আসন বণ্টন নিয়ে সঞ্জয় রাউতের বক্তব্যে ক্ষুব্ধ কংগ্রেস, ড্যামেজ কন্ট্রোলে উদ্ধব

 

আসন বণ্টন নিয়ে সঞ্জয় রাউতের বক্তব্যে ক্ষুব্ধ কংগ্রেস, ড্যামেজ কন্ট্রোলে উদ্ধব

প্রেসকার্ড নিউজ ন্যাশনাল ডেস্ক, ৩১ ডিসেম্বর: ২০২৪ সালের নির্বাচন কংগ্রেসের জন্য খুব কঠিন হতে চলেছে। এর কারণ হল অনেক রাজ্যে দলটি শক্তিশালী নয় এবং নির্বাচনে জয়ী হওয়ার জন্য আঞ্চলিক দলগুলির প্রয়োজন৷ তবে আঞ্চলিক দলগুলো যতটা সম্ভব আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চায়। এর সর্বশেষ উদাহরণ মহারাষ্ট্রে দেখা গেছে, যেখানে শিবসেনা (ইউবিটি) সাংসদ সঞ্জয় রাউত বলেছেন যে, তার দল মহারাষ্ট্রের ৪৮ টি আসনের মধ্যে ২৩টিতে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চায়।

সঞ্জয় রাউতের এই বক্তব্যে ক্ষুব্ধ কংগ্রেস। কংগ্রেসের বরিষ্ঠ নেতা সঞ্জয় নিরুপম এও বলেছেন, শিবসেনা (ইউবিটি) যে দলগুলির সাথে জোট করেছে সে সম্পর্কে রাউতকে কোনও মন্তব্য করা উচিৎ নয়। পাশাপাশি, সঞ্জয় রাউতের বক্তব্যের পরে, শিবসেনা (ইউবিটি) প্রধান উদ্ধব ঠাকরে ড্যামেজ কন্ট্রোলে নামেন এবং রাউতের বক্তব্য থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে নেন। এমন পরিস্থিতিতে চলুন জেনে নেওয়া যাক কীভাবে এই বিতর্কের সূত্রপাত।

শিবসেনা (ইউবিটি) নেতা সঞ্জয় রাউত শুক্রবার (২৯ ডিসেম্বর) বলেছেন, 'এটি মহারাষ্ট্র এবং শিবসেনা এখানে সবচেয়ে বড় দল। কংগ্রেস একটি জাতীয় দল। উদ্ধব ঠাকরে রাহুল গান্ধী, সোনিয়া গান্ধী এবং মল্লিকার্জুন খাড়গে সহ কংগ্রেসের সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী নেতাদের সাথে আলোচনা করছেন। আমরা সবসময় বলেছি যে, শিবসেনা সবসময় লোকসভা নির্বাচনে ২৩টি আসনে লড়ছে।

তিনি বলেন, 'ইন্ডিয়া জোটের সঙ্গে বৈঠকে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে আমরা যে আসনগুলো জিতেছি সেগুলো নিয়ে আলোচনা করা হবে। কংগ্রেস মহারাষ্ট্রে একটি আসনও জিততে পারেনি, তাই তাদের শূন্য আসন থেকে শুরু করতে হবে। কিন্তু কংগ্রেস এমভিএ-তে আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ মিত্র।' মহারাষ্ট্রে মহা বিকাশ আঘাড়ি (এমভিএ) জোট রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে কংগ্রেস, শিবসেনা এবং এনসিপি।

কংগ্রেস নেতা সঞ্জয় নিরুপম সঞ্জয় রাউতকে নিশানা করে বলেন, 'উদ্ধব সেনার সাথে জোট দলগুলি সম্পর্কে তার বিবৃতি দেওয়া উচিৎ নয়। সঞ্জয় নিরুপম বলেন, ' দৈনিক সংবাদ সম্মেলন ও সামনায় লেখা আর্টিকেলের সাথে শিবসেনা (ইউবিটি) বিজেপির সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেছে, আপনি কি কংগ্রেসের সঙ্গেও একই কাজ করতে চান? রাউতের সংবাদ সম্মেলন ও সামনায় জোটের শরিক দলগুলোর বিরুদ্ধে লেখালেখি বন্ধ করা উচিৎ।'

মুম্বাইয়ে সংবাদ সম্মেলনে করে কংগ্রেস নেতা বলেন, 'কংগ্রেস দল ছাড়া শিবসেনা (ইউবিটি) লোকসভায় একটি আসনও জিততে পারবে না।' নিরুপম এও বলেছেন যে, সঞ্জয় রাউত কখনও নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেননি, তাই তার অভিজ্ঞতা নেই।' আসন বণ্টন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'আসন বণ্টন এখনও শেষ হয়নি। এই নিয়ে টিভিতে আলোচনা করা উচিৎ নয়। তিন দলের নেতাদের একসঙ্গে বসে আলোচনা করে যোগ্যতার ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।'

সঞ্জয় রাউতের বক্তব্যের পর শিবসেনা (ইউবিটি) বড় সমস্যায় পড়েছে। বিজেপির সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করার পরে, এমভিএ রাজ্যে তার একমাত্র মিত্র। এমতাবস্থায় তার বিরুদ্ধে বক্তব্য দিলে ক্ষতি হতে পারে। এই কারণেই উদ্ধব ঠাকরে বলেছেন, 'এমভিএ-এর ক্ষতি হবে এমন কিছু আমি করব না। তাই আমি যা কিছু বলা লোকেদের ওপর ধ্যান দেব না। যতক্ষণ কংগ্রেস আসন ভাগাভাগি নিয়ে কথা না বলছে, ততক্ষণ আমি বা আমার পক্ষে কেউ কিছু বলবে না।'

আসন ভাগাভাগি প্রসঙ্গে উদ্ধব বলেন, 'শিবসেনা (ইউবিটি) এবং এনসিপি (শরদ পাওয়ার দল) মধ্যে আলোচনা ভালো হয়েছে।' তিনি আরও বলেন যে, 'এমভিএ প্রকাশ আম্বেদকরের নেতৃত্বাধীন বঞ্চিত বহুজন আঘাড়ি (ভিবিএ)-এর সাথে একটি যৌথ বৈঠক করার চেষ্টা করছে। শিবসেনা (ইউবিটি) এবং ভিবিএ ইতিমধ্যেই জোটে রয়েছে। তবে ভিবিএ মহাবিকাশ আঘাড়ির অংশ নয় এবং এটিকে জোটে অন্তর্ভুক্ত করার কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।'

প্রসঙ্গত, মহারাষ্ট্রে ৪৮টি আসনের মধ্যে ১৮টি আসনে জয় পেয়েছে শিবসেনা। শিবসেনা (ইউবিটি) বিজেপির সাথে জোটবদ্ধ হয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছিল, যার অধীনে তারা ২৩টি আসনে প্রার্থী দিয়েছে। বিজেপি ২৫টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিল, তারপরে তারা ২৩টি আসনে জয়ী হয়েছিল। মাত্র একটি আসনে জয়ী হয়েছে কংগ্রেস। এনসিপি (অবিভক্ত) জিতেছে চারটি আসনে।