পাঞ্জাবের অমৃতসরের কাছে আজনালায় একটি কূপের ভেতরে ভারতীয় সেনাদের কঙ্কাল পাওয়া গেছে। ডাঃ জেএস সেহরাওয়াত, পাঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক বলেন, 'এই কঙ্কালগুলি ২৮২ জন ভারতীয় সেনার, যাদের ১৮৫৭ সালে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে ভারতের প্রথম স্বাধীনতা সংগ্রামের সময় খুন করা হয়।'
তিনি বলেন, 'এই কূপটি একটি ধার্মিক কাঠামোর নীচে পাওয়া গিয়েছিল। তিনি আরও বলেন, সমীক্ষায় জানা গিয়েছে যে, এই সৈন্যরা শূকর ও গরুর চর্বি দিয়ে তৈরি কার্তুজ ব্যবহারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছিলেন।'
ডঃ যোগ করেন, "মুদ্রা, পদক, ডিএনএ অধ্যয়ন, বিশ্লেষণ, নৃবিজ্ঞান, রেডিও-কার্বন ডেটিং, সবই একই জিনিস নির্দেশ করে যে, এইগুলি ভারতীয় সৈন্যদের কঙ্কাল।"
২০১৪ সালে আজনালায় প্রথম পুরুষ কঙ্কাল পাওয়া যায়। তখনও সমীক্ষায় বলা হয়েছিল, হতে পারে এগুলো ভারতীয় সেনাদের কঙ্কাল। যদিও, মে মাসের শুরুর দিকে আসা একটি রিপোর্টে আরও বলা হয়েছিল যে, কঙ্কালগুলি ১৯৪৭ সালের দেশভাগের সময় হতে পারে।
২৮ এপ্রিল ফ্রন্টিয়ার্স ইন জেনেটিক্স জার্নালে প্রকাশিত সমীক্ষা অনুসারে, পুরুষরা ২৬ তম নেটিভ বেঙ্গল ইনফ্যান্ট্রি ব্যাটালিয়নের অংশ ছিল, যা মূলত বাংলা, ওড়িশা, বিহার এবং উত্তর প্রদেশের পূর্বাঞ্চলের সৈন্যদের নিয়ে গঠিত।
সেহরাওয়াত বলেন যে, 'এই সবেরই শুরু হয়েছিল ২০১৪ সালে একটি মিউজিয়াম লাইব্রেরি দিয়ে। ইন্ডিয়ান রিসার্চ স্কলার, এক সরকারি কর্মচারীর একটি বই খুঁজে পান, যাঁর ১৮৫৭ সালে অমৃতসরে পোস্টিং ছিল। বইটিতে পাঞ্জাব সম্পর্কে তথ্য দেওয়া হয়েছে। বইটি ১৮৫৮ সালে ১০ মে এফএইচ কুপার দ্বারা দিল্লীর পতন পর্যন্ত সময়ের কথা বলে। এতে সৈন্যদের গণহত্যা ও কবর দেওয়া স্থানের উল্লেখ রয়েছে। বইটিতে লেখা আছে যে, এই স্থানটি আজনালায় (অমৃতসরে) একটি ধর্মীয় কাঠামোর নীচে রয়েছে।'
সেহরাওয়াত বলেন, 'গবেষক নিজেও ছিলেন আজনালার। তিনি তার বাড়িতে এসে বিষয়টি প্রশাসনকে জানান। কিন্তু তখন বিষয়টিকে কেউ গুরুত্বের সঙ্গে নেয়নি। এরপরে খোঁড়াখুঁড়ির কাজ স্থানীয় লোকজন নিজেরাই করেছেন। তারা আসলে ধর্মীয় কাঠামোর নীচে কূপটি খুঁজে পেয়েছিল, যার মধ্যে ছিল মানুষের কঙ্কাল, মুদ্রা ও পদক।'
No comments:
Post a Comment