কাশী থেকে ভুলেও বাড়িতে আনবেন না গঙ্গা জল বা ভেজা মাটি! জানুন আধ্যাত্মিক ব্যাখ্যা - Press Card News

Breaking

Post Top Ad

Post Top Ad

Friday, December 5, 2025

কাশী থেকে ভুলেও বাড়িতে আনবেন না গঙ্গা জল বা ভেজা মাটি! জানুন আধ্যাত্মিক ব্যাখ্যা

 


প্রেসকার্ড নিউজ বিনোদন ডেস্ক, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮:০০:০১ : বারাণসী যাকে কাশি বলা হয়, সেই নগরীর প্রতিটি গলি-মোড় জুড়েই যেন আধ্যাত্মিকতার নিঃশব্দ স্রোত বয়ে চলে। এখানে আসা ভক্তরা নানা মন্দিরে দর্শন করেন, গঙ্গার ঘাটে ডুব দিয়ে পবিত্রতার অনুভূতি সংগ্রহ করেন। বহু মানুষ আবার চান এই পবিত্রতার স্পর্শ ঘরেও নিয়ে যেতে।

কিন্তু কাশী সম্পর্কে একটি বিশেষ বিশ্বাস প্রচলিত আছে কাশীর গঙ্গাজল বা সেখানকার ভেজা মাটি বাড়িতে আনা শুভ নয়। কেন এমন বলা হয়? কেবল লোকবিশ্বাস, নাকি এর সঙ্গে গভীর আধ্যাত্মিক কারণ জড়িয়ে আছে? চলুন, কাশীর প্রাচীন পরম্পরা অনুযায়ী এর রহস্য জেনে নেওয়া যাক।

কাশীতে বহু ‘মোক্ষ আশ্রম’ রয়েছে, যেখানে মানুষ জীবনের শেষ প্রহরে এসে থাকেন মৃত্যুর আগ মুহূর্ত পর্যন্ত। বিশ্বাস করা হয় কাশীতে মৃত্যুবরণ করলে আত্মা মুক্তি লাভ করে। মণিকর্ণিকা ঘাটের নাম তো সবারই জানা, যেখানে প্রতিদিন অসংখ্য মানুষের দাহসসকার হয়।

এই কারণে বলা হয় কাশীর গঙ্গাজল ও মাটিতে অসংখ্য আত্মার স্পর্শ রয়ে যায়, যা ঘরে আনলে পরিবেশে অশুভ প্রভাব পড়তে পারে।

একটি প্রচলিত বিশ্বাস অনুযায়ী কাশীর গঙ্গাজল নিয়ে এলে শুধু জলই নয়, সেই জলে থাকা বহু ক্ষুদ্র জীবও সঙ্গে চলে আসে। আর কাশীর বাসিন্দা জীবদেরও নাকি ‘মোক্ষ লাভের’ সুযোগ থাকে। তাই তাদের সেই ভূমি ও জলের পরিবেশ থেকে বিচ্ছিন্ন করা ‘পাপ’ হিসেবে ধরা হয়।

এটি শুধু মানুষের ক্ষেত্রেই নয় কাশীর আকাশ, জল ও মাটিতে থাকা বহু জীবের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।

আত্মিক শক্তির সঞ্চালন ও তান্ত্রিক প্রভাব

কাশী এমন এক তীর্থস্থান, যেখানে হাজার বছর ধরে তান্ত্রিক সাধনা, পিতৃকর্ম, মোক্ষ-অনুষ্ঠান ইত্যাদি চলে আসছে। অঘোরীরা এখানে বিশেষ শক্তিকে জাগ্রত রাখেন, যা কেবল ভগবান শিবের অধীনে নিয়ন্ত্রিত।

তাই বিশ্বাস করা হয় গঙ্গার জল ও মাটিতে আত্মা, তান্ত্রিক শক্তি এবং গূঢ় স্পন্দনের প্রবাহ সক্রিয় থাকে। সেই শক্তি ঘরের শান্ত পরিবেশ ব্যাহত করতে পারে।

কাশীর গঙ্গাজলকে ‘মোক্ষের জল’ বলা হয়। সেখানে যে সব আত্মা দাহসসকারের পর মুক্তির পথে যায়, সেই শক্তির সঙ্গে ওই গঙ্গাজলও জড়িত থাকে। তাই সেই জল ঘরে এনে সংরক্ষণ করা অনেকেই অনুচিত মনে করেন।

গঙ্গায় থাকা জীবাণু বা ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র কীটও নাকি কাশীতে পৌঁছে ‘মুক্তি’ পায় তাদের বোতলে ভরে নিয়ে যাওয়া মানে মুক্তি থেকে বঞ্চিত করা।

মানুষের বিশ্বাস, আধ্যাত্মিকতা ও প্রাচীন ঐতিহ্য সব মিলিয়েই কাশী এমন এক স্থান, যা নিজেই একটি রহস্য। তাই অনেকেই মনে করেন কাশীর গঙ্গাজল ও মাটি সেই পবিত্র ভূমিতেই থাকা উচিত, কারণ তা কেবল জল-মাটি নয়, হাজার বছরের সঞ্চিত আধ্যাত্মিক শক্তির বাহক।

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad