বিজেপি ও কংগ্রেস থেকে সমান দূরত্বে থাকা দলগুলিকে এক করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস ও সমাজবাদী পার্টি। উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা সমাজবাদী পার্টির প্রধান অখিলেশ যাদব, দলের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকের জন্য কলকাতায় এসে পৌঁছান শুক্রবার। তিনি বলেন, বিজেপি এবং কংগ্রেস থেকে সমান দূরত্ব বজায় রাখবে সমাজবাদী পার্টি। এর পাশাপাশি আঞ্চলিক দলগুলোকে ঐক্যবদ্ধ করার আহ্বান জানান তিনি।
লোকসভা নির্বাচনের পর বিরোধীদের নেতা নির্বাচন করা হবে বলেও স্পষ্ট করে দিয়েছেন। অন্যদিকে, তৃণমূলও তাদের সভায় বিজেপি-বিরোধী এবং কংগ্রেস থেকে সমান দূরত্ব রাখার কথা বলে। সন্ধ্যায় অখিলেশ যাদব মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাসভবনে পৌঁছে তাঁর সঙ্গে বৈঠক করেন।
কলকাতায় এসেছেন সমাজবাদী পার্টির নেতা অখিলেশ যাদব। তিনি বলেন, বাংলায় এলেই কলকাতায় আসা সব সময়ই ভালো লাগে। তিনিও হাসিমুখে মিষ্টি দই খাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। এই সময় ইডি-সিবিআই তদন্ত নিয়েও সরব হন তিনি। পাশাপাশি বিজেপিকে ও কংগ্রেসকেও কটাক্ষ করেন।
২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচন রয়েছে এবং ইতিমধ্যেই তার প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে। বিজেপির সঙ্গে লড়াইয়ে মাঠে নামতে ইতিমধ্যেই প্রস্তুতি শুরু করেছে বিরোধী দলগুলি। বিজেপিকে রুখতে কার্যত তৃতীয় ফ্রন্ট গঠনের মহড়া শুরু হয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে মমতা-অখিলেশের বৈঠককে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ মনে করা হচ্ছে।
ভবিষ্যতে মমতাকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে কী দেখতে চান অখিলেশ? এই প্রশ্নে উত্তরে সপা প্রধান বলেন, "আমরা একসাথে সিদ্ধান্ত নেব।" অন্যদিকে, তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা তথা সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ও স্পষ্ট করেছেন যে রাজ্যে যে দল শক্তিশালী, সেখানে নির্বাচনে লড়ুন এবং লোকসভা নির্বাচনের পর নেতা ঠিক করা হবে। সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, মার্চের শেষ সপ্তাহ বা এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দিল্লী যাবেন।
মমতা ও অখিলেশের বৈঠক নিয়ে জাতীয় রাজনীতির ময়দানে জোর আলোচনা শুরু হয়েছে। সপা সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি কিরণময় নন্দাকে এর আগে বলতে শোনা গিয়েছিল, 'এটি জাতীয় স্তরেও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। হয়তো তাই দিল্লী থেকেও অনেক ফোন পাচ্ছি। বৈঠকের আলোচ্য বিষয় কী হবে জানতে চান। অবশ্যই রাজনীতি নিয়ে আলোচনা হবে, তবে বৈঠক পর্যন্ত এর বেশি কিছু বলা যাবে না।'
এদিকে কলকাতায় আসার পর অখিলেশ যাদব বলেন, 'এই প্রথম নয়, ষষ্ঠ বার বাংলায় এসেছি। ২০২৪ সালে কীভাবে মোদীকে আটকাতে হবে, দলের কৌশল কী হবে, এই বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।'
অখিলেশ যাদব বলেন, "এই প্রথম নয় যে ইডি-সিবিআই তদন্ত করছে। কংগ্রেস অতীতেও এই সংস্থাগুলিকে ব্যবহার করেছে। এখন ভারতীয় জনতা পার্টি এই সংস্থাগুলিকে ব্যবহার করছে, কিন্তু ইতিহাস বলে, যে দল ক্ষমতায় এসে ইডি-সিবিআইকে ব্যবহার করেছিল শেষ পর্যন্ত হারতে হয়েছিল। দিল্লী ছাড়তে য়েছিল। বাংলা, বিহার, তেলেঙ্গানা, অন্ধ্রপ্রদেশ, তামিলনাড়ু, উত্তরপ্রদেশে প্রায়ই বিরোধী নেতাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়। এমনকি উত্তরপ্রদেশে সমাজবাদী পার্টির বিরুদ্ধে ইডি-সিবিআই মামলার সংখ্যা সবচেয়ে বেশি।"
No comments:
Post a Comment