নন্দীগ্রামে শহিদ দিবসে উত্তেজনা, অগ্নিসংযোগ ও খুনের চেষ্টার অভিযোগে ব্যবস্থা নিয়েছে পুলিশ। বিধানসভার বিরোধীদলীয় নেতা তথা নন্দীগ্রামের বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী সহ নন্দীগ্রামের ২২ জন বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টার প্ররোচনা সহ বিভিন্ন ধারা এবং অস্ত্র আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। সূত্রের খবর, নন্দীগ্রাম-১ ব্লকের গোকুলনগরের করপল্লীতে ভূমি বিলোপ প্রতিরোধ কমিটির সভাস্থলে আগুন দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তাদের বিরুদ্ধে।
স্থানীয় এক তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীকে মারধর করা হয়েছে বলে অভিযোগ। নন্দীগ্রাম থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন জামবাড়ির বাসিন্দা ও জমি বিলোপ প্রতিরোধ কমিটির সদস্য সীতারাম করণ।
পুলিশ জানায়, শুভেন্দু অধিকারী ছাড়া বাকি ২১ অভিযুক্তরা হলেন বিজেপি নেতা দেবাশীষ দাস, স্বদেশ রঞ্জন অধিকারী, শ্যামপদ মাইতি, কার্তিক বারিক, শ্রীকান্ত প্রামাণিক, শঙ্কর ভুঁইয়া, সঞ্জীব মণ্ডল, দীনবন্ধু মণ্ডল, গৌরাঙ্গ মণ্ডল, আশিস মাকুর, রাকেশ , সুমন চক্রবর্তী, মধু দাস, অনিমেষ করণ, চন্দন দাস, লাল্টু মুনিয়ান, গোপাল প্রধান, শিবশঙ্কর দাস, অশোক করণ এবং মেঘনাদ পালের নাম অভিযোগে রয়েছে। তারা সবাই নন্দীগ্রামের মহেশপুর, গোকুলনগর, পারুলবাড়ি, শিমুলকুন্ডু, জামবাড়ি, কালীচরণপুর, মহেশপুর ও হরিপুরের বাসিন্দা বলে জানা গেছে। ভারতীয় দণ্ডবিধি এবং অস্ত্র আইনের ৩৪১, ৩২৩, ৩২৬, ৩০৭, ৪৩৫, ৪২৭, ৫০৪, ১২০বি সহ বিভিন্ন ধারায় মামলা নথিভুক্ত করা হয়েছে। তবে অভিযুক্তদের কাউকে এখনও গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। নন্দীগ্রাম থানার আইসি সুমন রায় চৌধুরী জানান, ঘটনাটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
১০ নভেম্বর বৃহস্পতিবার ভূমি উলামান প্রতিষ্টান সমিতি গোকুলনগরের করপল্লী ও হাজরা কাটায় শহীদদের সম্মানে সভার আয়োজন করেছিল। অন্যান্য বছরের মতো তৃণমূল কংগ্রেসও এতে অংশ নেয়। করপল্লীতে শহিদ বেদির কাছে ১০ ফুট দূরত্বে একটি পৃথক মঞ্চে বিজেপিও শহিদ দিবস উদযাপন করেছে। শুক্রবার ভোররাতে করপল্লীতে তৃণমূল সমর্থিত জমি বিলোপ প্রতিরোধ কমিটির প্ল্যাটফর্মে আগুন লেগেছে, প্রতিবাদে। যার বিরুদ্ধে তৃণমূল ও তৃণমূল সমর্থিত জমি নির্মূল প্রতিরোধ কমিটির নেতারা শুক্রবার সকালে নন্দীগ্রাম ১ ব্লকের গোকুলনগরের করপল্লীতে তেখালি-নন্দীগ্রাম সড়কে অবরোধ-বিক্ষোভ শুরু করেন।
এতে অংশ নেন রাজ্য তৃণমূলের নেতা কুণাল ঘোষ, মন্ত্রী শশী পাঁজা, অখিল গিরি, শিউলি সাহা, তমলুক সাংগঠনিক জেলা তৃণমূলের সভাপতি সৌমেন মহাপাত্র, সভাপতি পীযূষ ভূঁইয়া, জেলা পরিষদের সহকারী সভাপতি শেখ সুফিয়ানরা। তাঁর দাবী, রাতের অন্ধকারে মঞ্চে আগুন লাগিয়েছে বিজেপির লোকজন। হামলার শিকার হন স্থানীয় তৃণমূল কর্মী গোপাল গায়েন ও তাঁর স্ত্রী। তার বৃদ্ধা মাকে আক্রমণ করা হয়েছে।
বিজেপির তমলুক সাংগঠনিক জেলা সদস্য ও নন্দীগ্রাম বিজেপি নেতা অভিজিৎ মাইতি বলেন, “সাড়ে তিন বছরের কারাদণ্ডপ্রাপ্ত অভিযুক্ত নন্দীগ্রামে এসে উস্কানি দিয়েছেন। সেই প্ররোচনায় ভারতীয় জনতা পার্টির কর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করেছিল তৃণমূল পুলিশ। তৃণমূলে পারস্পরিক লড়াইয়ের পর খোদ তৃণমূল কংগ্রেসে আগুন লেগেছে। রাজনৈতিকভাবে আমাদের সঙ্গে কাজ করতে না পারার কারণে এখন তারা আমাদের বিরুদ্ধে এসব শুরু করেছে।" তৃণমূল নেতা শেখ সুফিয়ান বলেন, 'মঞ্চ পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। আমাদের এক ছেলেকে মারধর করা হয়। আহত অবস্থায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বিজেপি নেতৃত্ব তা করেছে। এখন আমরা আইন হাতে তুলে নিতে পারি না। তাই আইনগত মামলা করা হয়েছে।”
No comments:
Post a Comment