কলকাতায় হোলিতে অশান্তি ঠেকাতে সব জায়গায় পুলিশ মোতায়েন থাকবে। হোলির দিনে মোট ৪০০০ পুলিশ মোতায়েন করা হবে। এর মধ্যে ২৬ জন ডেপুটি কমিশনার অব পুলিশ পর্যায়ের আধিকারিক রয়েছেন। লালবাজারের সূত্র জানিয়েছে যে সাধারণত হোলির তুলনায় দোলে তুলনামূলকভাবে বেশি সংখ্যক পুলিশ থাকে, তবে এ বছর মঙ্গলবার দোল এবং বুধবার হোলিতে শহর জুড়ে প্রচুর সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হবে। পাশাপাশি গঙ্গার ঘাটেও নজরদারি বাড়ানো হবে। যারা মদ্যপান করে বাইক চালায় তাদের ওপরও কড়া নজরদারি রাখা হবে।
লালবাজারের আধিকারিকরা দুই দিনই প্রতিটি থানার পাশাপাশি ট্রাফিক বিভাগকে সতর্ক করেছেন যে কোনও ব্যক্তি রঙ নিয়ে খেলার পরে মদ্যপান করে বাইক বা গাড়ি চালাবেন না। যারা মদ খেয়ে গাড়ি চালায় তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। গাড়ি ও বাইক বাজেয়াপ্ত করা যেতে পারে।
পুলিশ জানিয়েছেন, স্পিড বাইক বা স্কুটির ওপরে দোল বা হোলির প্রবণতা রয়েছে। চুলের রঙের কারণে অনেকেই হেলমেটও পরেন না। পুলিশের একটি কড়া বার্তা রয়েছে, আপনি যদি হেলমেট না পরেন বা বাইকে তিনজন না থাকেন, তাহলে আপনাকে জরিমানা দিতে হবে। পুলিশ জানিয়েছে, দোল বা হোলি উভয় দিনই কলকাতায় ৩৫০০ থেকে ৪০০০ অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হবে। নগরীর অন্তত পাঁচ শতাধিক গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পুলিশ পিকেট থাকবে। প্রতিটি সার্কেলে নিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বে একজন অতিরিক্ত ডিসি থাকবেন। তার সঙ্গে থাকবেন দু-তিনজন সহকারী কমিশনার। অতিরিক্ত সংখ্যক পরিদর্শক ও অন্যান্য আধিকারিকও মোতায়েন করা হবে। পুলিশ কর্মীরা দিনভর টহল দেবেন। এ ছাড়া পুলিশের পিসিআর ভ্যান, ভারী রেডিও ফ্লাইং স্কোয়াড, কুইক রেসপন্স টিম পুরো শহরে টহল দেবে। পুলিশের দল বাইকে করে রাস্তায় টহল দেবে।
গত বছর হোলিতে রিজেন্টস পার্কে শ্যুটিং হয়েছিল বলে কোনও গোলমালের কয়েক মিনিটের মধ্যে পুলিশ যাতে সেখানে পৌঁছায় তা নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। কোনও গাড়ির ভেতর থেকে যেন রং ছোড়া না হয়, সেদিকে পুলিশ কড়া নজর রাখবে। বহুতল ভবন থেকে রং নিক্ষেপ রোধে প্রতিটি থানাকে বহুতল কমিটিকে সতর্ক করতে বলা হয়েছে। বিশেষ করে মধ্য কলকাতার বড়বাজার, পোস্তা, জোড়াসাঁকো, উত্তর কলকাতা এলাকায় সচেতনতা ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে, যাতে বালতি বা পিচকারি নিয়ে পথচারীদের গায়ে রঙ না ছুড়ে দেওয়া হয়। জোর করে গায়ে রং লাগানোর ঘটনায় পুলিশ কঠোর ব্যবস্থা নেবে। গত বছর দোল দিবসে রং খেলার পর চেতলাসহ নগরীর বিভিন্ন পুকুর ও গঙ্গায় স্নান করতে গিয়ে ৩ কিশোর ও যুবকের মৃত্যু হয়। এ বছর গঙ্গার ঘাট ছাড়াও কলকাতার প্রতিটি পুকুর ও লেকের কাছে পুলিশ মোতায়েন করা হচ্ছে। রং ধোয়ার সময় কেউ যাতে পুকুরে ডুবে না যায় সেদিকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
No comments:
Post a Comment