শীতে ফিট এবং সুস্থ থাকার জন্য, আমরা আমাদের খাদ্যতালিকায় ফল, ডাল এবং শাকসবজি অন্তর্ভুক্ত করি। ব্যায়াম এবং যোগব্যায়াম করুন। আজ আমরা বলছি শীতে কোন সবজি খাওয়া বেশি উপকারী। শীতকালে বেশির ভাগ মানুষ আলু-বাঁধাকপি খান, আবার কেউ কেউ পালং-পনির খান। এছাড়া শীতে কোন শাকসবজি খাওয়া যায় তা জানতে আমরা কথা বলেছি আরোগ্য ডায়েট অ্যান্ড নিউট্রিশন ক্লিনিকের ডায়েটিশিয়ান ডাঃ সুগীতা মুত্রেজার সাথে-
শীতে কোন সবজি খাবেন?
ডাঃ সুগীতা মুত্রেজা বলেন, মৌসুমি সবজি খাওয়া সবচেয়ে উপকারী। শীতকালে বাঁধাকপি, গাজর, পালং শাক, মেথি ও মুলা খাওয়া যেতে পারে। পালং শাক, গাজর এবং আমলা সবজি ভাতকে ভারসাম্য রাখে। জেনে নিন শীতে কোন সবজি খাওয়া উচিৎ-
1. পালং শাকের উপকারিতা
শীতকালে পালং শাক সহজেই পাওয়া যায়। আপনি এটি আপনার শীতকালীন খাদ্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন। পালং শাক প্রোটিন, ক্যালসিয়াম এবং আয়রনের ভালো উৎস। এটি খেলে শরীরে রক্তের অভাব পূরণ হয়। এটি হজমের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায়। এছাড়াও পালং শাক শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। পালং শাক খেতে পারেন সবজি, সালাদ, জুস এবং পরোটা। পালং শাক স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী।
2. মুলার উপকারিতা
শীতকালে বেশিরভাগ মানুষই মুলার সালাদ খান। আবার অনেকে মুলার শাকও খান। মুলা স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। মুলার মধ্যে রয়েছে ভিটামিন বি৬, ভিটামিন এ, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস। এছাড়াও এতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে যা কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর করে। মুলাতে প্রচুর পরিমাণে জল থাকায় এটি শরীরে জলের অভাব দূর করে।
3. গাজরের উপকারিতা
শীতে গাজর খাওয়ার অনেক উপায় রয়েছে। কেউ কেউ এটিকে সালাদ, পুডিংয়ে অন্তর্ভুক্ত করে এবং কেউ কেউ এটিকে মিশ্র শাকসবজিতে অন্তর্ভুক্ত করে। শুধু তাই নয়, গাজরের জুসও পান করা হয়। গাজর ভিটামিন এ এবং বিটা ক্যারোটিনের একটি ভালো উৎস। এতে দৃষ্টিশক্তি উজ্জ্বল হয়। এছাড়া এটি ত্বক ও চুলের জন্যও উপকারী। এছাড়াও গাজরে রয়েছে আয়রন, এটি রক্তস্বল্পতার সমস্যা প্রতিরোধ করে।
4. চাউলই খাওয়ার উপকারিতা
আমড়ার শাক শীতকালে প্রচুর খাওয়া হয়। এটি লাল সাগ নামেও পরিচিত। প্রোটিন, খনিজ পদার্থ, ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, আয়রন, ক্যালসিয়াম এবং ফসফরাস প্রচুর পরিমাণে আমড়াতে পাওয়া যায়। এটি ডায়াবেটিস, রক্তস্বল্পতা এবং ক্যান্সার প্রতিরোধ করে। এছাড়াও এটি কার্বোহাইড্রেট এবং ফাইবারের একটি ভালো উৎস।
5. বাথুয়া সাগের উপকারিতা
বাথুয়া শাক স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। ভিটামিন এ, ভিটামিন ডি, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, আয়রন এবং পটাসিয়াম খুব ভালো পরিমাণে পাওয়া যায়। আপনি এটি আপনার শীতকালীন খাদ্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন। বাথুয়া শাক খেলে গ্যাস ও কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যায় আরাম পাওয়া যায়। এছাড়া এটি হজম শক্তিও বাড়ায়। বাথুয়ার শাক খেলে রক্ত বিশুদ্ধ হয়, রক্ত সঞ্চালন উন্নত হয় এবং টক বেলচিং এর সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
6. শীতের জন্য শালগম এর উপকারিতা
শীতকালেও বেশিরভাগ মানুষ শালগম খান। এটি পুষ্টিগুণে ভরপুর। এতে ভিটামিন সি, ভিটামিন কে, বিটা ক্যারোটিন এবং পটাসিয়ামের মতো বৈশিষ্ট্য রয়েছে। শালগম সালাদ, জুস আকারে খাওয়া যেতে পারে। অনেকে এর সবজিও তৈরি করেন।
7. মাশরুমের উপকারিতা
শীতকালে মাশরুম খাওয়া হয়। এটি ফাইবার, পটাসিয়াম, ভিটামিন সি এর ভালো উৎস। এছাড়াও এটিতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্য রয়েছে, তারা ক্ষতিকারক ফ্রি র্যাডিক্যাল থেকে শরীরকে রক্ষা করে। এছাড়া এতে ক্যালরি কম থাকে, যা ওজন কমাতে সাহায্য করে। মাশরুম কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা থেকেও মুক্তি দেয়। এতে উপস্থিত ভিটামিন ডি এবং ক্যালসিয়াম হাড়কে মজবুত করে।
চিকিৎসক সুগীতা মুত্রেজা বলেন, এই সবজি খেলে ভাত ভারসাম্য বজায় থাকে। এছাড়াও, আপনি সীমিত পরিমাণে শাক খাওয়া উচিৎ। ঘি দিয়ে শাক রান্না করলে বেশি উপকার পাওয়া যায়।
No comments:
Post a Comment