মেহরাউলিতে শ্রদ্ধা হত্যাকাণ্ডে দিল্লী পুলিশ ৩ হাজার পৃষ্ঠার চার্জশিট তৈরি করেছে। এ অভিযোগপত্রে ঘটনার বিবরণ দিতে নারকো টেস্ট, পলিগ্রাফি ও ডিএনএ টেস্টের রিপোর্টও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া এতে শতাধিক সাক্ষীর জবানবন্দিও লেখা হয়েছে। পুলিশের দাবী, যে চার্জশিট তৈরি করা হয়েছে তা সম্পূর্ণ প্রমাণিত এবং অত্যন্ত শক্তিশালী। তা সত্ত্বেও পুলিশ তা নতুন করে যাচাই করার চেষ্টা করছে। আগামী এক-দুই দিনের মধ্যে আদালতে চার্জশিট পেশ করার সময় পুলিশ দ্রুত বিচারের আবেদন করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
যদি দিল্লী পুলিশের আধিকারিকদের বিশ্বাস করা হয়, বিষয়টির গুরুত্ব বিবেচনা করে যতটা সম্ভব চার্জশিট জোরদার করার চেষ্টা করা হয়েছে। এতে ঘটনা সংশ্লিষ্ট প্রতিটি প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। একইসঙ্গে এর সমর্থনে জঙ্গল থেকে পাওয়া হাড়ের ডিএনএ রিপোর্টের সঙ্গে অভিযুক্ত আফতাবের নারকো ও পলিগ্রাফ টেস্ট ও অন্যান্য ফরেনসিক পরীক্ষার রিপোর্টও সংযুক্ত করেছে পুলিশ। পুলিশও প্রত্যক্ষদর্শীদের জবানবন্দি দিয়ে পুরো ঘটনা প্রমাণের চেষ্টা করেছে। এত কিছু করলেও পুলিশ এ ব্যাপারে কোনও ঝুঁকি নিতে চায় না। তাই পুরো চার্জশিট নতুন করে অধ্যয়নের জন্য একজন আইন বিশেষজ্ঞকে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, প্রেমিক আফতাব যে বর্বরতার সঙ্গে এই সুপরিচিত খুন মামলাটি চার্জশিটে খুব লাইভভাবে উপস্থাপনের চেষ্টা করা হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, গল্পটি শুরু থেকে বর্ণনা করতে গিয়ে, পুলিশ শেষ পর্যন্ত ধাপে ধাপে চিত্রিত করার চেষ্টা করেছে। চার্জশিটে সাক্ষ্যপ্রমাণও একই নির্দেশে রেখেছে পুলিশ। এর উদ্দেশ্য হল, আদালতে যুক্তিতর্ক শুরু হলে অভিযুক্তপক্ষ বিচার কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টির সুযোগ না পায়। একই সঙ্গে আদালতকেও পুরো পর্বটি সহজে বুঝতে হবে।
পুলিশ আধিকারিকরা জানান, আইন বিশেষজ্ঞের মতামত জানার পর চলতি সপ্তাহেই আদালতে চার্জশিট দাখিল করবে পুলিশ। বর্তমানে পুলিশ আইন বিশেষজ্ঞকে বলেছে, এমন কোনও প্রশ্ন বাকি নেই, যার উত্তর এই চার্জশিটে নেই। এর পাশাপাশি, এমন কোনও প্রশ্ন আছে কি না, যার সন্তোষজনক উত্তর নেই বলেও জানিয়েছে পুলিশ। আসলে এ ক্ষেত্রে পুলিশ চায় না, মামলার বিচার চলাকালে প্রসিকিউশন ও অভিযুক্তপক্ষের যুক্তির মধ্যে পুলিশকে উঁকি দিতে হবে।
অভিযুক্তের নির্দেশে মেহরাউলির ছতরপুর এবং গুরুগ্রামের ডিএলএফ ফেজ ১ এলাকা থেকে শ্রদ্ধার শরীরের কিছু অংশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এই সমস্ত শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের ডিএনএ পরীক্ষা করে পুলিশ এবং তারপর তার রিপোর্টের সঙ্গে শ্রদ্ধার বাবার ডিএনএ রিপোর্ট মিলেছে। এতে প্রমাণিত হয় যে উদ্ধার করা হাড়গুলো শ্রাদ্ধের। সেই সঙ্গে শ্রদ্ধাকে খুনের পর অভিযুক্ত আফতাব হাড় জঙ্গলে ফেলে দিয়েছে বলেও নিশ্চিত হওয়া গেছে।
No comments:
Post a Comment