বাংলা সারদা চিট ফান্ড কেলেঙ্কারির অভিযুক্ত সুদীপ্ত সেন, কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরী, বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী এবং টিএমসি নেতা মুকুল রায়ের বিরুদ্ধে বড় অভিযোগ তুলেছেন। সুদীপ্ত বলেন, তিনি এই নেতাদের সঙ্গে মিলে শুভেন্দু অধিকারীর ছোট ভাইকে টাকা দিয়েছিলেন।
উল্লেখ্য, মুকুল রায় প্রথমে তৃণমূল থেকে বিজেপিতে চলে গিয়েছিলেন এবং পরে আবার টিএমসিতে ফিরে আসেন। আবার একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে শুভেন্দু অধিকারী টিএমসি ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন। সুদীপ্ত সেনকে কলকাতার একটি আদালতে শুনানির জন্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব অভিযোগ করেন।
সুদীপ্ত সেন সাংবাদিকদের বলেন যে, তিনি রাজ্য সরকারকে একটি চিঠি লিখেছেন এবং শুধুমাত্র শুভেন্দু অধিকারীর নামই নয়, মুকুল রায় এবং অধীর রঞ্জন চৌধুরীর নামও লিখেছেন। তিনি বলেন, 'আমাদের কোম্পানি পূর্ব মেদিনীপুর জেলার কন্টাই শহরে একটি উঁচু ভবন নির্মাণ করছিল। আমরা কন্টাই নগর মহাপালিকাকে 90 লক্ষ টাকা দিয়েছিলাম, যা শুভেন্দু অধিকারী দাবী করেছিলেন। এতে তার ভাই সৌমেন্দুও জড়িত ছিলেন। এর পরও বিল্ডিং প্ল্যান পাস হয়নি।'
সুদীপ্ত সেন যদিও এটা বলেননি, যে বিষয়টি কোন সময়ের, তবে ধারণা করা হচ্ছে, কন্টাই পৌর কর্পোরেশনের কন্ট্রোল যখন অধিকারীদের হাতে ছিল, বিষয়টি সেই সময়ের হবে। শুভেন্দু অধিকারীর বাবা শিশির অধিকারী এবং ভাই দিব্যেন্দু অধিকারী দুজনেই পূর্ব মেদিনীপুরের লোকসভা সদস্য।
সুদীপ্ত সেনকে 2013 সালে কাশ্মীরের একটি হোটেল থেকে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ গ্রেফতার করেছিল। তিনি সারদা গ্রুপের চেয়ারম্যান ছিলেন। এরপর থেকেই হেফাজতে রয়েছে সারদা কর্তা। শুভেন্দু অধিকারী মমতা সরকারের ক্যাবিনেট মন্ত্রী ছিলেন, কিন্তু 2020 সালে বিজেপিতে যোগ দেন। সৌমেন্দু 2021 সালে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন। সারদা চিটফান্ড মামলায় সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পরে সিবিআইয়ের দায়ের করা এফআইআর-এ মুকুল রায় এবং শুভেন্দু অধিকারীর নাম ছিল। বিষয়টি নিয়ে ইডিও তদন্ত করছে।
মুকুল রায় তার প্রতিনিধির বরাত দিয়ে জানান, সুদীপ্ত সেনের অভিযোগ সম্পর্কে তিনি অবগত নন। অধীর রঞ্জন চৌধুরী বলেছেন, তিনি সুদীপ্তর বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করবেন। সুদীপ্ত সেন অতীতেও একই ধরনের অভিযোগ করেছেন বলে জানান তিনি। অধীর রঞ্জন চৌধুরী বলেন, 'আমি আমার আইনজীবীর মাধ্যমে তাকে মানহানির নোটিশ পাঠিয়েছি। এখনও কোনও উত্তর পাইনি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সুদীপ্ত সেনকে আমার বিরুদ্ধে ব্যবহার করছেন।'
প্রসঙ্গত, পশ্চিমবঙ্গ, আসাম, ঝাড়খণ্ড, ওড়িশা এবং ছত্তিশগড়ের প্রায় 18 লক্ষ বিনিয়োগকারীর কাছ থেকে 2,460 কোটি টাকা তোলা হয়েছিল। এই টাকা 34 গুন করে ফেরত দেওয়ার লোভনীয় প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। কিন্তু টাকা ফেরত দেওয়া হয়নি কাউকেই। এই মামলায় দুই বছর জেল খেটেছেন দলের মিডিয়া বিভাগের প্রধান কুণাল ঘোষ। তৃণমূল এখন দাবী করছে যে, 'শুভেন্দু অধিকারীকেও এই বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা উচিৎ। এত মানুষ যখন সিবিআই তদন্তের মুখোমুখি হচ্ছেন শুভেন্দু কেন নয়?'
No comments:
Post a Comment