ছিয়ানব্বই ঘন্টারও বেশি সময় পার হয়ে গেছে, শনিবারও জঙ্গলমহল এলাকায় কুড়মি সমাজের আন্দোলন অব্যাহত রয়েছে। প্রায় ৯৬ ঘন্টা ধরে ট্রেন পরিষেবা ব্যাহত হয়েছে। দক্ষিণ পূর্ব রেলওয়ে ২২৫ টিরও বেশি লোকাল এবং এক্সপ্রেস ট্রেন বাতিল করেছে। দাবী মানা না হলে অনির্দিষ্টকালের জন্য আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে কুড়মি সমাজ। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন যাত্রীরা। শনিবার ভোররাতে পশ্চিম মেদিনীপুরের খেমাশুলিতে, রণপা সহ কুড়মি সম্প্রদায়ের লোকেরা একটি মিছিল করে রাজ্য সরকার ও কেন্দ্রীয় সরকারকে সতর্ক করে।
এসটি-তে জাত অন্তর্ভুক্তকরণ-সহ একাধিক দাবীতে জাতীয় সড়ক ও রেলপথ অবরোধ করে রেখেছে কুড়মি সম্প্রদায়ের মানুষ। একদিকে অবরোধ কর্মসূচি চলছে খড়গপুরের খেমাশুলিতে, অন্যদিকে পুরুলিয়ার কুস্তরে।
এই আন্দোলনের জেরে শনিবারও বহু দূরপাল্লার ট্রেন বাতিল করা হয়েছে। দক্ষিণ পূর্ব রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, শনিবার প্রাথমিকভাবে ৭২টি দূরপাল্লার ট্রেন বাতিল করা হয়েছে। অনেক ট্রেন অন্য রুটে চালানো হচ্ছে। ইতিমধ্যে অনেক ট্রেন স্টেশনে থামিয়ে দেওয়া হয়েছে। বিশাল আর্থিক ক্ষতির আশঙ্কা প্রকাশ করেছে রেল। রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, ভুবনেশ্বর-দিল্লী রাজধানী এক্সপ্রেস, লোকমান্য তিলক, শালিমার সহ বহু দূরপাল্লার ট্রেন বাতিল বা ডাইভার্ট করা হয়েছে। রেল ও রাস্তা অবরোধের কারণে গোটা জঙ্গলমহল থমকে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। শনিবার রেল অবরোধের চার দিন হয়ে গেল এবং পাঁচ দিন ধরে জাতীয় সড়ক অবরোধ চলছে। কুড়মি সমাজের সামাজিক সংগঠনগুলো আন্দোলন আরও তীব্র করার হুঁশিয়ারি দিয়েছে।
১ এপ্রিল থেকে জঙ্গলমহলে 'ঘাঘর ঘেরা' নামে অবরোধ কর্মসূচি শুরু হয়েছিল রাজ্য সরকারের কাছে CRI (সাংস্কৃতিক গবেষণা ইনস্টিটিউট) রিপোর্ট কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে পাঠানোর দাবীতে, উপজাতি কুড়মি উপজাতিকে তফসিলি উপজাতি হিসাবে তালিকাভুক্ত করা, সারনাকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। সংবিধানের অষ্টম তফসিলে কুড়মালি ভাষা অন্তর্ভুক্তির দাবীতে ধর্মাবলম্বী এবং সাধারণ মানুষ এতে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। জানিয়ে রাখি, এর আগেও কুড়মি সম্প্রদায় পিকেটিং ও বিক্ষোভ শুরু করলেও রাজ্য সরকারের আশ্বাসে তা প্রত্যাহার করে নেয়।
No comments:
Post a Comment