কোচবিহার: শীতলকুচিতে পঞ্চায়েত সদস্য, তার স্বামী তৃণমূল নেতা ও মেয়েকে খুনের ঘটনায় লাগল রাজনৈতিক রং। এই ঘটনায় বিরোধীদের হাত রয়েছে বলে অভিযোগ কোচবিহার জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিকের। কোচবিহার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মৃত রুনা বর্মনের ময়নাতদন্তের সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন কোচবিহার জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিক ও অন্যান্য তৃণমূল কর্মীরা।
এদিন সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, 'ধৃত বিভূতিভূষণ রায়ের বাবা প্রাক্তন শিক্ষক। বিভূতিভূষণের বাবা-মায়ের বিবাহ বিচ্ছেদের পর তিনি মামার বাড়িতেই থাকতেন এবং তার দাদুর সাথে বিজেপির একটা যোগসাজেশ রয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। পাশাপাশি তিনি জানান, এই ধরনের ঘটনা এর আগে কোচবিহারে কোনও দিন ঘটেনি।
প্রেমের সম্পর্ক প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'শুধুমাত্র প্রেমের সম্পর্কের প্রেক্ষিতে এই এত বড় ক্রিমিনাল অফেন্স ঘটতে পারে না।' এর নেপথ্যে কেউ সাহস যুগিয়েছেন, বলেই দাবী করেন তিনি। কিন্তু বিজেপিকে কেন সন্দেহ? এই প্রসঙ্গে তৃণমূল নেতা বলেন, 'কারণ সামনেই পঞ্চায়েত নির্বাচন, ঐ সমস্ত এলাকাগুলো উত্তপ্ত হয়ে উঠছে ধীরে ধীরে। আর এই পরিবারের সঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে ওতঃপ্রোতভাবে যুক্ত এবং এই নেতৃত্বের মাধ্যমেই আমরা শীতলকুচি অঞ্চলটা জিতি, তাদের মেরে ফেলা হল।'
তিনি এও বলেন, 'কিছুদিন আগেও শীতলকুচিতে গিয়ে বিজেপির জেলা সভাপতি সহ বিধায়কেরা তাণ্ডব চালিয়ে এসেছে। কাজেই এই ব্যক্তি (খুনে অভিযুক্ত)বিজেপির সাপোর্ট ছাড়া এই এলাকায় কিছু করতে পারে বলে আমার মনে হয় না। '
এই খুনের প্রসঙ্গে শীতলকুচি বিধানসভার বিজেপির বিধায়ক বরেন বর্মন জানান, এই ঘটনার সাথে কোনও ভাবেই বিজেপির যোগসূত্র নেই। তৃণমূলের জেলা সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিক যে দোষারোপ করছে সেটা তদন্ত না করেই। পুরোপুরি তদন্ত করে তারপরেই বিষয়টি নিয়ে বললে ভালো হয়।
পাশাপাশি, তার অভিযোগ, দ্রুত হারে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব বাড়ছে, সেই কারণে আজকে বিমল বর্মনকে এভাবে চলে যেতে হল।
এদিকে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের অভিযোগ পুরোপুরি উড়িয়ে দিয়েছেন কোচবিহার জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিক।
উল্লেখ্য, শুক্রবার ভোর ৪.৪০ নাগাদ তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্য নীলিমা বর্মনের বাড়িতে ছুরি নিয়ে হামলা চালায় বিভূতিভূষণ বর্মন সহ কয়েকজন। ঘটনায় মৃত্যু হয় নীলিমা বর্মন সহ তাঁর স্বামী তথা তৃণমূল নেতা বিমল কুমার বর্মন ও মেয়ে রুনা বর্মনের। ঘটনা শীতলকুচি ব্লকের হাসপাতাল পাড়া এলাকার। পুলিশ সূত্রে খবর, প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে প্রেম ঘটিত কারণেই এই কাণ্ড। এমনকি, অভিযুক্ত বিভূতিভূষণও জানায়, এই বাড়ির ছোট মেয়ের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল, যার জেরেই এমন কাণ্ড ঘটিয়েছে সে। সেই ঘটনায় এবারে শুরু হল তৃণমূল-বিজেপির তরজা।
No comments:
Post a Comment