চলছে রাজনৈতিক বৈঠক। মঞ্চের সামনের দর্শকরা নেতাদের বক্তব্যে মগ্ন। এদিকে খবর এলো জলখাবারের প্যাকেট এসেছে। মিটিং বাদ দিয়ে তখন টিফিনই আকর্ষণের কেন্দ্র। "যদি প্যাকেট শেষ হয়", কে প্রথমে নিবে তার একটি প্রতিযোগিতা শুরু। এর পরেই, হুড়োহুড়ি, ধাক্কা, মারপিট।
হাজার হাজার দর্শকের মধ্যে চরম বিশৃঙ্খলা। রবিবার পূর্ব বর্ধমানে তৃণমূল সংখ্যালঘু সেল আয়োজিত কর্মিসভায় পদপিষ্ট হওয়ার কথা। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন বহু মানুষ। রবিবার সংস্কৃতি লোকমঞ্চে পূর্ব বর্ধমান জেলা তৃণমূল কংগ্রেস সংখ্যালঘু সেল একটি কর্মী সভা করেছে। এদিন এই কর্মিসভায় জেলার বিভিন্ন ব্লকের সংখ্যালঘু সেলের কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। সেখানে উদ্যোক্তারা সভায় আগত জনগণের জন্য জলখাবারের ব্যবস্থা করেন। টিফিন নিয়ে চরম বিশৃঙ্খলা, হুড়োহুড়ি।
আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে দলকে আরও একটু শক্তিশালী করতেই এই সভার আয়োজন করা হয়। কিন্তু ঘটনার সূত্রপাত বৈঠকের মধ্যেই। ভিতরে উপস্থিত ছিলেন তৃণমূল নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার, মমতাজ সংঘমিতা, বিধায়ক খোকন দাসের মতো শীর্ষ তৃণমূল নেতৃত্ব। বিভিন্ন ব্লক থেকে শ্রমিকরা জড়ো হয়েছেন।
এমন পরিস্থিতিতে খবর আসে 'খাবার প্যাকেট' এসেছে। শত শত শ্রমিক সবকিছু ভুলে খাবারের গাড়িতে ঝাঁপিয়ে পড়ে। হুড়োহুড়িতে অনেকে আহত হন। খাবারের প্যাকেট ছড়িয়ে পড়ে। খাবার না পেয়ে অনেকেই ক্ষুব্ধ হন। সুযোগ বুঝে কেউ একাধিক প্যাকেট পকেটে রাখেন। তৃণমূল কর্মী ওয়েবেদুল হক ও আহত আরেক কর্মী সংবাদমাধ্যমকে জানান, তারা অনেক দূর থেকে এসেছেন।
খাবার বা জল কিছুই পান নি। অসুস্থ মানুষ কিছুই পায়নি, অনেকে পাঁচ-দশ প্যাকেট খাবার নিয়ে গেছে। প্যাকেট নেওয়ার জন্য তারা মারামারি, ধাক্কাধাক্কি করে। দলের শৃঙ্খলা বজায় রাখা উচিৎ ছিল। তবে এই বিশৃঙ্খলা মানতে চাননি জেলা সংখ্যালঘু সেলের সভাপতি শেখ আসরাফুদ্দিন।
তিনি বলেন, "আসন ছিল এক হাজার ছয়শো। তিন হাজার শ্রমিক এসেছে। একটু এদিক ওদিক হতে পারে। কিন্তু সবার খাবার ছিল।" বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি নিয়ে তিনি আবারও রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র দেখতে পাচ্ছেন।তিনি বলেন, "সভায় লোকদের অনুপ্রবেশ করে বিজেপি এবং সিপিএম সমস্যা তৈরি করেছে।"
No comments:
Post a Comment