আগ্রার তাজমহল নিয়ে নয়া তথ্য, এটিকে নিজেদের সম্পত্তি বলে দাবী করছে জয়পুরের প্রাক্তন রাজ পরিবার। জয়পুরের প্রাক্তন রাজপরিবারের রাজকন্যা তথা বিজেপি সাংসদ দিয়া কুমারী বলেন, 'তাজমহল আমাদের সম্পত্তি, যা আমাদের পারিবারিক প্রাসাদের সম্পত্তির ওপর নির্মিত। দিয়া কুমারী দাবী করেন, তাঁর কাছে নথি রয়েছে, যা দেখায়়, তাজমহল আগে জয়পুরের প্রাক্তন রাজপরিবারের একটি প্রাসাদ ছিল, যা শাহজাহান কব্জা করে নেয়।
দিয়া কুমারী নিজের কষ্টের কথা জানাতে গিয়ে বলেন, শাহজাহান যখন জয়পুর পরিবারের সেই প্রাসাদ ও জমি নিয়েছিলেন, তখন সেখানে মুঘল সরকার ছিল। তাই তাকে প্রতিহত করা সম্ভব হয়নি। তিনি বলেন, 'আজও সরকার কোনও জমি অধিগ্রহণ করলে তার বিনিময়ে ক্ষতিপূরণ দেয়। এর বিনিময়ে কোনও ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়নি বলে শুনেছি। কিন্তু সে সময় এমন কোনও আইন ছিল না যে, কেউ তার বিরুদ্ধে আপিল করতে পারবে বা তার বিরুদ্ধে কিছু করতে পারবে। এখন কেউ আওয়াজ তুলে আদালতে পিটিশন দাখিল করলে ভালো হয়।'
দিয়া কুমারী বলেন, বন্ধ কক্ষ খুলে তাজমহল আগে কী ছিল তা খুঁজে বের করতে হবে। তিনি বলেন, 'আমি বলব না যে তাজমহল ভেঙে ফেলতে হবে, তবে এর ঘরগুলো খুলে দিতে হবে।' তিনি বলেন, তাজমহলের কিছু কক্ষ বন্ধ রয়েছে। কিছু অংশ সেখানে দীর্ঘদিন সিলগালা করে রাখা হয়েছে। এ বিষয়ে অবশ্যই তদন্ত হওয়া উচিৎ এবং এটি খোলা উচিৎ, যাতে জানা যাবে সেখানে কী ছিল, কী ছিল না। এই সমস্ত তথ্য তখনই স্থিতিশীল হবে,যখন একবার সঠিক তদন্ত হবে এবং যখন আদালত নির্দেশ দেবে যে তাজমহল আগে কী ছিল তা জানা উচিৎ।'
জয়পুরের প্রাক্তন রাজপরিবারের তরফেও আদালতে আবেদন করা হবে কি না? এ প্রশ্নে তিনি বলেন, 'আমরা এখন দেখছি। কী পদক্ষেপ করা উচিৎ, তা আমরা একজামিন করব।
সাংসদ দিয়া কুমারী বলেন, 'নথিপত্রের প্রয়োজন হলে জয়পুরের প্রাক্তন রাজ পরিবারের ট্রাস্টে একটি পোথিখানাও রয়েছে। আমরা সমস্ত নথি সরবরাহ করব। আদালত নির্দেশ দিলে আমরা কাগজপত্র দেব। আমাদের কাছে যে নথিপত্র রয়েছে তা থেকে স্পষ্ট যে, শাহজাহান সেই সময় সেই প্রাসাদটিকে পছন্দ করেছিলেন, তাই তিনি তা দখল করে নিয়েছিলেন।'
সেখানে কি মন্দির ছিল? এ প্রশ্নে দিয়া কুমারী বলেন, আমি এখনও এসব নথি দেখিনি। কিন্তু সেই সম্পত্তি আমাদের পরিবারের।'
প্রসঙ্গত, তাজমহল নিয়ে উত্তরপ্রদেশের এলাহাবাদ হাইকোর্টের লখনউ বেঞ্চে আবেদন করেছেন অযোধ্যার বিজেপি নেতা ডাঃ রজনীশ সিং। ডক্টর সিং তার পিটিশনে আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার (এএসআই) কাছে দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ তাজমহলের ২২টি কক্ষ খুলে জরিপের দাবী জানিয়েছেন। আবেদনকারী বলেছেন যে, তাজমহলে হিন্দু দেব-দেবীর ভাস্কর্য এবং শিলালিপি থাকতে পারে। জরিপ করা হলে জানা যাবে তাজমহলে হিন্দু মূর্তি ও শিলালিপি আছে কি না!
উল্লেখ্য, ১৯৬৫ সালে, ইতিহাসবিদ পিএন ওক তার বইয়ে দাবী করেছিলেন যে, তাজমহল একটি শিব মন্দির।
২০১৫ সালে, তাজমহলকে তেজো মহালয়া মন্দির হিসাবে ঘোষণা করার জন্য আগ্রার সিভিল কোর্টে একটি আবেদন করা হয়েছিল।
২০১৭ সালে, বিজেপি সাংসদ বিনয় কাটিয়ার উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের কাছে তাজমহলকে তেজোমহল হিসাবে ঘোষণা করার দাবী জানিয়েছিলেন।
No comments:
Post a Comment