তিনদিনের জন্য নদিয়া সফরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার থেকে শুরু হওয়া এই সফরে তার ব্যস্ত কর্মসূচী রয়েছে। রাজনৈতিক জনসভার সঙ্গে প্রশাসনিক বৈঠকও করবেন তিনি। সূত্রের খবর, সফরের প্রথম দিনে তিনি নদিয়া জেলার বিখ্যাত রাস উৎসবে অংশ নিতে পারেন। নদিয়ায় দুটি প্রধান স্থান রয়েছে যেখানে রাস মহোৎসব বড় আকারে আয়োজিত হয়। প্রথমটি নবদ্বীপ এবং দ্বিতীয়টি শান্তিপুর।
মনে করা হচ্ছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা এই দুই জায়গায় উৎসব দেখতে যেতে পারেন। গত ১১ বছরের শাসনামলে তিনি কখনও নদিয়ার রাস উৎসবে যাননি। তাই এ নিয়ে প্রশাসনিক মহলেও কোনও আলোড়ন ছিল না। কিন্তু এবারে বিষয়টি তা না। নবান্ন সূত্রে খবর, ৮ নভেম্বর নদিয়ায় পৌঁছানোর মুখ্যমন্ত্রীর সিদ্ধান্তের পরই প্রশাসনিক মহল তাঁর রাস উৎসবে যোগ দেওয়ার প্রস্তুতি শুরু করেছে।
সূত্রের খবর, নবান্নর তরফে নদিয়া জেলা প্রশাসনকে এই বিষয়ে নির্দেশনা পাঠানো হয়েছে। যদিও প্রশাসনের তরফে আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর সব অনুষ্ঠানই হবে কৃষ্ণনগরে। শান্তিপুর বা নবদ্বীপে যাওয়ার কোনও পরিকল্পনা ঘোষণা করা হয়নি, কারণ তিনি মঙ্গলবার বিকেলে হেলিকপ্টারে কৃষ্ণনগর পৌঁছবেন। তাই মঙ্গলবার নদিয়ার এই বিখ্যাত উৎসবে যোগ দিতে পারেন বলেই মনে করা হচ্ছে।
সূত্রে আরও খবর, মুখ্যমন্ত্রীর এই সফর আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনকে ঘিরে এবং রাস নদিয়ার অন্যতম প্রধান উৎসব। উৎসবে অংশ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী সেখানকার মানুষের সঙ্গে তার জনসংযোগ বজায় রাখতে চান, কারণ এই জেলার অধিকাংশ বাসিন্দা মতুয়া সম্প্রদায়ের। লোকসভা নির্বাচন এবং বিধানসভা নির্বাচনে রাজ্যে মতুয়াদের ভোটের বেশির ভাগই গিয়েছিল বিজেপির হাতে। নদিয়ার যে অংশে রাস উৎসব হয়, সেখানে মতুয়া সম্প্রদায় বাস করে। রানাঘাট আসনটি শুধু গত পঞ্চায়েত নির্বাচনেই নয়, লোকসভা নির্বাচনেও জিতেছিল বিজেপি। তাই পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে রাস উৎসবে অংশ নিয়ে গেরুয়া ঘেরা মুক্ত করতে চায় শাসক দল।
প্রসঙ্গত, সিএএ বাস্তবায়নের ইস্যুতে মতুয়া সম্প্রদায়ের লোকেরা বিজেপির ওপর ক্ষুব্ধ বলে জানা গেছে। এমন পরিস্থিতিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নদিয়া সফরে মতুয়া সম্প্রদায়কে পক্ষে করার যথাসাধ্য চেষ্টা করবেন, সেকথাই মনে করছেন রাজনৈতিক মহলের একাংশ।
No comments:
Post a Comment