স্কুলের বসন্ত উৎসবে মদ্যপ অবস্থায় ছাত্রীদের সঙ্গে অভব্য আচরণের অভিযোগ উঠল প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। প্রতিবাদে স্কুলে এবং রাজ্য সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ, ঘটনাস্থলে বিশাল পুলিশ বাহিনী। উত্তাল হুগলির চণ্ডীতলার। শুধু ছাত্রীদের সঙ্গে নয়, তাদের ছাত্রীর মায়েদের সঙ্গেও রঙ মাখানোর অছিলায় খারাপ আচরণের অভিযোগ উঠেছে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। যদিও নিজের বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন প্রধান শিক্ষক।
ঘটনার সূত্রপাত দিন কয়েক আগে। জানা গিয়েছে, গত ১০ তারিখ চণ্ডীতলার কৃষ্ণরামপুর দত্তপুর লায়ন্স উডলায়ন্স বিবেকানন্দ বিদ্যাপীঠে বসন্ত উৎসবের আয়োজন করা হয়। অভিযোগ, এদিন স্কুলের প্রধান শিক্ষক নিমাই চন্দ্র ঘোষ মদ্যপ অবস্থায় স্কুলের ছাত্রীদের সঙ্গে, এমনকি তাদের মায়েদের সঙ্গেও খারাপ আচরণ করে। এই ঘটনার প্রতিবাদে এবং প্রধান শিক্ষকের উপযুক্ত শাস্তির দাবীতে শুক্রবার স্কুলে বিক্ষোভের পাশাপাশি ১৫ নং রাজ্য সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান পড়ুয়া ও অভিভাবকরা।
ওদিকে খবর পেয়ে স্কুলে ছুটে আসেন চণ্ডীতলা-২-এর জয়েন বিডিও। তাকে ঘিরেও বিক্ষোভ দেখান অভিভাবকরা। পাশাপাশি ঘটনাস্থলে পৌঁছায় চণ্ডীতলা থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে। স্কুলে গিয়ে পুলিশ বোঝানোর চেষ্টা করলেও নাছোড়বান্দা অভিভাবকরা। তাদের দাবী প্রধান শিক্ষককে তাদের হাতে তুলে দিতে হবে।
নিজের বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ তিনি অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, 'ঐদিন আমি বিকেল ৫ টা পর্যন্ত স্কুলে ছিলাম। তারা সেদিনই অভিযোগ আনতে , আমাকে সরাসরি ধরতে এবং আমার মেডিক্যাল টেস্ট করাতে পারত। কিন্তু সেদিন এমন কিছুই হয়নি, উল্টো সবাই আনন্দ-নাচানাচি করেছে, মাংস-ভাত খেয়েছে, আমার সঙ্গেও কথা বলেছে। সুষ্ঠুভাবে সবটা সম্পন্ন হয়েছে।'
প্রধান শিক্ষকের অভিযোগ, দুজন টিচিং স্টাফ, তারা পড়ুয়াদের ক্ষিপ্ত করে তোলে এবং তাদের দিয়ে এসব করাচ্ছে। তাঁর দাবী, তাঁকে ফাঁসানোর জন্য এসব চক্রান্ত। পাশাপাশি তাঁর প্রশ্ন, 'ঘটনার এতদিন পর এই বিক্ষোভ কেন?'
এক অভিভাবকদের দাবী, উনি স্কুলেই আসছিলেন না। আজ তারা ওনাকে পেয়েছেন। তিনি বলেন, 'বসন্ত উৎসবের দিন মেয়েদের সঙ্গে মদ্যপ অবস্থায় খারাপ আচরণ করেছে, তাদের অসম্মান করেছেন প্রধান শিক্ষক। আমরা তাঁর শাস্তি চাই।' তিনি এও বলেন, 'এই স্কুলেই ওই শিক্ষককে তারা আর চান না।'
এর পাশাপাশি অপর এক অভিভাবক বলেন, 'শিক্ষক যদি এমন করে, আমাদের ছেলেমেয়েরা কী শিখবে! তাদের ভবিষ্যৎ কেমন হবে।' মদ্যপানের সঙ্গে সঙ্গে ধূমপানের অভিযোগও তিনি করেন প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। তিনি বলেন, 'রং মাখানোর অছিলায় ছাত্রীদের মায়ের সঙ্গেও অভব্য আচরণ করেছেন প্রধান শিক্ষক। আমরা চাই ওনাকে সাসপেন্ড করা হোক।'
ওদিকে অবরোধের জেরে প্রচুর যানজটের সৃষ্টি হয় অহল্যা বাই রোডে। যদিও পরবর্তীতে পুলিশের আশ্বাসে অবরোধ তুলে নেন তারা।
No comments:
Post a Comment