ছুঁলেই মৃত্যু! জানেন কার সেই বন্দি নোটবুক?
প্রেসকার্ড নিউজ ওয়ার্ল্ড ডেস্ক, ০১ এপ্রিল: পৃথিবীতে এমন একটি নোটবুক আছে যেটিকে কেউ স্পর্শ করলে তাৎক্ষণিক মৃত্যু হতে পারে। নিরাপত্তার কারণে, এই নোটবুকটি একটি তেজস্ক্রিয় সীসা বাক্সে রাখা হয়েছে এবং কাউকে এর কাছাকাছি যেতে দেওয়া হচ্ছে না। এই নোটবুকটি বিখ্যাত বিজ্ঞানী মেরি কুরির।
মেরি কুরি এবং তাঁর স্বামী পিয়েরে কুরি ১৮৯৮ সালে দুটি নতুন তেজস্ক্রিয় পদার্থ আবিষ্কার করেছিলেন। এই উপাদানগুলি ছিল রেডিয়াম এবং পোলোনিয়াম। তাঁদের আবিষ্কার সারা বিশ্বের বিজ্ঞানীরা প্রশংসা করেন এবং এটি চিকিৎসা ক্ষেত্রে বিপ্লব ঘটায়। এই আবিষ্কারের জন্য, কুরি দম্পতি ১৯০৩ সালে পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরষ্কার লাভ করেন।
এই পুরষ্কারের মাধ্যমে, মেরি কুরি নোবেল জয়ী প্রথম নারী বিজ্ঞানী হন। দুর্ভাগ্যবশত, মারি কুরির স্বামী পিয়েরে কুরি তাঁর আগে মারা যান। তা সত্ত্বেও, মেরি তাঁর কাজ চালিয়ে যান। তিনি পদার্থবিদ্যার প্রথম মহিলা অধ্যাপক হন এবং প্যারিস বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা শুরু করেন। শিক্ষকতার পাশাপাশি তিনি তেজস্ক্রিয়তা নিয়ে কাজ চালিয়ে যান। ১৯১১ সালে, তিনি রেডিয়াম বিশুদ্ধকরণ (আইসোলেশন অফ পিওর রেডিয়াম) জন্য রসায়নে নোবেল পুরষ্কার লাভ করেন।
এর মাধ্যমে, মেরি কুরি একমাত্র ব্যক্তি যিনি বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে দুটি নোবেল পুরষ্কার জিতেছেন। মজার ব্যাপার হল, মেরি কুরির দুই মেয়েও পরে নোবেল পুরষ্কার পেয়েছিলেন। বড় মেয়ে আইরিন ১৯৩৫ সালে রসায়নে নোবেল পুরষ্কার পেয়েছিলেন, আর ছোট মেয়ে ইভ ১৯৬৫ সালে নোবেল শান্তি পুরষ্কার পেয়েছিলেন।
সায়েন্স ফ্যাক্টস অনুসারে, সে সময় মানুষের তেজঃস্ক্রিয় পদার্থ সম্পর্কে তেমন জ্ঞান ছিল না। মানুষ জানত না যে বিকিরণ বিপজ্জনক এবং প্রাণ কেড়ে নিতে পারে। মেরি কুরি নিজে প্রায়ই তাঁর পকেটে তাঁর ল্যাবের চারপাশে তেজঃস্ক্রিয় পদার্থ বহন করতেন। ১৯৩৪ সালে যখন মেরি কুরি মারা যান, তখন তাঁর শরীরে এত বেশি বিকিরণ ছিল যে তাঁর দেহকে একটি সীসা লাইনের কফিনে আবদ্ধ রাখতে হয়েছিল।
মেরি কুরির ব্যবহৃত সমস্ত জিনিস যেমন কলম, কাগজ, ওষুধ ইত্যাদি এখনও তেজঃস্ক্রিয়। মেরির নোটবুকে সবচেয়ে বেশি বিকিরণ রয়েছে। এই নোটবুকটি বর্তমানে ফ্রান্সের ন্যাশনাল লাইব্রেরিতে অত্যন্ত নিরাপদে রাখা হয়েছে।
No comments:
Post a Comment