'তৃণমূল নেতা-মন্ত্রীদের ঘর থেকে টাকা উদ্ধারের ঘটনা থেকে দৃষ্টি ঘুরিয়ে দিতেই এই ধরণের টাকা উদ্ধারে নেমেছে সিআইডি', বিস্ফোরক দিলীপ ঘোষ। মেদিনীপুরে বিজেপি যুব মোর্চার আয়োজিত প্রতিবাদ মিছিলে অংশ নেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি তথা মেদিনীপুরের সাংসদ দিলীপ ঘোষ। সেখানেই এই মন্তব্য করেন তিনি।
রাজ্যজুড়ে শিক্ষা ক্ষেত্রে দুর্নীতি এবং শিক্ষা মন্ত্রী সহ শাসকদলের নেতা-মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে এবার পথে নামল বিজেপি যুব মোর্চা। এদিন মেদিনীপুর শহর জুড়ে যুব মোর্চার তরফ থেকে একটি সুবিশাল মিছিল করা হয়। তাতে অংশ নেন বিজেপি সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ। এদিন মিছিলে হাঁটার পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন তিনি।
তৃণমূলের একাধিক বিধায়ক ও প্রভাবশালী নেতার বাড়িতে তদন্তকারী সংস্থার রেড প্রসঙ্গে জানতে চাইলে দিলীপ ঘোষ বলেন, 'আগে বলা হচ্ছিল, এবার কাজ করা হচ্ছে। এতদিন যারা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং তদন্তকারী সংস্থাকে ভয় দেখাচ্ছিল এখন তাদের বাড়িতে কোটি কোটি টাকা উদ্ধার হচ্ছে। তারা যে মিথ্যে কথা বলছিল তা প্রমাণ হয়ে গেল। তাই চুরিও করবেন ও চোখ দেখাবেন এটা চলতে পারেনা।'
এক মাছ ব্যবসায়ীর কাছ টাকা উদ্ধারের ঘটনা প্রসঙ্গে প্রশ্ন করলে দিলীপ ঘোষ বলেন, 'এতদিন কি সিআইডি দুধ খেয়ে ঘুমাচ্ছিল? আসলে তৃণমূল নেতা-মন্ত্রীদের ঘর থেকে টাকা উদ্ধারের ঘটনা থেকে দৃষ্টি ঘুরিয়ে দিতেই এই ধরণের টাকা উদ্ধারে নেমেছে সিআইডি।' তিনি আরও বলেন, 'এতদিন কয়লা চোর, গরু চোর ও বালি চোরদের বাড়িতে কোটি কোটি টাকা উদ্ধার করতে পারেনি তারা। এখন তাদের মনে পড়ছে। তৃণমূল এখন বুঝতে পেরেছে এই হাতটা সরাসরি এবার গলার দিকে যাচ্ছে, তাই সিআইডিকে নামিয়ে এটাকে ডাইভার্ট করার কাজ চলছে।'
বাংলায় এসটিএফের হাতে জঙ্গি ধরা প্রসঙ্গে প্রশ্ন করলে দিলীপ ঘোষ বলেন, 'সারা দেশের না বিশ্বের জঙ্গিরা এই রাজ্যে এসে আশ্রয় নেয়। কারণ এই জঙ্গিরাও জানে এখানে ঢুকে গিয়ে মা-মাটি-মানুষ জিন্দাবাদ বললেই শাসকদলের আশ্রয়ে থাকা যায়। একমাত্র ডায়মন্ড হারবার সমস্ত অ্যান্টি ন্যাশনাল এবং দুষ্কৃতকারীদের আড্ডা। তাই ডায়মন্ড হারবারে গিয়ে তদন্ত করা উচিৎ।'
গ্রীন ট্রাইবুনাল থেকে রাজ্য সরকারের ক্ষতিপূরণ প্রসঙ্গে প্রশ্ন করলে দিলীপ ঘোষ বলেন, 'কেন্দ্র সরকারের দেওয়া টাকা এ রাজ্য লুটে নেয়, কোনও কাজ করে না। আর তার ফল সবাইকেই ভোগ করতে হয়। এরপর মদন মিত্র বেঁচে আছে কিনা, খোঁচা দিয়ে মেদিনীপুর থেকে বেরিয়ে যান দিলীপ ঘোষ।
উল্লেখ্য, এই মিছিলের প্রধান বিষয়বস্তুই ছিল নকল জেলখানা করে সেখানে শিক্ষামন্ত্রীকে কারারুদ্ধ করা। এছাড়া বেকারদের চাকরি না পেয়ে রাস্তাঘাটে মুড়ি এবং চপ বিক্রি করা। এই দিকটা অভিনয় যেমন ফুটিয়ে তুলেছিলেন বিজেপির যুব মোর্চার কর্মী ও সদস্যরা, ঠিক অপরদিকে বাংলার শাসক দলের যুবরাজ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে কোমরে দড়ি বেঁধে ইডি হিড়হিড় করে টেনে নিয়ে যাচ্ছে, সঙ্গে ফিরহাদ হাকিমও- এরম দৃশ্যও দেখা গেল এই দিনের মিছিলে।
পাশাপাশি এদিন বেকার যুবকরা মশলা মুড়ি করে এবং সঙ্গে গরম চপ তুলে দেন দিলীপ ঘোষের হাতে। তিনিও সেই মুড়ি মুখে দিয়ে কটাক্ষের সুরে বলেন, 'বেকারদের আর করার কিছুই নেই। কারণ শিক্ষা মন্ত্রী সমস্ত টাকা মেরে নিজের সম্পত্তি বানিয়ে ফেলেছেন, যার ফলে শিক্ষিত বেকারদের এখন চাকরির বদলে রাস্তায় মুড়ি ও চপ বিক্রি করতে হচ্ছে।'
No comments:
Post a Comment