মঙ্গলবার রাতেই প্রয়াত হয়েছেন জনপ্রিয় সঙ্গীত শিল্পী কে কে (কৃষ্ণকুমার কুন্নাথ), তার মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ দেশ, সুরের আকাশে এ যেন নক্ষত্র পতন। এদিন রাতে নজরুল মঞ্চে অনুষ্ঠান চলাকালীন অসুস্থ বোধ করেন গায়ক। তিনি যে অস্বস্তি বোধ করছিলেন, সেই সময়কার ভিডিও বর্তমানে ভাইরাল সোশ্যাল মিডিয়ায়। সেখানে তার চোখে মুখে অস্থিরতার ছাপ স্পষ্ট। অসুস্থ অনুভব করায় হোটেলে ফিরে যান তিনি, সেখানে বমি হয় এবং মাথা ঘুরে পড়েও যান কে কে। এরপর তড়িঘড়ি তাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত বলে ঘোষণা করেন। প্রাথমিক অনুমান হার্ট অ্যাটাকের কারণেই তার মৃত্যু হয়েছে। যদিও ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এলেই জানা যাবে মৃত্যুর আসল কারণ। তবে তার অনবরত অস্বস্তি বোধ করা, ঘাম মোছা, বমি এই সবকিছু হার্ট অ্যাটাকের প্রাথমিক লক্ষণ বলেই মনে করা হয় সাধারণত।
হার্ট অ্যাটাক হঠাৎ করেই হতে পারে, তবে কিছু লক্ষণ আছে, যা হার্ট অ্যাটাকের ১ মাস আগে থেকেই দেখা দিতে শুরু করে। আপনিও যদি শরীরে এইসব উপসর্গ দেখেন তাহলে সাবধান, কারণ আপনিও হার্ট অ্যাটাকের শিকার হতে পারেন। এই লক্ষণগুলি এখনই জেনে নিন, যাতে হার্ট অ্যাটাক এড়ানো যায়।
বুকে অস্বস্তি - এটি হার্ট অ্যাটাকের জন্য দায়ী লক্ষণগুলির মধ্যে একটি। বুকে যেকোনও ধরনের অস্বস্তি আপনাকে হার্ট অ্যাটাকের শিকার করতে পারে। বিশেষ করে বুকে চাপ বা জ্বালা অনুভব করা। যদি এই অস্বস্তি থেকে ব্যথা আপনার বাহু, ঘাড়, চোয়াল বা পিঠে ছড়িয়ে পড়ে, তবে আপনার সতর্ক হওয়া উচিৎ এবং অবিলম্বে আপনার ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করুন। এগুলো হার্ট অ্যাটাকের কয়েক মিনিট বা ঘন্টার আগের লক্ষণ।
অযথা ক্লান্তি - কোন কাজ বা পরিশ্রম ছাড়াই ক্লান্ত হয়ে পড়াও হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ হতে পারে। কোলেস্টেরলের কারণে হৃৎপিণ্ডের ধমনী বন্ধ হয়ে গেলে বা সরু হয়ে গেলে, হৃদপিণ্ডকে আরও কঠোর পরিশ্রম করতে হয়, যা শীঘ্রই ক্লান্তির দিকে নিয়ে যায়। এমন পরিস্থিতিতে, অনেক সময় রাতে পর্যাপ্ত ঘুম হওয়ার পরেও আপনি অলসতা এবং ক্লান্তি অনুভব করেন। এমনকি আপনি দিনেও ঘুম বা বিশ্রামের প্রয়োজন অনুভব করেন।
প্রদাহ - শরীরের সমস্ত অভ্যন্তরীণ অঙ্গগুলিতে রক্ত পৌঁছে দেওয়ার জন্য হৃৎপিণ্ডকে যখন কঠোর পরিশ্রম করতে হয়, তখন শিরাগুলি ফুলে যায় বা তাদের ফুলে যাওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। এর প্রভাব বিশেষ করে পায়ের আঙ্গুল, গোড়ালি এবং পায়ের অন্যান্য অংশে ফোলা আকারে দেখা যায়। কখনও কখনও ঠোঁটের পৃষ্ঠে নীল আভাও দেখা যায়।
ঘন ঘন সর্দি লাগা - ঘন ঘন এবং দীর্ঘ সময় ধরে সর্দি, নাক দিয়ে জল গড়িয়ে পড়া বা এর সাথে সম্পর্কিত লক্ষণগুলিও হার্ট অ্যাটাকের ইঙ্গিত দেয়। হার্ট যখন শরীরের অভ্যন্তরীণ অঙ্গগুলিতে রক্ত সঞ্চালনের জন্য কঠোর পরিশ্রম করে, তখন ফুসফুসে রক্ত পড়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। শীতকালে কফের সাথে সাদা বা গোলাপী রঙের শ্লেষ্মা ফুসফুসে রক্ত নিঃসৃত হওয়ার কারণে হতে পারে।
মাথা ঘোরা - আপনার হৃৎপিণ্ড দুর্বল হয়ে পড়লে এর মাধ্যমে রক্ত চলাচলও সীমিত হয়ে যায়। এমতাবস্থায় মস্তিষ্কে প্রয়োজন অনুযায়ী অক্সিজেন পৌঁছায় না, যার কারণে ক্রমাগত মাথা ঘোরা বা হালকা মাথা ব্যথার মতো সমস্যা দেখা দেয়। এটি হার্ট অ্যাটাকের জন্য দায়ী একটি গুরুতর উপসর্গ, যা আপনার একেবারেই উপেক্ষা করা উচিৎ নয়।
এগুলি ছাড়াও, আপনি যদি শ্বাস-প্রশ্বাসে কোনও পরিবর্তন অনুভব করেন বা শ্বাস নিতে কষ্ট হয়, তবে এটিও হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ হতে পারে। হৃৎপিণ্ড যখন তার কাজ সঠিকভাবে করতে অক্ষম হয়, তখন ফুসফুস প্রয়োজনীয় পরিমাণ অক্সিজেন পায় না। এ কারণে শ্বাসকষ্ট হয়। যদি আপনার ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটে, তবে দেরি না করে অবশ্যই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হোন।
No comments:
Post a Comment