পঞ্চায়েত ভোটের আগে শাসনে সিপিএম শিবিরে বড়োসড় ভাঙ্গন ধারাল শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। অন্যদিকে সিপিআইএমের দাবী, তাদের কোন শক্তিই নেই শাসনে। প্রচার পাওয়ার জন্য বিক্ষুব্ধ তৃণমূলকেই সিপিএমের নাম করে যোগদান করিয়েছে শাসক দল। ঘটনায় শুরু রাজনৈতিক তরজা।
শাসনের কীর্তিপুর এক নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের খড়িবাড়ি এলাকায় সিপিএমের এক সময় শক্ত ঘাঁটি ছিল কীর্তিপুর এক নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েত। আর সেই খড়িবাড়িতে সিপিএম ও আইএসএফ থেকে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করলেন প্রায় ৭০০ জন নেতা, কর্মী-সমর্থক। হাড়োয়া বিধানসভা বিধায়ক হাজী নুরুল ইসলাম ও বারাসত দু নম্বর ব্লকের ব্লক সভাপতি শম্ভু ঘোষের হাত দিয়ে দলীয় পতাকা তুলে দেওয়া হল সিপিএম নেতা মহাম্মদ ইজরাইল সহ একাধিক নেতা-কর্মীদের হাতে। রবিবার প্রায় ৭০০ জন যোগদান করলেন তৃণমূল কংগ্রেসে। ফলে একদিকে সিপিএমের যেমন শক্তি ক্ষয় হল অন্যদিকে শাসকদের শক্তি বৃদ্ধি হল একদা শাসনের সিপিএমের শক্ত ঘাঁটিতে।
অন্যদিকে, সিপিআইএম নেতৃত্বের দাবী, সিপিআইএমের খড়িবাড়ি এলাকায় ৭০০ কর্মী সমর্থকই নেই। তৃণমূলের বিক্ষুব্ধ, দুর্নীতিগ্রস্ত নেতারা মানুষকে ভয় দেখানোর জন্য, সন্ত্রাস করানোর জন্য তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করালেন এবং প্রচার পাওয়ারও একটা উদ্দেশ্য তৃণমূল নেতাদের রয়েছে বলে দাবী করেন সিপিএম নেতা।
এদিনের এই যোগদান প্রসঙ্গে হাড়োয়ার বিধায়ক হাজী নুরুল ইসলাম বলেন, 'খড়িবাড়িতে দীর্ঘদিন আমাদের সঙ্গে ছিলেন ইজরাইল। বিভিন্ন দলে ঘুরে এসে তিনি বুঝতে পেরেছেন, তার জন্য তৃণমূলই বেস্ট। তাই এদিন তাঁকে পুনরায় দলে যোগদান করানো হল এবং তার নেতৃত্বে অনেকেই এদিন তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন। আগামী পঞ্চায়েতে খড়িবাড়ি বিরোধী-শূণ্য হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।
এর পাশাপাশি, ভয় দেখিয়ে তৃণমূলে যোগদান করানোর বিরোধীদের অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'এটা সম্পূর্ণ বাজে কথা। ওরা নিজেরা শূণ্য এবং শূণ্যই থাকবে।'
যোগদানকারী মহম্মদ ইজরাইল জানান, দিদির উন্নয়নের ধারা দেখেই তৃণমূলে যোগদান। তিনি বলেন, 'বামফ্রন্ট করতাম। আজ বামফ্রন্ট ও আইএসএফের অনেক কর্মীও আমার সাথে আজ এখানে যোগদান করলেন।'
তাঁর অভিযোগ, কেন্দ্র বাংলার উন্নয়ন হতে দিতে চায় না বলেই টাকা আটকে রেখেছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বারাবার একশো দিনের টাকা দাবী করলেও সেই টাকা দেওয়া হচ্ছে না। দিদির লড়াইয়ে সাথ দেওয়ার জন্যই এই যোগদান বলে তিনি জানান।
অপরদিকে, বারাসত সিপিআইএম দক্ষিণ এক এরিয়া কমিটির সদস্য কুতুবউদ্দিন আহমেদ বলেন, 'নিজেদের লোককে জড়ো করেই বলছে সিপিএম থেকে এত লোক এসেছে।' তাঁর অভিযোগ, গত ১১ সাল থেকে ওখানে কোনও বুথে ভোট করতে পারেন না।' তৃণমূলকে নিশানা করে তিনি বলেন, 'সন্ত্রাস করে ভোট লুট করে ওরা জিতছে। সিপিএম ২০১১ সাল থেকে ওখানে এজেন্ট দিতে পারছে না।' তাঁর কথায়, '৭০০ কর্মী থাকলে তো আমরা এজেন্ট দিতে পারতাম।'
তবে, তিনি এও বলেন, 'সেখানে তাদের অনেক সমর্থক আছেন এবং আগামী পঞ্চায়েতে সমানে সমানে লড়াই হবে সংযুক্ত মোর্চার নেতৃত্বে।'
No comments:
Post a Comment