প্রেমিকার হাত ধরে রাস্তায় হাঁটলেই শাস্তি এই দেশে! - press card news

Breaking

Post Top Ad

Post Top Ad

Saturday 3 February 2024

প্রেমিকার হাত ধরে রাস্তায় হাঁটলেই শাস্তি এই দেশে!

 


প্রেমিকার হাত ধরে রাস্তায় হাঁটলেই শাস্তি এই দেশে! 



প্রেসকার্ড নিউজ ওয়ার্ল্ড ডেস্ক, ০৩ ফেব্রুয়ারি: বৃষ্টি ভেজা দিনে‌ প্রেমিকার হাতে হাত রেখে হাঁটা - এ যেন স্বর্গসুখ। কিন্তু জানেন কী এমন একটি দেশ রয়েছে, যেখানে আপনি আপনার প্রেমিকার হাত ধরতে পারবেন না। একবিংশ শতাব্দীতে এসে এমন কথা বিশ্বাস করা সত্যিই কঠিন তবে এমনই এক অদ্ভুত আইন আছে এশিয়ারই একটি দেশে, বর্তমানে যেটি বিশ্বের উদ্ভট দেশের মধ্যে অন্যতম। এমনকি গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডেও এর নাম উঠেছে। তবে এই অদ্ভুত আইনের কারণে নয়। যাই হোক, শুধু প্রেমিকার হাত ধরে হাঁটাই নিষেধ নয়, কালো রঙের গাড়ি নিয়ে রাস্তায় বের হলেও এখানে রক্ষে নেই। বিপুল পরিমাণে জরিমানা দিতে হয়, সঙ্গে উপরিপাওনা হাজতবাস।


এছাড়াও এই দেশে সোনার দাঁত অপেরা, স্প্যানডেক্সও নিষিদ্ধ। স্প্যানডেক্স হল একটি সিন্থেটিক ফাইবার বা ফেব্রিক, যা পলিমিউরথিন যুক্ত পলিমার থেকে তৈরি, সেটি ব্যবহৃত হয় ইলাস্টিক পোশাক তৈরিতে। আজব এই দেশটির নাম হল তুর্কমেনিস্তান। সহজে কেউ এই দেশে যেতেও পারে না, তাই বাইরের মানুষের কাছে আজও এই দেশ বেশ দুর্বোধ্য। 


তুর্কমেনিস্তান এক সময় সোভিয়েত রাশিয়ার অন্তর্গত ছিল। ১৯৯১ সালে রাশিয়া ভেঙে যাওয়ার পর স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে কাস্পিয়ান সাগরের তীরের এই দেশ। এর রাজধানী হল আশগাবাত। সেখানকার অধিকাংশ বাড়ির সাদা মার্বেল পাথরের তৈরি তাই এই তকমা পেয়েছে আশগাবাদত। এমনকি পরিত্যক্ত ঘরবাড়িও সাদা মার্বেল পাথরের সাজানো। বিশ্বের সেরা সাজানো-গোছানো শহর হিসেবে এর খ্যাতি রয়েছে। 


এই দেশের আইন অনুযায়ী রাজধানীর সাদা মার্বেল পাথরের তৈরি বাড়িতে কাউকে থাকতে দেওয়া হয় না। সেগুলো যে সরকারি বা বেসরকারি অফিস হিসাবে ব্যবহৃত হচ্ছে, এমনটা নয়। শহরে অতিরিক্ত জনসমাগম হলে দূষণ বাড়বে, সেই যুক্তিতে বাড়িতে বসবাস বা অফিস খোলার অনুমতি প্রশাসন বাতিল করেছে। আর তাই এই শহরকে দেখে মনে হবে হয়তো পরিত্যক্ত কোনও একটি শহর। তাই একে 'মৃতদের শহর'-ও বলা হয়। এখানে লোকজন দেখা একেবারেই অসম্ভব।


সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য আশগাবাতে ঝরনার সবচেয়ে বড় কমপ্লেক্স রয়েছে। এছাড়া বিশ্বের সবচেয়ে লম্বা পতাকা দন্ড রয়েছে এই শহরে। তারপরও খুব কম পর্যটকই এই দেশটিতে বেড়াতে আসেন। এর পেছনে রয়েছে এদেশের কঠোর ভিসা নীতি। শুধু একটি লাইসেন্স যুক্ত গাইডেড ট্যুর দিয়ে যেতে পারবেন এদেশে। প্রতিবছর ৭,০০০- এরও কম ভ্রমণকারীরা এখানে যান।


সোভিয়েত রাশিয়া ভেঙে স্বাধীন তুর্কমেনিস্তান তৈরির পর সে দেশের প্রথম প্রেসিডেন্ট হন সাপারমুরাত নিয়াজভ। দেশ থেকে রুশ প্রভাব সম্পূর্ণ মুছে ফেলতে একাধিক পদক্ষেপ করেন তিনি, যার মধ্যে অন্যতম ছিল রুশ নামগুলো মুছে ফেলা। ক্ষমতায় এসেই রাজধানী আশগাবাতে সোনায় মোড়া নিজের মূর্তি তৈরি করেন প্রেসিডেন্ট নিয়াজভ, যার জন্য কোটি কোটি টাকা খরচ হয়েছিল এবং এটি প্রভাব ফেলেছিল তুর্কমেনিস্তানের অর্থনীতিতে। তবে বিষয়টি মোটেও গ্রাহ্য করেনি তৎকালীন প্রেসিডেন্ট। 


বর্তমানে সেরদার বেরদিমুহাম্মদ তুর্কমেনিস্তানের প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেন। ক্ষমতায় এসেই নারী পুরুষের প্রকাশ্যে মেলামেশা বন্ধ করতে করা আইন পাস করেন তিনি। এরপর থেকেই প্রকাশ্যে কোন নারীর হাত ধরে মধ্য এশিয়ার এই দেশে ঘোরা নিষিদ্ধ। এমনকি পুরুষদের লম্বা চুল বা দাড়ি রাখাও নিষিদ্ধ। এছাড়াও তিনি নিষিদ্ধ করেছেন অপেরা, শহর থেকে তাড়িয়ে দিয়েছেন কুকুরকে এবং বছরের দিন ও মাসের নাম পরিবর্তন করেছেন তার পরিবারের সদস্যদের নামে। 


বেরদিমুহাম্মদের বাবাও ছিলেন তুর্কমেনিস্তানের প্রেসিডেন্ট। তিনি কালো রং একদম সহ্য করতে পারতেন না। ফলে রাস্তায় কালো রংয়ের গাড়ি চলাচল বন্ধ করতে তিনি নতুন আইন পাশ করেন। সব কালো রঙের গাড়ি রাতারাতি বাতিল হওয়ার বেজায় বিপাকে পড়েন গাড়ির মালিকরা। বিপুল টাকা খরচ করে গাড়ির রং বদলাতে হয় তাদের।

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad