মাধ্যমিককের টেস্ট পেপারে 'আজাদ কাশ্মীর' নিয়ে তুঙ্গে রাজনৈতিক তরজা। একদিকে বিষয়টি নিয়ে রাজ্যের শাসক শিবিরকে এক হাত নিয়েছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ সহ অন্যান্য বিজেপি নেতৃত্ব। কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সুভাষ সরকারও এই প্রশ্ন সরিয়ে ফেলার দাবী জানিয়েছেন। অপরদিকে তৃণমূলও এটিকে ভুল আখ্যা দিয়ে বলেছে, এর সমর্থন করে না। এসবের মাঝেই এবারে বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলেছে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ।
মঙ্গলবার রাতে বোর্ড একটি সংশোধনী জারি করে বলেছে যে, প্রশ্নটি 'আজাদ কাশ্মীর' এর পরিবর্তে 'কাশ্মীর' হিসাবে পড়তে হবে। আজাদ বা মুক্ত কাশ্মীর এমন একটি শব্দ, যা পাকিস্তান তার প্রশাসনের অধীনে রাজ্যের পশ্চিম অংশকে বোঝাতে ব্যবহার করে। ভারত এই এলাকাটিকে পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীর (PoK) বলে। এটি ১৯৪৭ সাল থেকে দুই দেশের মধ্যে একটি জ্বলন্ত সমস্যা।
উল্লেখ্য, ঘটনার সূত্রপাত মালদা জেলার অন্তর্গত স্কুলের একটি প্রশ্ন ঘিরে। অভিযোগ, পাক অধিকৃত কাশ্মীরকে ঐ প্রশ্নে আজাদ কাশ্মীর রূপে উল্লেখ করা হয় হয়েছে। মঙ্গলবার এই ছবি প্রকাশ্যে আসতেই শুরু হয়েছে তোলপাড়। প্রকাশিত ঐ প্রশ্নের ছবি ট্যুইট করে রাজ্য সরকারকে এক হাত নিয়েছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ।
তিনি ট্যুইট করেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার বিচ্ছিন্নতাবাদী শক্তির সমর্থক। মাধ্যমিক টেস্ট পেপার ২০২৩-এর ১৩২ পৃষ্ঠায় ইতিহাসের প্রশ্নপত্রের চিহ্নিত অংশটি দেখুন। শিক্ষার্থীদের পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরের অংশকে আজাদ কাশ্মীর হিসেবে চিহ্নিত করতে বলা হয়েছে।” তিনি টেস্ট পেপারের ছবি এবং প্রশ্নপত্রের ছবিও ট্যুইট করেছেন।
কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সুভাষ সরকারও বলেন, রাজ্য শিক্ষা মন্ত্রীকে নিয়ে খোঁজ নিতে হবে। কারা এর পেছনে রয়েছে, তা জানতে হবে। যদি অভিযোগ সত্যি হয় ব্যবস্থা নিতে হবে প্রকাশকের বিরুদ্ধে। এর মধ্যে জাতীয়তাবাদ বিরোধী একটা সুর রয়েছে, এসব বিচ্ছিন্নতাবাদীদের উৎসাহিত করবে।' এই নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার আলাদাভাবে তদন্ত করবে বলেও জানিয়েছেন সুভাষ সরকার।
বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছে কংগ্রেসও। কংগ্রেস নেতা প্রদীপ ভট্টাচার্য বলেন, 'আজাদ কাশ্মীর পাকিস্তানে কেন, তার সুদীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। এ ধরনের প্রশ্ন থেকে বিরত থাকা উচিৎ বলেই আমি মনে করি।'
এদিকে যে স্কুলের প্রশ্ন নিয়ে বিতর্ক, সেই স্কুলের প্রধান শিক্ষকের কথায়, 'আমাদের মাধ্যমিকের টেস্ট পেপার নিয়ে বিতর্ক হয়েছে। কিন্তু নেতিবাচক কোনও ভাবনা ছাত্রদের মধ্যে ঢোকাতে চাই না। যে সত্য ইতিহাসের পাতায় আছে, সেটাই তুলে ধরা হয়েছে। সরকারি বইয়ের নিরিখে পড়াশোনা করাই, প্রশ্ন করি, বই থেকেই প্রশ্ন করা হয়েছে।'
No comments:
Post a Comment