উত্তর ২৪ পরগনার: 'বিডিও হরিদাস পাল হয়ে যায়নি', প্রকাশ্য জনসভায় ব্লক আধিকারিককে দেখে নেওয়ার হুমকি তৃণমূল নেতা মাফুজার রহমানের। পাশাপাশি সিপিএমের চামড়া তুলে নেওয়ারও হুঁশিয়ারি দেন তিনি। 'মানুষ ওদের সঙ্গে নেই বুঝতে পেরেই অসংলগ্ন কথাবার্তা বলে প্রচারে থাকতে চাইছে', কটাক্ষ সিপিএমের। 'এসব তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের প্রমাণ, যার শিকার হচ্ছেন প্রশাসনের আধিকারিকরা', প্রতিক্রিয়া বিজেপির।
বারাসত এক নম্বর ব্লকে তৃণমূলের প্রতিবাদ সভা হয়। সেখানেই বক্তব্য রাখেন তৃণমূল কংগ্রেসের বারাসত সংসদীয় জেলার কৃষাণ ক্ষেতমজুর মজদুর কমিটির সভাপতি মাফুজার রহমান। এদিন জনগণের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, 'কোনও অফিসার যদি আপনাদের সঙ্গে অসদাচরণ করে, বিডিও যদি আপনাদের কথা ঠিকমত শুনতে না চায়, কোনও কথা শুনবেন না, টেবিল চাপড়ে আদায় করে নেবেন, এটা আপনার অধিকার। এরপরেও যদি তাচ্ছিল্য করে, নেতৃত্বকে বলবেন ব্যবস্থা করে দেব, কোনও অসুবিধা নেই। বিডিও হরিদাস পাল হয়ে যায়নি।'
তিনি আরও বলেন, 'একজনের কথা শুনে বিডিও অফিস চলবে না, এটা কারও বাবার জমিদারি নয়, দল কারও বাবার পৈতৃক সম্পত্তি হতে পারে না।'
পাশাপাশি সিপিএমকে হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, 'যারা বলতে এসেছে তৃণমূলের অত্যাচারে আমরা অতিষ্ট, তৃণমূল সন্ত্রাস করছে আমি বলি কমিউনিস্ট পার্টির বন্ধুদের পিঠের চামড়া তুলে ফেলে দেব। বাঁদরের বাঁদরামোর একটা শেষ আছে।' হুঁশিয়ারির সুরে তিনি বলেন, 'আমাদের সন্তান কেড়ে নেবে আর বড় বড় কথা বলবে, জিভটা টেনে ছিঁড়ে নেব।'
এদিকে তৃণমূল নেতার এহেন মন্তব্যে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিরোধীরা। খাইরুল ইসলাম, সিপিএম বারাসত উত্তর পূর্ব এরিয়া কমিটির সদস্য বলেন, 'গণতন্ত্র এই সময় পশ্চিমবঙ্গে নেই, ফলে উনি জিভ টেনে ছিঁড়ে নিতে পারেন, অনেক কিছুই করতে পারেন। এটা ওদের কালচার। কিন্তু মানুষ এই মুহূর্তে আর ওদের সঙ্গে নেই, মানুষ সব বুঝতে পারছে। আর এই কথা ওরা জানে বলে এই ধরণের অসংলগ্ন কথাবার্তা বলে প্রচারে থাকতে চাইছে।'
বাম নেতা আহমেদ খান বলেন, 'আবাস যোজনায় অনেক দুর্নীতি হয়েছে, টাকার বিনিময়ে ঘর দেওয়া হয়েছে। আমরা বিডিও অফিসের সামনে মিটিংয়ে এসব অনেক তথ্য তুলে ধরেছিলাম, সেজন্যই গায়ের জ্বালা, তাই তৃণমূল নেতা বলছেন সিপিএম নেতাদের জিভ টেনে ছিঁড়ে নেবেন।'
বিডিওকে হুমকি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'শিক্ষা ক্ষেত্রে নিয়োগ দুর্নীতিতে যুক্তদের পরিণতি দেখে বিডিওরা সব ভয় পেয়েছেন। তাই তারা তৃণমূল নেতামন্ত্রীদের কথায় অনৈতিক কাজ করতে চাইছেন না। এর ফলেই বিডিওদের হুমকি দিচ্ছে।'
অপরদিকে বিজেপি নেতা তাপস মিত্র বলেন, 'কদম্বগাছির এই ঘটনা তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের প্রমাণ। আর তার শিকার হচ্ছেন প্রশাসনের আধিকারিকরা। তিনি বিডিওকে হুমকি দিচ্ছেন কারণ তারা গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে জর্জরিত। সবই আসলে কামিয়ে খাওয়ার রাজনীতি। ভাগ কম পাচ্ছে, তাই বিডিওকে বলির পাঁঠা করতে চাইছে।'
No comments:
Post a Comment