বিধান চন্দ্র রায়ের যে কথায় ওষুধ খেতে রাজি হয়েছিলেন গান্ধীজি - press card news

Breaking

Post Top Ad

Post Top Ad

Wednesday 28 June 2023

বিধান চন্দ্র রায়ের যে কথায় ওষুধ খেতে রাজি হয়েছিলেন গান্ধীজি


 বিধান চন্দ্র রায়ের যে কথায় ওষুধ খেতে রাজি হয়েছিলেন গান্ধীজি



নিজস্ব প্রতিবেদন, ২৮ জুন, কলকাতা: ডঃ বিধানচন্দ্র রায় একজন মহান চিকিৎসক ছিলেন। ডঃ বিধানচন্দ্র রায়ের স্মৃতির সম্মানে প্রতি বছর ১লা জুলাই জাতীয় চিকিৎসক দিবস পালিত হয়। তিনি পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীও ছিলেন। এটি একটি অদ্ভুত কাকতালীয় যে, ১ জুলাই ডাঃ বিধান চন্দ্র রায়ের জন্ম তারিখের পাশাপাশি এটাই তাঁর মৃত্যুবার্ষিকীও। আর দু'দিন পরেই ১ লা জুলাই, চিকিৎসক দিবস। সেই উপলক্ষে জেনে নেওয়া যাক মহাত্মা গান্ধী ও ডঃ বিধান চন্দ্র রায়ের কথোপকথনের এক কাহিনী। 


১৯৩৩ সালে, মহাত্মা গান্ধী আগা খান প্রাসাদে বন্দী ছিলেন। একটানা অনশন করছিলেন তিনি। এদিকে তাঁর স্বাস্থ্যের অবনতি হতে থাকে। গান্ধীজি স্বদেশী ছাড়া অন্য কোনও ওষুধ খেতে চাননি। আর বিধান চন্দ্র রায় ছিলেন অ্যালোপ্যাথি চিকিৎসক। সেই সময় তিনি চিকিৎসা দিতে গেলে গান্ধীজি তাঁকে বলেন, 'আমি আপনার ওষুধ কেন খাব। আপনি কি আমার ৪০ কোটি দেশবাসীকে বিনামূল্যে চিকিৎসা দেন?'


বিধান চন্দ্র রায় হেসে বলেন, তিনি এখানে মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধীকে সারানোর জন্য আসেননি, বরং চল্লিশ কোটি মানুষের নেতাকে সুস্থ করতে এসেছেন। তিনি বলেন, "আমি মনে করি তিনি মারা গেলে ৪০ কোটি মানুষ মরবে আর বেঁচে থাকলে ৪০ কোটি মানুষ বাঁচবে।" তাঁর কথা গান্ধীজিকেও অবাক করে। তিনি বলেন, ঠিক আছে, আপনি জিতলেন। আপনার যে ওষুধটি ঠিক মনে হয় দিন, আমি সেটাই খাব। কিন্তু আমি আশ্চর্য হলাম কেন আপনি মেডিসিনের পরিবর্তে আইন নিয়ে পড়াশোনা করেননি। আপনার খুঁটিনাটি ধরার খুব সুন্দর দক্ষতা আছে। ডাঃ রায় উত্তর দেন, 'ঈশ্বর তাঁকে ডাক্তার বানিয়েছেন কারণ তিনি জানতেন যে, একদিন তিনি বাপুর চিকিৎসা করবেন।'


ডাঃ বিধানচন্দ্র রায় একজন মহান ডাক্তার ছিলেন, যিনি তাঁর জীবনে লক্ষ লক্ষ রোগীর চিকিৎসা করেছিলেন এবং তাদের জীবন রক্ষা করেছিলেন। প্রতি বছর ১লা জুলাই জাতীয় চিকিৎসা দিবস পালিত হয়। মহান চিকিৎসক ডঃ বিধানচন্দ্র রায়ের স্মৃতির সম্মানে দিনটি পালিত হয়।  


তিনি গান্ধীজির ব্যক্তিগত চিকিৎসকও ছিলেন। তিনি একজন মহান মুক্তিযোদ্ধাও ছিলেন। তিনি একজন দূরদর্শী রাজনীতিবিদ ও মুখ্যমন্ত্রীও ছিলেন এবং কখনও বিয়ে করেননি। তিনি ছিলেন চিকিৎসাবিদ্যার জাদুকর। শুধু দেখেই রোগীদের রোগের কথা বলে দিতেন। তিনি তার পুরো জীবন অসুস্থ মানুষের চিকিৎসার জন্য উৎসর্গ করেছিলেন এবং যখন তিনি রাজনীতিতে প্রবেশ করেন, তখন তিনি প্রশাসক হিসেবে স্বাস্থ্য অবকাঠামোর উন্নয়নে অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ করেন।


 মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে তিনি দ্রুত বাংলায় স্বাস্থ্য পরিকাঠামো উন্নত করেন। যাদবপুর টিবি হাসপাতাল, চিত্তরঞ্জন সেবা সদন, কমলা নেহেরু মেমোরিয়াল হাসপাতাল ভিক্টোরিয়া ইনস্টিটিউশন (কলেজ) এবং চিত্তরঞ্জন ক্যান্সার হাসপাতাল তাঁরই উপহার। তিনিই প্রথম ডাক্তার যিনি লন্ডনে একই সাথে এমআরসিপি এবং এফআরসিএস করেছিলেন। ইন্ডিয়ান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন প্রতিষ্ঠায়ও তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad