আর্থিক সংকটে পাকিস্তান। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের তীব্র ঘাটতির মুখোমুখি। পাকিস্তানে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৬.৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার কমেছে। এদিকে চীনও সেখানে বিনিয়োগ কমিয়ে দিয়েছে। রাজনৈতিক উত্থান অর্থনীতিতেও প্রভাব ফেলেছে। অবস্থা এমন যে, উচ্চ মূল্যস্ফীতির মধ্যে দেশে নগদ অর্থের সংকটের পাশাপাশি জ্বালানি সংকট আরও গভীর হয়েছে।
এর পরিপ্রেক্ষিতে শাহবাজ শরিফ সরকার জ্বালানি খরচ কমানোর ঘোষণা দিয়েছে। পাকিস্তান নাগরিকদের কম বিদ্যুৎ ব্যবহার করার আবেদন জানিয়েছে। আল আরাবিয়া পোস্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বর্তমানে পাকিস্তানে বিদ্যুতের সরবরাহ চাহিদার তুলনায় প্রায় ৭০০০ মেগাওয়াট কম।
জ্বালানি সংকটের মধ্যে, দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল অর্থাৎ খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের মানুষ গ্যাস সিলিন্ডারের জন্য আকুল । সেখানে একটি সিলিন্ডারের জন্য মানুষকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত দিতে হয়। প্লাস্টিকের ব্যাগে গ্যাস ভরতে বাধ্য হচ্ছেন অনেকে। এদিকে জ্বালানি সংকটের কারণে মানুষ গ্যাস সিলিন্ডার মজুদ করতে শুরু করেছে বলে খবর আসছে।
পাকিস্তানে জ্বালানি সংকটের মধ্যে খাদ্য সংকটও ঘনীভূত হতে শুরু করেছে। ডন পত্রিকার খবরে বলা হয়, দেশের অনেক স্থানেই গমের সংকট দেখা দিয়েছে। তার মানে আগামী দিনে পাকিস্তানে রুটির ঘাটতি দেখা দিতে পারে। তবে কেন্দ্রীয় সরকার আশ্বস্ত করেছে যে গম আমদানি করা হচ্ছে।
সংবাদপত্র সূত্রে খবর , ইসলামাবাদের ৪০টি ময়দা মিলের দৈনিক ব্যবহার ২০ কেজি গমের ৩৮,০০০ ব্যাগ, কিন্তু মিলগুলি পর্যাপ্ত গম পাচ্ছে না এবং প্রতিদিন ১৭,০০০ ব্যাগের ঘাটতি দেখছে।
পাকিস্তানের খাদ্য নিরাপত্তা মন্ত্রী তারিক বশির চিমা গম সংকটের জন্য রাজ্যগুলিকে দায়ী করেছেন এবং বলেছেন যে তার সরকার রাজ্যগুলিকে তাদের চাহিদা অনুযায়ী গম সরবরাহ করবে। গম কালোবাজারির সঙ্গে জড়িতদেরও কটাক্ষ করেছেন তিনি। তিনি এই সংকটের জন্য পাঞ্জাব সরকারকে দায়ী করেছেন।
গত বছর উচ্চ মূল্যস্ফীতি এবং বিপর্যস্ত অর্থনীতির মধ্যে প্রতিবেশী দেশ শ্রীলঙ্কায় একটি বিশাল জ্বালানি সংকট দেখা দেয়। বিদ্যুৎ বিভ্রাট এবং মৌলিক প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র, খাদ্য ও ওষুধের ঘাটতির সঙ্গে লড়াই করে মানুষ রাস্তায় নেমে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ভবন দখল করে। শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসেকে তখন সামরিক বিমানে দেশ ছেড়ে মালদ্বীপে যেতে হয়।
No comments:
Post a Comment