বিবিসির মুম্বাই অফিসে প্রায় ৫৫ ঘণ্টা পর আয়কর বিভাগের জরিপ শেষ হয়েছে। মুম্বাইয়ের কালিনায় বিবিসি অফিস ছেড়েছেন বিভাগের ৬ জন কর্মী। সূত্রের খবর, আয়কর বিভাগ বিবিসি অফিস থেকে বেশ কিছু নথি, পেনড্রাইভ এবং হার্ড ড্রাইভ বাজেয়াপ্ত করেছে।
বলা হচ্ছে, আয়কর বিভাগের একটি দল ব্যালার্ড এস্টেটের সিন্ধিয়া হাউসের সদর দফতরের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছে। একই সঙ্গে দিল্লীর দফতরগুলিতে এখনও সমীক্ষা চলছে। গত তিন দিন ধরে আইটি বিভাগ দিল্লী ও মুম্বাইয়ে বিবিসির অফিসে জরিপ করছিল। ১৪ ফেব্রুয়ারি, সকাল ১১ টায়, হঠাৎ করে আইটি বিভাগের দলটি জরিপের জন্য বিবিসির দিল্লী এবং মুম্বাই অফিসে পৌঁছায়।
বিবিসির কাছে গত ১০ বছরের আর্থিক লেনদেন দাবী করা হচ্ছে। কিছু কম্পিউটার এবং ফোনের ক্লোন তৈরি করা হয়েছে (ডাম্প করা হয়েছে) যাতে বিদেশী তহবিল এবং স্থানান্তর তদন্ত করা হচ্ছে। বিদেশে কিছু আর্থিক লেনদেনের কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। আইটি কর্মীরা শিফটে কাজ করছেন। কর্মচারীদের তাদের মোবাইল থেকে কোনও তথ্য মুছে না দিতে বলা হয়েছে।
তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগের জরিপের পর সেখানকার কর্মীরা হতবাক। এ সময় আয়কর বিভাগের আধিকারিকরা বিবিসির কয়েকজন কর্মচারীর ফোন বাজেয়াপ্ত করেন। জরিপের পর রাজনৈতিক মহলে তোলপাড় শুরু হয়। কংগ্রেস সহ অন্যান্য বিরোধী দলগুলি মোদী সরকারকে ঘেরাও করতে শুরু করে। শুরু হয় অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগ।
এই অভিযানকে ডকুমেন্টারি বিতর্কের সঙ্গে যুক্ত করে দেখছে কংগ্রেস দল। দলটি বলেছে যে এটি মোদী সরকারের প্রতিশোধমূলক কাজ। কংগ্রেস বলেছে, যে বিবিসির ওপর একসময় নরেন্দ্র মোদী আস্থা রাখতেন, সেটি এখন খারাপ হয়ে গেছে। কংগ্রেস নেতা পবন খেদা বুধবার বলেছিলেন যে আরএসএসের শাখাগুলির মতো, একইভাবে ইডি, সিবিআই, আইটি-রও বিভিন্ন দেশে শাখা থাকা উচিৎ। তারা দেশকে নিয়ে তামাশা করেছে। একই সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিবিসির আইটি সমীক্ষাকে দুর্ভাগ্যজনক বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, এই মোদী সরকার একনায়কতন্ত্র।
বিবিসির দিল্লী ও মুম্বাই অফিসে আয়কর বিভাগের জরিপ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে একটি পিটিশন দায়ের করা হয়েছে। সমাজকর্মী মুকেশ কুমারের তরফে সুপ্রিম কোর্টে এই পিটিশন দায়ের করা হয়েছে। এতে সংবাদপত্রের স্বাধীনতার কথা উল্লেখ করে যথাযথ নির্দেশ জারি করার দাবী জানানো হয়েছে শীর্ষ আদালতকে।
এই আবেদনে বিবিসির বিতর্কিত তথ্যচিত্রের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ারও দাবী জানানো হয়েছে। আইনজীবী রূপেশ সিং ভাদোরিয়া এবং মারিশ প্রবীর সহায়ের মাধ্যমে এই আবেদনটি দায়ের করেছেন মুকেশ। অ্যাডভোকেট ভাদৌরিয়া ভারতীয় যুব কংগ্রেসের আইনি সেলের প্রধানও।
No comments:
Post a Comment