এ বছর বাংলায় পঞ্চায়েত নির্বাচন এবং আগামী বছর লোকসভা নির্বাচন। রাজনীতির পাশাপাশি অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতিই হবে বাংলা সরকারের লক্ষ্য। রাজ্য সরকার আজ বুধবার ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেট পেশ করতে চলেছে। বুধবার দুপুর ২টা থেকে বিধানসভায় বাজেট পেশ করবেন অর্থ প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। এই বাজেটে সামাজিক প্রকল্পের ঘোষণার পাশাপাশি কেন্দ্রীয় সরকারের অর্থনৈতিক নীতির সমালোচনা এবং আয়ের জন্য নতুন বিকল্প খোঁজার মতো বিষয়গুলি অন্তর্ভুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
অদূর ভবিষ্যতে পঞ্চায়েত নির্বাচন এবং লোকসভা নির্বাচন এক বছর দূরে থাকায়, আর্থিক বিশেষজ্ঞরা বিশ্বাস করেন যে এই বাজেটে রাজ্য সরকার রাজনৈতিক পাশাপাশি অর্থনৈতিক পরিস্থিতিকে শক্তিশালী করার পদক্ষেপ নেবে। সীমিত রাজস্বের মধ্যে ক্রমবর্ধমান ব্যয়, ক্রমবর্ধমান ঋণ এবং রাজস্ব ঘাটতি সরকারের জন্য উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তৃণমূল সরকার গত কয়েক বছরে উল্লেখযোগ্য হারে সামাজিক কল্যাণ খাতে বরাদ্দ বাড়িয়েছে। তৃতীয়বার সরকারে ফিরে আসার পর লক্ষ্মী ভান্ডার, নবীন কিষাণ বন্ধু, ছাত্রদের জন্য ঋণ কার্ড এবং স্বাস্থ্য সাথী যোজনার মতো প্রকল্পের পরিধি বাড়ানো হয়েছে। কন্যাশ্রী, রূপশ্রী, সাইকেল ও ট্যাব বিতরণ, বিনামূল্যে রেশন, ভাতা সহ বিভিন্ন প্রকল্প চলছে। নির্বাচনের আগে সমাজকল্যাণ বরাদ্দ কমানো প্রায় অসম্ভব। এ ছাড়া বেতন-পেনশন, ঋণ পরিশোধ, প্রশাসনিক ব্যয়, অফিসভিত্তিক বরাদ্দের মতো প্রয়োজনীয় ব্যয়ের বিধান বাধ্যতামূলক। অর্থনীতিবিদরা জানিয়েছেন, রাজস্ব ঘাটতির কারণে আয় বাড়েনি, তাই ঋণ নেওয়ার প্রবণতা নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। ডিএ বা মহার্ঘ ভাতা সংক্রান্ত মামলা সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন।
আর্থিক পর্যবেক্ষকরা জানিয়েছেন, রাজ্য সরকার এখন তার আগের অবস্থান থেকে সরে গিয়ে বিভিন্ন প্রকল্পের জন্য কেন্দ্রীয় তহবিলের সুবিধা পাওয়ার চেষ্টা করছে। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা, ১০০ দিনের কাজের মতো গ্রামীণ প্রকল্পগুলির জন্য কেন্দ্রীয় বরাদ্দ বন্ধ করে সরকার উদ্বিগ্ন। তদুপরি, কেন্দ্র বলেছে যে রাজ্য ৩.৫% পর্যন্ত রাজস্ব ঘাটতি বজায় রাখতে পারে শুধুমাত্র যদি বিদ্যুৎ খাতের সংস্কার কার্যকর করা হয়। অন্যথায় তিন শতাংশে নামিয়ে আনতে হবে। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত কয়েক বছরে রাজ্যের রাজস্ব ঘাটতি ধীরে ধীরে বেড়েছে। চলতি আর্থিক বছরের (২০২২-২৩) বাজেটে রাজ্য এটি ৩.৬৪ শতাংশে রেখেছিল। যদি রাজনৈতিক কারণে বিদ্যুৎ খাতে সংস্কারের বিষয়টি মেনে নেওয়া না যায়, তাহলে রাজস্ব ঘাটতি ৩ শতাংশে নিয়ে আসাটাও বড় পরীক্ষা। এমন পরিস্থিতিতে ঋণ নেওয়ার সুযোগ কমে যাওয়ায় কেন্দ্রীয় বরাদ্দ পেতে সমস্যা হতে পারে।
No comments:
Post a Comment