সাতসকালে উদ্ধার তাজা বোমা! এলাকায় আতঙ্ক - press card news

Breaking

Post Top Ad

Post Top Ad

Wednesday 18 October 2023

সাতসকালে উদ্ধার তাজা বোমা! এলাকায় আতঙ্ক

 


সাতসকালে উদ্ধার তাজা বোমা! এলাকায় আতঙ্ক



নিজস্ব সংবাদদাতা, মালদা, ১৮ অক্টোবর: সাত সকালে পরিত্যক্ত ব্যাগ থেকে উদ্ধার দুটি তাজা বোমা, রাস্তায় পড়ে থাকা নতুন ব্যাগ ভেবে নিতে গিয়ে নজরে আসে শিশুর, জল ঢেলে বোম নিষ্ক্রিয় করার চেষ্টা ভিলেজ পুলিশের, আতঙ্কিত এলাকাবাসী, ফের প্রশ্নের মুখে পুলিশের ভূমিকা। ঘটনা মালদার হরিশ্চন্দ্রপুর থানার ঝিকোডাঙ্গা গ্রামে। 


পুজোর প্রাক্কালে সাতসকালে এলাকার আমবাগান এবং ধান ক্ষেতের মাঝের রাস্তায় পরিত্যাক্ত ব্যাগ থেকে উদ্ধার দুটি তাজা বোমা। গ্রামেরই এক শিশু নতুন ব্যাগ ভেবে নিতে গেলে প্রথমে নজরে পড়ে ব্যাগের ভিতর একটি ছুরি। ছুরি দেখেই ভয়ে ব্যাগ রেখে দেয় ওই শিশু। পরে গ্রামবাসীর নজরে আসে ব্যাগের ভেতরে দুটি বোমা। খবর দেওয়া হয় পুলিশকে। কিন্তু পুলিশ ঘটনাস্থলে আসতে দেরি করে বলে অভিযোগ। বোমা দুটি রাস্তার মাঝখানে রেখে জল ঢেলে নিষ্ক্রিয় করার চেষ্টা করে ভিলেজ পুলিশ। কিন্তু কোনও প্রশিক্ষণ ছাড়া কীভাবে বোমা নিষ্ক্রিয় করার চেষ্টা করল ভিলেজ পুলিশ, প্রশ্ন উঠছে। 


২০০ মিটার দূরেই জনবসতি। যে কোনও সময় ঘটে যেতে পারত বড় বিপদ। বুধবার সকালে এই ঘটনায় ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়েছে মালদার হরিশ্চন্দ্রপুর থানার অন্তর্গত ঝিকোডাঙা গ্রামে। ফের হরিশ্চন্দ্রপুর থানা এলাকায় প্রশ্নের মুখে আইন-শৃঙ্খলা এবং নিরাপত্তা। 


স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বুধবার সকালে গ্রামেরই এক আম বাগান এবং ধানক্ষেতের মাঝে একটি নতুন ব্যাগ পড়ে ছিল। স্থানীয় এক শিশু নতুন ব্যাগ দেখে সেটি নিতে যায়। কিন্তু দেখে ব্যাগের ভেতরে ধানের উচ্ছিষ্ট অংশ রয়েছে এবং একটি চাকু। তা দেখেই প্রাতঃভ্রমণে যাওয়া স্থানীয়দের ঘটনাটি বলে ওই শিশু। স্থানীয়রা এসে বুঝতে পারেন ব্যাগের ভেতরে দুটি বোমা রয়েছে। খবর দেওয়া হয় হরিশ্চন্দ্রপুর থানার পুলিশকে। কিন্তু ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌঁছাতে দেরি করলে গ্রামের কর্তব্যরত ভিলেজ পুলিশ মাঝ রাস্তায় দুটি বোমা রেখে জল ঢেলে নিষ্ক্রিয় করার চেষ্টা করে। কিন্তু বোম নিষ্ক্রিয় করার প্রশিক্ষণ রয়েছে বোম্ব স্কোয়াডের। সে ক্ষেত্রে ওই ভিলেজ পুলিশ কীভাবে ঝুঁকি নিল তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। যদিও পরবর্তীতে পুলিশ এসে পৌঁছায়। 



এদিকে ঘটনাস্থল থেকে মাত্র ২০০ মিটার দূরেই ঘন জনবসতি। যে কোনও সময় ঘটে যেতে পারতো বড় ধরনের বিপদ। এদিকে সাত সকালে এলাকায় এই ভাবে বোমা উদ্ধার হওয়াই আতঙ্কিত এলাকাবাসী। কে বা কারা স্থানে ওই ব্যাগটি ফেলে গেল তা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। 


স্থানীয়রা জানাচ্ছেন, আগে তাদের গ্রামে কখনও বোমা উদ্ধার হয়নি। দুষ্কৃতীদের আনাগোনা বাড়ছে এমনই অভিযোগ স্থানীয়দের। সমগ্র ঘটনা সামনে আসতেই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। হরিশ্চন্দ্রপুরের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির ব্যাপক অবনতি হয়েছে। পুজোর মুখে বাড়ছে দুষ্কৃতীদের দৌরাত্ম্য। কুশিদায় অ্যাসিড দগ্ধ মৃতদেহ উদ্ধার হওয়ার পরে এবার ঝিকোডাঙায় বোম। পুলিশ মানুষকে নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ, সুর চড়িয়েছে বিরোধীরা। এই সব বিরোধীদেরও চক্রান্ত হতে পারে পাল্টা তৃণমূল। শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা।


স্থানীয় বাসিন্দা মোঃ কাবিল ইসলাম বলেন, 'এর আগে এই গ্রামের মানুষ কখনও বোম দেখেনি। মানুষ আতঙ্কিত হয়ে পড়ছে। সমাজে অশান্তি বাড়বে।আমি প্রাতঃভ্রমণে বেরিয়ে ঘটনাটা জানতে পারি। যে বাচ্চাটা প্রথম ব্যাগটা দেখেছিল, তখন বোম বিস্ফোরণ হয়ে গেলে বড় বিপদ হতেই পারতো।'


আরেক স্থানীয় হামিদুল ইসলামের বক্তব্য, 'কারা এখানে এই ব্যাগ ফেলে গেছে বলতে পারছি না। কিন্তু তাদের কোনও একটা উদ্দেশ্য ছিল। পুলিশকে খোঁজ দেওয়া হয়েছে। এখনও পর্যন্ত সিভিক এসেছে। প্রথম একজন বাচ্চা ওই ব্যাগটা দেখেছিল। দুটি বোম রয়েছে।'


বিজেপি নেতা দেবব্রত পালের অভিযোগ, 'প্রথমে কুশিদায় মহিলার অ্যাসিড দগ্ধ মৃতদেহ উদ্ধার। এবার এখানে বোম উদ্ধার। হরিশ্চন্দ্রপুরবাসী পুজোর মুখে কোনও ভাবেই সুরক্ষিত বোধ করতে পারছে না। পুলিশ প্রশাসন মানুষকে নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়েছে।'


পাল্টা তৃণমূল নেতা সাহেব দাসের দাবী, 'অপরাধীদের কোনও রাজনৈতিক রঙ হয় না। পুলিশ যথেষ্ট সক্রিয় রয়েছে। কিন্তু বিরোধীরা সব বিষয়ে যেভাবে রাজনীতি করছে। তাতে সন্দেহ হচ্ছে এসব ওদের না চক্রান্ত হয়।'

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad