রাস্তার দাবীতে ঝাঁটা-জুতা-লাঠি হাতে বিক্ষোভ মহিলাদের - press card news

Breaking

Post Top Ad

Post Top Ad

Monday 10 April 2023

রাস্তার দাবীতে ঝাঁটা-জুতা-লাঠি হাতে বিক্ষোভ মহিলাদের


রাস্তার দাবীতে ঝাঁটা-জুতা-লাঠি হাতে বিক্ষোভ মহিলাদের। এমনকি আসন্ন পঞ্চায়েত ভোট বয়কটেরও হুঁশিয়ারি। এমনই চিত্র দেখা গেল মালদায়। ঘটনা ঘিরে শুরু রাজনৈতিক তরজা। 


স্বাধীনতার ৭৫ বছর পেরিয়ে গেলেও এখনও রাস্তা হয়নি গ্রামে। যোগাযোগ ব্যবস্থা প্রায় বিচ্ছিন্ন। রাস্তার দাবীতে স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রশাসন, ব্লক প্রশাসন, জেলা প্রশাসন ও জন প্রতিনিধিদের বহুবার বলা সত্ত্বেও, এখনও অব্দি রাস্তা হয়নি বলেই অভিযোগ। গ্রামের বাসিন্দারাই নিজেদের উদ্যোগে চাঁদা তুলে মাটি ফেলে রাস্তার কাজ করেছেন। প্রশাসন এবং জনপ্রতিনিধিদের ওপরে একরাশ খুব উগরে দিয়েছেন গ্রামবাসীরা। সোমবার হাতে লাঠি, জুতো ও ঝাঁটা নিয়ে বিক্ষোভ দেখান‌ তারা। ঘটনা পুরাতন মালদা ব্লকের সাহাপুর অঞ্চলের শান্তিপুর গ্রামে। 


গ্রামে ঢোকার কোনও রাস্তা নেই। পাশ দিয়ে মালদা সিঙ্গাবাদ স্টেশন যাওয়ার রেল লাইন চলে গেছে। পাশের জমিগুলো থেকেই একটু রাস্তা বার করে বাসিন্দারা নিজেরা চাঁদা তুলে মাটি ফেলে রাস্তার কাজ করেছেন গ্রামে ঢোকার জন্য।

     

গ্রামবাসীরা জানাচ্ছেন, গ্রামে অ্যাম্বুলেন্স থেকে শুরু করে চার চাকার গাড়ি ঢোকে না। কেউ অসুস্থ হলে বিশেষ করে গর্ভবতী মহিলারা অসুস্থ হয়ে গেলে তাদের খাটে করে কিছুটা পথ যাওয়ার পর তারপর গাড়িতে উঠিয়ে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হয়। রাস্তা নেই বলে এই গ্রামে কোনও মেয়ের বাবা বিয়ে দিতে চান না। গ্রামের ছাত্র-ছাত্রীদের স্কুলে যেতে অসুবিধায় পড়তে হয়। গরমের সময় যদিও বা রাস্তা দিয়ে চলাচল করা যায়, কিন্তু বর্ষার সময় জলমগ্ন হয়ে পড়ে রাস্তাটি। 


তাই গ্রামবাসীরা এবারে সবাই একসাথে জোট বেঁধেছেন। তারা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, পঞ্চায়েত ভোটে এলাকায় কোনও জনপ্রতিনিধি ভোট চাইতে আসলে তাহলে তারা ঝাঁটা, লাঠি দিয়ে তারা করবে। এইবারে ভোটও তারা দেবেন না। তাদের কথায়, 'আগে রাস্তা, তারপর ভোট।' 


আর এই রাস্তা নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানোতর।মালদহ বিধানসভা কেন্দ্রের বিজেপি বিধায়ক গোপালচন্দ্র সাহা, এই রাস্তার না হওয়ার বিষয়ে তৃণমূল পরিচালিত সাহাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতকে কাঠগড়ায় তুলেছেন। বিধায়ক জানান, শান্তিপুর এলাকার মানুষদের দীর্ঘদিনের দাবী ছিল রাস্তার। আজকে তাদের রাস্তা হয়নি বিষয়টি আমার জানা রয়েছে, গ্রামবাসীদের বিক্ষোভ দেখানো টাই স্বাভাবিক। বাংলা জুড়ে যা পরিস্থিতি চলছে, মালদহ বিধানসভার ক্ষেত্রেও একই। আজকে এই তৃণমূল সরকার বলছে পশ্চিমবঙ্গে নাকি তারা এগিয়ে, আমার প্রশ্ন তারা কোন দিকে এগিয়ে? বিধায়ক হিসেবে আমি শান্তিপুর এলাকার রাস্তার বিষয় নিয়ে বহুবার প্রশাসনকে জানিয়েছি, এমনকি বিধানসভাতেও আমি বিষয়টি ধরে তুলেছি, কিন্তু সেটা হয়নি।'


তিনি বলেন, 'আজকে কেন্দ্রীয় সরকারের প্রকল্পগুলির যে অর্থ পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে দেওয়া হচ্ছে, সেই অর্থে কোন কাজ হচ্ছে না। রাজ্যে দিশা কমিটির মিটিং হয় না। আসলে সব টাকাই কাটমানিতে যাচ্ছে।'


অন্যদিকে বিজেপি বিধায়কের বক্তব্যে পাল্টা দিয়েছেন তৃণমূলও। সাহাপুর অঞ্চলের তৃণমূলের প্রধান অনেক ঘোষ বলেন, 'শান্তিপুরের এলাকার মানুষের দীর্ঘদিনের দাবী, এই রাস্তার বিষয়টি আমার জানা রয়েছে। রাস্তার তৈরি করার বিষয়ে বাজেট ইতিমধ্যে হয়ে আছে। আশা করি পঞ্চায়েত ভোটের পর রাস্তার কাজ হয়ে যাবে।'


তিনি আরও বলেন, 'আজকে বিরোধীরা পঞ্চায়েতে কোন অর্থ মিটিংয়ে আসে না,পঞ্চায়েতের বাজেট পাস হচ্ছে না। আসলে বিরোধী পঞ্চায়েত সদস্যরা এলাকার মানুষের কোনও উন্নয়ন করতে চাইছে না। আসলে সেই টাকা গ্রামবাসীদের উন্নয়ন করতে গেলে তাদের টাকা দিতে হবে, গ্রামবাসীদের কাজ হোক চায় না। তাদের আগে টাকা দিতে হবে। সেই ক্ষেত্রেই তারা পঞ্চায়েতের উন্নয়নমূলক কাজের সব ক্ষেত্রেই বাধা দিচ্ছে। অর্থ বাজেট বিরোধী পঞ্চায়েত সদস্যরা আসে না। পঞ্চায়েতের অন্তর্গত ৫২ টি রাস্তার টেন্ডার প্রক্রিয়ার মধ্যেই রয়েছে। অর্থ বাজেট পাস হয়ে গেলেই কাজ শুরু।'

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad