২১ জুলাই ২০২২। নতুন ইতিহাস তৈরি করল ভারত। দেশ ১৫ তম রাষ্ট্রপতি পদে পেল প্রথম আদিবাসী এবং দ্বিতীয় মহিলা দ্রৌপদী মুর্মুকে। স্কুল শিক্ষিকা থেকে রাষ্ট্রপতি হওয়া দ্রৌপদী মুর্মুর ব্যক্তিগত জীবন বেশ কষ্টের। তিন সন্তানের মা দ্রৌপদী মুর্মু দুই ছেলে এবং স্বামীর মৃত্যু শোক সহ্য করেছেন। জন্ম থেকে শিক্ষা ও কর্ম জীবন। রাজনৈতিক ক্যারিয়ার থেকে দেশের প্রথম নাগরিক দ্রৌপদী মুর্মু সম্পর্কে এই পর্বের আলোচনা।
দ্রৌপদী মুর্মু ওডিশার ময়ুরভঞ্জ জেলার রায়রাংপুরের একজন আদিবাসী নেত্রী। দ্রৌপদী মুর্মু একজন মৃদুভাষী নেত্রী হয়েও কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে ওড়িশার রাজনীতিতে প্রবেশ করেছিলেন।
রাষ্ট্রপতি হওয়ার আগে দ্রৌপদী মুর্মু ঝাড়খণ্ডের রাজ্যপাল, মৎস্য ও প্রাণী প্রতিমন্ত্রী, বাণিজ্য ও পরিবহন প্রতিমন্ত্রীর দ্বায়িত্ব সামলানোর আগে ওড়িশা বিধানসভার সদস্য হয়েছিলেন।
দ্রৌপদী মুর্মু ২০ জুন, ১৯৫৮ সালে ওড়িশার ময়ূরভঞ্জ জেলার আপরবেদা গ্রামে বিরাঞ্চি নারায়ণ টুডুর ঘরে, একটি সাঁওতালি উপজাতি পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।
দ্রৌপদী মুর্মু শ্যাম চরণ মুর্মুকে বিয়ে করেন, যিনি পেশায় একজন ব্যাঙ্কার ছিলেন। ২০১৪ সালে মারা যান দ্রৌপদী মুর্মুর স্বামী ৷ এই দম্পতির দুটি পুত্র সন্তান ছিল। যাঁরা মারা যান এবং বর্তমানে সন্তান বলতে মেয়ে ইতিশ্রী মুর্মু৷
রাজনীতিতে আসার আগে দ্রৌপদী মুর্মু স্কুল শিক্ষিকা হিসেবে কর্ম জীবন শুরু করেছিলেন। পরে শ্রী অরবিন্দ ইন্টিগ্রাল এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটে একজন সহকারী অধ্যাপক আরও পরে ওডিশা সরকারের সেচ বিভাগে জুনিয়র সহকারী হিসেবে কাজ করেছেন।
দ্রৌপদী মুর্মু ১৯৯৭ সালে ভারতীয় জনতা পার্টিতে (বিজেপি) যোগ দেন এবং রায়রাংপুর নগর পঞ্চায়েতের কাউন্সিলর নির্বাচিত হন। ২০০০ সালে, তিনি রায়রাংপুর নগর পঞ্চায়েতের চেয়ারপার্সন হন এবং বিজেপি তফসিলি উপজাতি মোর্চার জাতীয় সহ-সভাপতি হিসাবেও দায়িত্ব পালন করেন।
ওড়িশায় বিজেপি এবং বিজু জনতা দলের জোট সরকারের সময়, দ্রৌপদী মুর্মু বাণিজ্য ও পরিবহনের স্বাধীন দায়িত্বে থাকা প্রতিমন্ত্রী,মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী হন রায়রংপুর বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক হয়ে।
দ্রৌপদী মুর্মু ১৮ মে, ২০১৫-এ ঝাড়খণ্ডের রাজ্যপাল হিসাবে শপথ নেন এবং ঝাড়খণ্ডের প্রথম মহিলা রাজ্যপাল হন। তিনি ওডিশা থেকে প্রথম মহিলা আদিবাসী নেতা যিনি ভারতের কোনও একটি রাজ্যের গভর্নর হিসেবে নিযুক্ত হন।
২০১৭ সালে ঝাড়খণ্ডের রাজ্যপাল হিসাবে দ্রৌপদী মুর্মু ছোটনাগপুর প্রজাস্বত্ব আইন, ১৯০৮, এবং সাঁওতাল পরগনা প্রজাস্বত্ব আইন, ১৯৪৯-এর সংশোধনী চেয়ে ঝাড়খণ্ড বিধানসভার অনুমোদিত একটি বিলকে সম্মতি দিতে অস্বীকার করেছিলেন।
বিলটি আদিবাসীদের তাদের জমির বাণিজ্যিক ব্যবহার করার অধিকার দেওয়ার চেষ্টা করেছিল, পাশাপাশি জমির মালিকানা পরিবর্তন না হয় তা নিশ্চিত করে।
দ্রৌপদী মুর্মু, ২০০৭ সালে, ওড়িশা বিধানসভার সেরা বিধায়ক (বিধায়ক পরিষদের সদস্য) জন্য নীলকণ্ঠ পুরস্কার পান।
No comments:
Post a Comment