এক মাস শেষে আজ ভাদুর বিদায়, দুর্গাপুর মেতে উঠল ভাদু গানে। কবে শুরু হয়েছিল তা কেউই জানেন না। কিন্তু একের পর এক প্রজন্ম এভাবেই আশ্বিনের প্রথম দিনে ভাদুকে সাজিয়ে, ছোট্ট ছোট্ট মেয়েদের সুন্দর করে সাজিয়ে, নাচতে-গাইতে ভাদুর বিসর্জন করেন। তবে লোকমুখে কথিত আছে দুর্গাপুরের গোপালপুরের মালপাড়া (রাজবংশী সম্প্রদায়ের) এই ভাদু উৎসব একশো বছর ছুঁই ছুঁই। ভাদ্রমাসের প্রথম দিনেই নিয়ে আসা হয় ভাদু। চলে সারামাস ধরে ভাদু পুজো । প্রতিদিন সন্ধ্যা বেলায় পাড়ার মেয়েরা ভাদুর সামনে গান গেয়ে ভাদু পুজো করে। আর চলে আজকের জন্য নাচ-গান, বাঁধা আর সেই গানে সুর দিয়ে নাচের সাথে রিহার্সাল করা।
কাঁকসা ব্লকের বেশ কয়েকটি গ্রাম আশ্বিনের প্রথম দিনের এই ভাদু বিদায়ের গান শুনতে অপেক্ষায় থাকেন। বাড়ি বাড়ি ভাদুকে নিয়ে যাওয়া হয়, বাড়ির উঠোনে রাখার পরে সেখানে বাড়ির মেয়েরা সিঁদুর দেন ভাদুর মাথায়। তারপরেই গৃহস্থকে ভাদু নাচ দেখানো হয় গান গেয়ে গেয়ে। ছোট্ট ছোট্ট মেয়েরা সুন্দরভাবে নাচের দৃশ্য তুলে ধরে।
"কেঁদে কেঁদে চোখের কাজল ধোয়া যায় আজ ভাদুর বিদায়” গান গেয়ে এলাকায় ঘোরেন বাসিন্দারা। দুপুর গড়িয়ে বিকাল হয়, সন্ধ্যা নামে। ভাদু গানের প্রতি এলাকার মানুষের ভালবাসায় ভাদু ঢাকা পরে যান টাকায়। সেই টাকা দিয়ে একদিন খাওয়া-দাওয়া করেন সারা পাড়া মিলে।
ডিজিটাল যুগে যখন সবকিছুই বদলে যাচ্ছে তখন গোপালপুরের মালপাড়া এখনও ভাদু পুজো এবং ভাদু গান ধরে রেখেছেন। তারা নিজেরাই গান লেখেন, সুর দেন। প্রতি বছর নতুন নতুন ভাদু গানে মেতে ওঠে এলাকা।
No comments:
Post a Comment