'রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নোবেল চুরি করেছে বাংলার ছেলেরা'! বিস্ফোরক তৃণমূল বিধায়ক

২৫ শে বৈশাখ, কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মজয়ন্তী। আর এই দিনেই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নোবেল পুরষ্কার নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন তৃণমূল বিধায়ক মনগোবিন্দ অধিকারী। এই মন্তব্য ঘিরেই এখন শুরু হয়েছে বিতর্ক। 

সোমবার এক অনুষ্ঠানে পূর্ব বর্ধমানের ভাতারের তৃণমূল বিধায়ক মনগোবিন্দ অধিকারী বলেন, নোবেল পুরষ্কার দিয়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে অপমান করা হয়েছে, তাই বাংলার ছেলেরা এটি চুরি করেছে। 

তৃণমূল বিধায়ক আরও বলেন, 'বিজেপি এত সিবিআই সিবিআই করে লাফাচ্ছে কিন্তু সিবিআই সেই নোবেলটা বার করে আনতে পারেনি, বাংলার পুলিশকে সেই নোবেল বার করার জন্য কাজে লাগানো হচ্ছে।'

এদিকে তৃণমূল বিধায়কের এমন বক্তব্যের পর বাংলার রাজনীতি উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। বিজেপির অভিযোগ, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নোবেল চুরি করেছে তৃণমূল। অতএব, বাংলা সরকার কখনই সিবিআই তদন্তে সহযোগিতা করেনি। এদিকে তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ দলীয় বিধায়কের বিবৃতিকে তিরস্কার করেছেন এবং এই বিবৃতি থেকে দলকে দূরে সরিয়ে দিয়েছেন।

উল্লেখ্য, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর গীতাঞ্জলির জন্য ১৯১৩ সালে নোবেল পুরস্কার পেয়েছিলেন, কিন্তু পরে এটি চুরি হয়ে যায়।

তৃণমূল বিধায়ক মনগোবিন্দ অধিকারী বলেন, “রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে নোবেল দিয়ে অপমান করা হয়েছে। তাই তো বাংলার ছেলেরা সেই নোবেল চুরি করেছে। সিবিআইকে বলা হয়েছে, আমাদের সব তথ্য দিতে এবং আমরা নোবেল পুরষ্কার খুঁজে আনব। সব ক্ষেত্রেই বিজেপি সিবিআই তদন্তের দাবী করে, কিন্তু সিবিআই একটি মামলারও সঠিক তদন্ত করতে পারছে না।"

প্রসঙ্গত, বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে তাঁর পুরষ্কার রাখা হয়েছিল, কিন্তু ২০০৪ সালে এটি চুরি যায়। এরপর মামলাটি সিবিআইয়ের কাছে হস্তান্তর করা হয় এবং এটি ২০০৭ সালে বন্ধ হয়ে যায়। বিশেষ ব্যাপার হল আসল নোবেল খুঁজে পাওয়া যায়নি। ২০০৮ সালে, সিবিআই মামলার তদন্ত পুনরায় শুরু করে, কিন্তু ২০০৯ সালে আবারও তা বন্ধ হয়ে যায়।

তৃণমূল বিধায়কের মন্তব্য প্রসঙ্গে বিজেপি নেতা রাহুল সিনহা বলেন, 'তৃণমূল নোবেল পুরষ্কার চুরি করেছে, আমি আগেই বলেছিলাম। আজ ভাতারের বিধায়কের মুখ দিয়ে সে সত্যি কথাটাই ঘুরে ফিরে বেরিয়ে এল। আর তাই সিবিআই তদন্তে প্রথম থেকেই অসহযোগিতা করে আসছে বঙ্গ সরকার। তদন্তে কেন্দ্রীয় প্রতিষ্ঠানকে বাধা দিচ্ছে।' 

রাহুল সিনহা আরও বলেন, 'মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, সিবিআই যদি নোবেল খুঁজে না পায়, তবে তিনি খুঁজে দেবেন। এর মানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানেন কে চুরি করেছে আর কে চুরি করে নিয়ে গিয়েছে।'

পাশাপাশি তৃণমূলকে কটাক্ষ করে বিজেপি নেতা বলে,ন 'যেভাবে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মদিনে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে নোবেল দেওয়া নিয়ে প্রশ্ন তুললেন ভাতারের বিধায়ক, তাতেই রবীন্দ্রনাথ সম্পর্কে তৃণমূলের আসল ভাবনা প্রকাশ্যে চলে এল।'