছেন। তিনি বলেছেন, রাশিয়ান সশস্ত্র বাহিনীর তরফে প্রতিশোধমূলক হামলার জন্য আগে থেকেই লক্ষ্য নির্বাচন করা হয়ে গেছে। ল্যাভরভ বলেছেন, "ইউক্রেনের সাথে সম্ভাব্য শান্তি চুক্তি নিয়ে চলমান আলোচনার সময় এই হামলাটি ঘটেছে। রাশিয়া এখন আলোচনা থেকে তো সরে আসবে না, তবে মস্কো নিজ অবস্থান পর্যালোচনা করবে।"
তবে, ইউক্রেনের রাষ্ট্রপতি ভলোদিমির জেলেনস্কি এই অভিযোগকে মিথ্যা বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেছেন মস্কো, কিয়েভের সরকারি ভবনগুলিতে হামলার জন্য স্থল প্রস্তুত করছিল। তিনি বলেছেন যে, রাশিয়ার দাবী শান্তি আলোচনাকে দুর্বল করার একটি প্রচেষ্টা। রাষ্ট্রপতি পুতিন সেই সময় তাঁর বাসভবনে ছিলেন কিনা তা স্পষ্ট নয়।
রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হয় ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে, যখন রাশিয়ার রাষ্ট্রপতি পুতিন ইউক্রেনে একটি বড় আক্রমণের ঘোষণা দেন এবং রাশিয়ান বাহিনী বিভিন্ন দিক থেকে ইউক্রেনে প্রবেশ করে। এই সংঘাত হল ২০১৪ সাল থেকে চলমান উত্তেজনার একটি ক্রমবর্ধমান রূপ, যখন রাশিয়া ক্রিমিয়াকে সংযুক্ত করে এবং ডনবাস অঞ্চলে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সমর্থন করে। ২০২২ সালের আক্রমণ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে ইউরোপের বৃহত্তম যুদ্ধে পরিণত হয়, যেখানে লক্ষ লক্ষ লোক বাস্তুচ্যুত হয় এবং হাজার হাজার মানুষ নিহত হয়। রাশিয়া ইউক্রেনের বিশাল অংশ দখল করে। ২০২৫ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত যুদ্ধ অব্যাহত রয়েছে। রাশিয়া ইউক্রেনের প্রায় ২০ শতাংশ ভূখণ্ডের নিয়ন্ত্রণ ধরে রেখেছে। উভয় পক্ষই ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে এবং শান্তি আলোচনা চলছে, তবে এখনও কোনও চূড়ান্ত চুক্তিতে পৌঁছানো যায়নি।

No comments:
Post a Comment