'জেল খাটা আসামির সভায় মানুষ আসবে না', নাম না করে কুণাল ঘোষকে আক্রমণ বামেদের। 'যারা বিধানসভায় গোল্লা পেয়েছে, তাদের মুখে কোনও কথা মানায় না, মানুষ বুঝিয়ে দেবে কাদের দিকে রয়েছে জনসমর্থন, পাল্টা তৃণমূল। এক দিনের ব্যবধানে মীনাক্ষী এবং কুণালের হাই ভোল্টেজ রাজনৈতিক কর্মসূচি ঘিরে করে তুঙ্গে তরজা, চড়ছে রাজনৈতিক উত্তেজনার পারদ।
একদিনের ব্যবধানে দুই হাই ভোল্টেজ রাজনৈতিক কর্মসূচি। উত্তরের কনকনে শীতের মাঝেও চড়ছে রাজনৈতিক পারদ। আগামী ১৯ তারিখ ভারতের গণতান্ত্রিক যুব ফেডারেশনের পশ্চিমবঙ্গ সংগঠনের সাংগঠনিক এবং রাজনৈতিক কর্মশালায় আসছে মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়। অন্যদিকে ২১ তারিখ তৃণমূলের জনসভাতে আসছেন রাজ্য তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। আর এই দুই রাজনৈতিক কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে শোরগোল পড়ে গেছে মালদা জেলার রাজনৈতিক মহলে।
প্রসঙ্গত মালদা জেলার হরিশ্চন্দ্রপুরে ডিওয়াইএফআই এর রাজনৈতিক কর্মসূচিতে যোগ দিতে আসছেন বামেদের যুব আইকন মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়। এদিকে ঠিক তার একদিন পরেই অর্থাৎ ২১ তারিখ হরিশ্চন্দ্রপুরে জনসভা রয়েছে শাসকদলের, যেখানে আসার কথা ছিল যুব তৃণমূলের সভানেত্রী সায়নী ঘোষের। যুব সংগঠনকে সামনে রেখে সভা সফল করতে দীর্ঘদিন ধরে প্রস্তুতি নিচ্ছিল শাসকদল। দুই দলের দুই যুব নেত্রীর কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছিল তরজা। কিন্তু তৃণমূল সূত্রে বর্তমানে জানা যাচ্ছে, সেদিন আসছেন না সায়নী ঘোষ, পরিবর্তে আসছেন রাজ্য তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক তথা প্রধান মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। অভিনেত্রীকে এনে সভাতে ভিড় বাড়াতে চাইছে তৃণমূল। প্রথমে এমন ভাবেই কটাক্ষ করেছিল বামেরা। তাই সিদ্ধান্ত পরিবর্তন বলে শাসকদল সূত্রে খবর।
এদিকে কুণাল ঘোষের আসা নিয়েও দুই দলের মধ্যে শুরু হয়ে গেছে বাকযুদ্ধ। সিপিআইএমের রাজ্য কমিটির সদস্য জামিল ফিরদৌস বলেন, কুনাল ঘোষ সারদা কাণ্ডে জেল খেটেছে। এক সময় দাবী করেছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সারদা কাণ্ডে সব থেকে বেশি লাভবান ব্যক্তি। সাধারণ মানুষ কোন জেল খাটা আসামির কথা শুনতে আসবে না। মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায় যুবদের আইকন। শুধু সিপিআইএম সমর্থকরা না, অন্যান্য সাধারণ মানুষও সেদিন আসবে আমাদের কর্মসূচিতে।
মালদা জেলা তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক জম্মু রহমান বলেন, 'ওরা বলেছিল আমরা অভিনেত্রী এনে ভিড় বাড়াতে চাইছি। এবার আর সেই অভিযোগ করতে পারবে না। বিধানসভাতেই মানুষ ওদের জবাব দিয়ে দিয়েছে। পঞ্চায়েতেও দেবে। জনসভার ভিড় বলে দেবে উত্তর। মানুষ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাথে আছে।'
প্রসঙ্গত, হরিশ্চন্দ্রপুর এলাকায় এক সময় একচ্ছত্র দাপট ছিল বামেদের। বাম আমলে তাদের সঙ্গে মূল টক্কর ছিল কংগ্রেসের। সময়ের সঙ্গে বদলে গেছে রাজনৈতিক সমীকরণও। ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত ভোট থেকে এলাকায় নিজেদের জমি শক্ত করে তৃণমূল। গত বিধানসভা ভোটেও বিপুল ব্যবধানে জয়লাভ করে তারা। এদিকে এক সময়ের দুই প্রতিদ্বন্দ্বী বাম এবং কংগ্রেস এখন জোট শরীক। নিজেদের হারানো জমি কী ফিরে পাবে বামেরা? না নিজেদের জায়গা আরও মজবুত করবে তৃণমূল? উত্তর দেবে সময়। তবে এই দুই হাই ভোল্টেজ রাজনৈতিক কর্মসূচি ডিসেম্বরের কনকনে শীতের মাঝেও হরিশ্চন্দ্রপুরের রাজনৈতিক উত্তাপ বাড়াচ্ছে।
এদিকে বছর ঘুরলেই রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচন। তাই নিজেদের কর্মসূচি সফল করা দুই দলের কাছেই প্রেস্টিজ ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে- এমনই মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।
No comments:
Post a Comment