রাগ বা উত্তেজনা নয়, কিন্তু যখন দুই ব্যক্তির মধ্যে ঝগড়ার পরে একজন অন্যজনকে মেরে ফেলে, সেটি খুন বলেই বিবেচিত হয়, পর্যবেক্ষণ বোম্বে হাইকোর্টের। আর এজন্য আদালত, দোষীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়। উল্লেখ্য, মামলাটি ১১ বছরের পুরনো।
মহারাষ্ট্রের রাজধানী মুম্বাইতে ২০১১ সালে একটি খুনের মামলার শুনানির পর বম্বে আদালত সাজা বহাল রাখে। এছাড়াও এ বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য করে আবেদনটি খারিজ করে দেন।
আদালত একজন ব্যক্তির খুনি ট্রাক ক্লিনারের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বহাল রেখেছেন, ধারা ৩০২ (খুন) এবং ৩০৪ ধারা-২ (খুনের পরিমাণ নয় অপরাধমূলক হত্যাকাণ্ড) ধারার সাজা কমানোর অভিযুক্তের আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন।
২০১১ সালে খুন হন উৎপল চৌধুরী। অভিযোগ ওঠে ট্রাক ক্লিনার মিঠু পারেদার বিরুদ্ধে। ২০১১ সালের ১৫ আগস্ট স্বাধীনতা দিবসের ছুটিতে এই খুনের ঘটনা ঘটে। মৃত এবং অভিযুক্ত দুজনেই মুম্বাইয়ের লিংক রোডে অবস্থিত ওশিওয়ারা পার্কে মদ খেয়েছিলেন।
পরদিন সকাল সাড়ে ১১টার দিকে ফোন নিয়ে দুজনের মধ্যে হাতাহাতি হয়। এরপর উৎপল চৌধুরী ট্রাকের পেছনে ঘুমিয়ে পড়েন। কিছুক্ষণ পর মিঠুও সেখানে পৌঁছালে, বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে ট্রাকে চিৎকার শোনা যায়।
শোরগোল শুনে লোকজন সেখানে পৌঁছালে প্রত্যক্ষদর্শীরা দেখেন, মিঠু কাঠের লাঠি দিয়ে উৎপলের মাথায়, ঘাড়ে ও বুকে আঘাত করছে। মিঠু দেখে লোকজন তাকে হামলা করতে দেখেছে, সে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। এরপর উৎপলকে কুপার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
এই মামলার শুনানিকালে বিচারিক আদালত সাক্ষ্যপ্রমাণ, পঞ্চনামা, প্রযুক্তিগত বিশ্লেষণ প্রতিবেদন, বক্তব্য ও ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে মিঠুকে দোষী সাব্যস্ত করেন।
তবে ট্রায়াল কোর্টে মিঠু তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ মিথ্যা বলে আখ্যায়িত করেছিলেন। অভিযুক্তরা বলেছেন, যে সাক্ষীরা নিজেদের প্রত্যক্ষদর্শী বলে দাবী করেছেন, তারাই তাকে খাবার রান্না করতে বলেছিলেন। তিনিও মদ খেতে চেয়েছিলেন। না হলে মিথ্যা বক্তব্য দিচ্ছেন।
তবে নিম্ন আদালত তাকে দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়। তিনি তা হাইকোর্টে চ্যালেঞ্জ করেন। দোষী সাব্যস্ত মিঠু উচ্চ আদালত থেকেও স্বস্তি পাননি এবং আদালত তার আবেদন খারিজ করে দেয়।
No comments:
Post a Comment