রংয়ের বাজারে ভাইরাসের থাবা! চিন্তায় ব্যবসায়ীরা - press card news

Breaking

Post Top Ad

Post Top Ad

Monday 6 March 2023

রংয়ের বাজারে ভাইরাসের থাবা! চিন্তায় ব্যবসায়ীরা


করোনা কাঁটা সরতে না সরতেই থাবা বসিয়েছে অ্যাডিনো।‌ মূলত শিশুদেরই নিজের শিকারে পরিণত করছে এই ভাইরাস। আর এই নতুন ভাইরাসের প্রভাব পড়েছে বারসতের রং বাজারে, বিপাকে ব্যবসায়ীরা। 


বাজারে সেভাবে বিক্রি হচ্ছে না রং থেকে শুরু করে শিশুর খেলার পিচকিরি ও মুখোশের। আবির, রং ও খেলনা বিক্রির জন্য কিনে আর্থিক ক্ষতির মুখে বহু  ব্যবসায়ী। ব্যবসায়ীদের দাবী অ্যাডিনোর প্রকোপ বাড়ায় কমেছে বিক্রি। অনেকেই আবার অ্যাডিনোকেই শুধু ভিলেন ভাবতে রাজি নন। 


ব্যবসায়ী সিরাজুল হক ও শাহিদুল মোল্লা বলেন, 'বাজারের অবস্থা খুবই খারাপ, বেচাকেনা হচ্ছে না অ্যাডিনোভাইরাসের জন্য।' অপর এক ব্যবসায়ী পিন্টু সাহা বলেন, বাজারের অবস্থা তেমন ভালো নয়, ভাইরাসের জন্য কেউ রং খেলতে ও বেরোতে ভয় পাচ্ছে। নতুন পিচকারি, বেলুন এসেছে বাচ্চাদের জন্য কিন্তু তেমনভাবে বিক্রি হচ্ছে না।' 


ব্যবসায়ী গোবিন্দ দাসের কথায়, বাজার এখনও অবধি ওঠেনি। শুনছি অ্যাডিনোভাইরাস না কী বেরিয়েছে। বাবা-মায়েরা বাচ্চাদের রং মাখাতে ভয় পাচ্ছেন।' তিনি বলেন, রংয়ের বাজার মূলত বাচ্চাদের ওপর নির্ভর করেই, ওদেরই তো আনন্দ বেশি।' তিনি আরও বলেন, 'ব্যবসায় ঘাটা পড়বে কিনা, এখনই বুঝতে পারছি না। তবে আমরা যা ইনভেস্ট করেছি সেটা যেন উঠে যায় আশা করছি।'


অপর এক ব্যবসায়ী বিশ্বজিৎ বিশ্বাসের কথায়, 'বাজারের অবস্থা খুব একটা ভালো না। তবে এর কারণ অ্যাডিনোভাইরাস কিনা, খুব একটা বুঝতে পারছি না।' তিনি বলেন, 'হলেও হতে পারে। মানুষ সেভাবে আসছে না। আগের বছরের তুলনায় এবার বাজার এখনও পর্যন্ত খারাপ।'


স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, প্রতি বছর এসময় জ্বর, সর্দি-কাশির প্রকোপ বাড়ে। তবে চলতি মরসুমে শিশুদের নিউমোনিয়া আক্রান্তের সংখ্যা বিগত বছরের তুলনায় বেশি। সাথে জুড়েছে অ্যাডিনোভাইরাসের প্রকোপ। উত্তর ২৪ পরগনা জেলার ব্লকে ব্লকে শিশুদের সুস্থ রাখতে বাবা মায়েদের উদ্দেশ্যে সচেতনতা প্রচার করছে সরকার। 


শেষ সাত দিনে জেলার কোনও না কোনও শিশুর মৃত্যু হচ্ছে। উত্তর ২৪ পরগনা জেলায় এই মুহুর্তে (রবিবারের হিসেবে) আক্রান্তের সংখ্যা একশোর বেশি। প্রতিদিন বারাসত ১, দেগঙ্গা, ও আমডাঙা ব্লকে শিশুদের সর্দি-কাশিতে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ায় সচেতন ও সতর্ক হয়েছেন বহু পরিবার। সন্তানদের জন্য দোলে আবির ও রং মাখা থেকে বিরত থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন অনেকেই। ফলে রং ও রং খেলার শিশুদের খেলনা বিক্রি হচ্ছে না। 


অ্যাডিনো ভাইরাসের ভয়ে বহু মানুষ রং ও খেলনা না কেনায় বিক্রি কমেছে। ফলত গতবারের তুলনায় বিক্রি কমায় বিপাকে পড়েছেন রং ব্যবসায়ীরা।  বারাসত ১ , দেগঙ্গা ও আমডাঙা ব্লকের বিভিন্ন পঞ্চায়েত এলাকায় দোল উপলক্ষে রং, পিচকিরি ও মুখোশ বিক্রির জন্য দোকান দিয়েছেন অনেকেই। পাশাপাশি স্টেশনারি ও মুদি দোকানদাররা বস্তা বস্তা রং কিনেছেন বিক্রির জন্য। 


ব্যবসায়ীদের সূত্রের খবর, গতবারের তুলনায় আবিরের বস্তা প্রতি দাম বেড়েছে ৫০০ থেকে ৭০০টাকা। আবির বিক্রি করতে হচ্ছে ১৫০টাকা কেজি। খেলনার পেটি পিছু দাম বেড়েছে ৭০০ থেকে ১২০০ টাকা। বিক্রি না হলে থেকে যাওয়া আবির, রং এবং খেলনা নিয়ে কী করবেন, তা ভেবেই দিশেহারা ব্যবসায়ীরা।

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad