মালদা: বন্দে ভারতেও লাগল রাজনীতির ছোঁয়া। নাম না করে রাজ্যের শাসক দলকে পাথর ছোঁড়া পার্টি বলে কটাক্ষ করলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা তথা নন্দীগ্রামের বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী। এছাড়াও এদিন গাজোলের সভা থেকে একাধিক ইস্যুতে তৃণমূলকে তুলোধনা করেন তিনি। পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট থানার আইসিকে হুঁশিয়ারি দেন শুভেন্দু অধিকারী।
তিনি বলেন, 'গাজোলের আইসি সাহেব খুব মাল তুলছেন। এখনও সময় আছে সাবধান হয়ে যান , তৃণমূল দল আপনাকে বাঁচাতে পারবে না। আইনের কাজ করুন, যা করছেন সব খবর আমাদের কাছে আছে।'
মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় গাজোল থানার বিএসএ ময়দানে মানুষের অধিকারের দাবীতে উত্তর মালদা সাংগঠনিক জেলার কর্মীসভা আয়োজন করা হয়। প্রধান বক্তা ছিলেন বিজেপির বিধায়ক তথা রাজ্যে বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন দলের উত্তর মালদার সাংসদ খগেন মুর্মু, গাজোলের বিধায়ক চিন্ময় দেব বর্মন, উত্তর মালদার সাংগঠনিক সভাপতি উজ্জ্বল দত্ত , দলের রাজ্যের সাধারণ সম্পাদক বিশ্বপ্রিয় রায় চৌধুরী সহ অন্যান্য নেতৃত্ব।
এদিন মঞ্চে বক্তব্য রাখতে গিয়ে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, 'যারা বন্দে ভারতে পাথর ছুঁড়েছে সেই পাথর ছোঁড়া পার্টির দিন ঘনিয়ে এসেছে। মানুষ এর জবাব দেবে। আর গাজোলের যিনি আইসি আছেন, তাকে বলছি আপনি খুব মাল তুলছেন। সাবধানে থাকবেন। তৃণমূল আপনাকে বাঁচাতে পারবে না।'
শুভেন্দু আরও বলেন, 'প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় চরম দুর্নীতি হচ্ছে। যাদের পাকা বাড়ি, চারচাকা গাড়ি, আড়াই একরের ওপর জমি আছে, তাদের এই প্রকল্পের সুবিধা পাওয়ার কথা নয়। কিন্তু প্রকৃত গরীব মানুষেরা বঞ্চিত হয়ে একশ্রেণীর বড়লোকদের এই সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। তাই আমি বলছি বঞ্চিত লোকেদের নিয়ে জনস্বার্থ মামলা করবে বিজেপি।
শুভেন্দুর সংযোজন, এ রাজ্যে প্রধানমন্ত্রীর স্বচ্ছ ভারত প্রকল্পে ৭০ লক্ষ শৌচালায় তৈরি করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এখনও বহু গ্রামীণ এলাকায় এই সুবিধা পাননি সাধারণ মানুষ। সবেতেই দুর্নীতি। তৃণমূল একটা দুর্নীতির সরকারের পরিণত হয়েছে। এই সরকারের এখন এমন অবস্থা যে, সরকারি কর্মচারীদের বকেয়া দিয়ে দিতে গেলে স্যালারি বন্ধ হবে। আর স্যালারি দিতে গেলে লক্ষ্মীর ভান্ডার বন্ধ হবে। কোন কিছুই ওরা বুঝে উঠতে পারছে না কি করবে। তাই এবারের মত ইতি টানতে হবে এই চোর সরকারকে।
শুভেন্দু অধিকারী আরও বলেন, 'প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় এত দুর্নীতি হয়েছে, যে ভয়ে নিজেরা প্রশাসনিকভাবে কাজ না করে খেটে খাওয়া অঙ্গনওয়াড়ি এবং আশা কর্মীদের দিয়ে সমীক্ষা করাতে বলেছে। আসলে তৃণমূল দল কিছুই করতে পারবে না। তবে এটা মনে রাখতে হবে, পঞ্চায়েত নির্বাচনে বহু ভোট লুট হয়েছিল। কিন্তু এবার মানুষ বদ্ধপরিকর। ভোট এবার লুট হতে দেওয়া যাবে না। গাজোল তার জলজ্যান্ত উদাহরণ।'
তিনি বলেন, 'এই বিধানসভা কেন্দ্রে বহু জায়গায় পঞ্চায়েতের ভোট লুট আটকে দিয়েছিল জনগণ এবং বিজেপি। ফলে বহু আসন বিজেপি পেয়েছিল। বন্যার টাকা নিয়েও দুর্নীতি করা হয়েছে মালদার বেশ কয়েকটি বিধানসভা কেন্দ্রে। একজন প্রধানও জেল খাটছে। বাকিরাও বাদ যাবেন না। গরীবের টাকা মেরে খেলে তাদের শাস্তি হবে।'
উল্লেখ্য, এদিন গাজোলের সভা সেরে দক্ষিণ দিনাজপুরের উদ্দেশ্যে রওনা শুভেন্দু অধিকারী।
No comments:
Post a Comment