বাম বিজেপির সাথে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমালোচনা করছেন মুসলিম সমাজের একাংশ, চিন্তায় তৃণমূল

বীরভূমের সহিংসতায় শিশুসহ নয়জন নিহত হওয়ার ঘটনায় বিজেপি, কংগ্রেস এবং বামেদের সাথে মুসলিম সমাজের একাংশ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ব্যাপক সমালোচনা করছে।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজনৈতিক কেরিয়ারে ইতিপূর্বে এমন সমালোচনার মুখে পড়তে হয়নি। তবে এর প্রভাব ভোট ব্যাঙ্কে পড়বে কিনা তা বোঝা যাবে ২৩ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে।

 এই সমালোচনা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্য একটি বড় বিব্রতকর পরিস্থিতি। মুসলিম সম্প্রদায়ের কিছু অংশ তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমোর বিরুদ্ধে তাদের আওয়াজ তুলছে, তাকে ভোটব্যাঙ্ক হিসাবে ব্যবহার করার এবং নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পরে তাদের দূরে ছুঁড়ে দেওয়ার অভিযোগ করছে। সর্বভারতীয় নিউজ চ্যানেল টাইমস নাউ-এর সাথে কথা বলার সময়, নজবোত সিদ্দিকী, ফুরফুরা শরীফ পীরজাদা বলেছেন, বাংলায় মুসলমানরা বিপদে রয়েছে, অন্যদিকে মৃত আনিস খানের পরিবার বলেছে যে রাজ্য পুলিশের উপর তাদের কোনো বিশ্বাস নেই।

বাংলায় তৃণমূল শাসনের সমালোচনা করে সিদ্দিকী বলেন, "মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তৃতীয়বার ক্ষমতায় এসেছেন এবং এখন আমরা সবাই বিপদে আছি... আমরা জানতাম না যে আমরা সবাই বিপদে পড়ব।"

মুসলিম সম্প্রদায়ের লোকেদের অবহেলার জন্য টিএমসি সুপ্রিমোকে অভিযুক্ত করে ধর্মগুরু বলেন, "মমতা দিদি আমাদের ব্যবহার করেছেন এবং এখন তিনি আমাদের ছুড়ে ফেলেছেন...তিনি নির্বাচনে আমাদের ব্যবহার করেছেন এবং আমাদের ভোট ব্যবহার করে ক্ষমতায় এসেছেন।"

পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর আরও সমালোচনা করে, মুসলিম ধর্মগুরু বলেছিলেন, "আপনারা সবাই দেখতে পাচ্ছেন যে মুসলমানরা কীভাবে বিপদে আছে...আনিস খানের মামলা, বীরভূম হত্যাকাণ্ড, এই ঘটনাগুলি প্রমাণ করে যে আমরা বিপদে আছি।"

তিনি 2021 সালের নির্বাচনী প্রচারের সময় তার দলের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী চাকরি বা নিরাপদ পরিবেশ প্রদান না করার জন্য ব্যানার্জিকে অভিযুক্ত করেছিলেন৷ "দিদি আশ্বাস দিয়েছিলেন যে তিনি চাকরি দেবেন, বাংলা একটি নিরাপদ জায়গা হবে তবে এর মতো কিছুই নেই," ধর্মগুরু জোর দিয়ে একথা বলেন ।

তিনি তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী শত্রুঘ্ন সিনহাকে ভোট না দেওয়ার জন্য আসানসোলের জনগণের কাছে আবেদন করেছেন।



মুসলিম ধর্মগুরু বিজেপির পক্ষেও বলেছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুসলমানদের জন্য নিরাপদ নন। "তিনি আমাদের জন্য নিরাপদ নন। বিজেপি আমাদের ভালবাসে না কিন্তু আমরা বিজেপিকে ভালবাসব। বিজেপিকে এখনই বাংলায় আসতে হবে...টিএমসি আমাদের সবাইকে ছুরিকাঘাত করেছে," ।



এদিকে, মৃত আনিস খানের বাবা সেলিম খান পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের উপর প্রবলভাবে নেমে এসে বলেছেন, তিনি তার ছেলের মৃত্যুর মামলার তদন্তের জন্য গঠিত বিশেষ তদন্তে (এসআইটি) বিশ্বাস করেন না। আনিসের ভাই দাবি করেছেন, তার ভাইকে তাদের বাড়িতে খুন করা হয়েছে।

"আমতা থানায় যারা আমার ছেলেকে খুন করেছে। কে তাদের পাঠিয়েছে ওসি বা ডিএসপি । পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর (দিদি) পুলিশ বিভাগ আছে...তিনি এসআইটি গঠন করেছেন কিন্তু আমি কীভাবে এটি বিশ্বাস করব।," টাইমসকে বলেন আনিসের ক্ষুব্ধ বাবা।

খান বলেন, "পুলিশ আমার চোখের সামনে আমার ছেলেকে খুন করেছে। আমরা সিবিআই তদন্ত চাই।"