নিয়োগে কেলেঙ্কারি নিয়ে রাজ্যে তোলপাড় চলছে। এরই মাঝে ফের আরও এক দুর্নীতির অভিযোগ ঘিরে চাঞ্চল্য। রাজ্যের অন্যতম শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন আধিকারিকের বিরুদ্ধে কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে।
অভিযোগ, প্রভাব খাটিয়ে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ ও কারচুপি করা হয়েছে। করোনা মহামারীর সময়, যখন স্কুল-কলেজ বন্ধ ছিল, তখন বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় স্টুডেন্ট লাইফ সাইকেল নামে একটি বেসরকারি সংস্থাকে ২১ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছিল। ওই প্রকল্পে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। এখন এতে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও তাঁর ঘনিষ্ঠদের নামও যুক্ত হয়েছে।
সূত্রের খবর, স্নাতক ও স্নাতকোত্তরের রেজিস্ট্রেশন, মার্কশিট, অ্যাডমিট কার্ড তৈরির জন্য একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে রেফার করা হয়েছিল। বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে ৩ বছরের চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। আগে বিশ্ববিদ্যালয়ে মাত্র কয়েক লাখ টাকায় এ কাজ হতো। জানা গেছে, তিন বছর আগে ফাইন্যান্স অফিসার পরিবর্তনের পর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ২১ কোটি টাকা সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের কাছে হস্তান্তর করে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন আধিকারিকের দাবী, নতুন ফাইন্যান্স অফিসার নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন অধ্যাপকের ঘনিষ্ঠ। সূত্রের খবর, তিনি পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ। উল্লেখ্য, নতুন ফাইন্যান্স অফিসার সৌগত চক্রবর্তী, নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার ছিলেন। সূত্রের খবর, সেই সময়ে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ একজন বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদান করেন।
অভিযোগ, যেখানে মার্কশিট, অ্যাডমিট কার্ড তৈরির কাজ মাত্র কয়েক লক্ষ টাকায় করা যেত, বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ ২১ কোটি টাকায় তা একটি বেসরকারি সংস্থাকে দিয়েছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু আধিকারিক অভিযোগ করেছেন যে, কোভিডের সময় থেকে, শিক্ষার্থীরা প্রবেশপত্র-শংসাপত্রের হার্ড কপি পাননি। তাহলে সেই সব ভর্তি ও সার্টিফিকেট গেল কোথায়?
এ প্রসঙ্গে ফাইনান্স অফিসার সৌগত চক্রবর্তী বলেন, 'এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সঙ্গে যোগাযোগ করলেই প্রকৃত তথ্য পাওয়া যাবে। চুক্তির মোট পরিমাণ জানা যাবে। মোট শিক্ষার্থীর সংখ্যা অনুযায়ী প্রকৃত চিত্র নির্ধারণ করা হয়েছে। সেখানে পরীক্ষা সংক্রান্ত যাবতীয় বিষয়াদি পরিচালনা করা হয়।'
এদিকে ২১ কোটি টাকা হস্তান্তর হলেও গত তিন বছর ধরে কোনও বিভাগে পাঠানো হয়নি মার্কশিটের হার্ডকপি। সম্প্রতি এমফিল-পিএইচডি পরীক্ষার প্রবেশপত্রও আসেনি, যা নিয়ে সংস্থার বিরুদ্ধে প্রশ্ন উঠছে।
No comments:
Post a Comment