আত্মার ছায়া, ১০৮ টি ছাগলের বলি! মাথাব্যথা তাড়াতে ১৫ লক্ষ খোয়ালেন যুবক
প্রেসকার্ড নিউজ ন্যাশনাল ডেস্ক, ০১ এপ্রিল: দেশে ক্রমাগত বাড়ছে সাইবার জালিয়াতির ঘটনা। প্রতারকরা মানুষের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিতে নিত্যনতুন পন্থা অবলম্বন করছে। যদিও, লোকেরাও সতর্কতা অবলম্বন করে যাতে তারা এই প্রতারকদের শিকার না হয়। কিন্তু তারপরও, কোনও না কোনও ভাবে, এই প্রতারকরা মানুষকে প্রলুব্ধ করে এবং তাদের লুটে নেয়। এমনই একটি ঘটনা ঘটেছে গুজরাটের সুরাটের। এখানে উজ্জয়িনীর এক সার্ভিস এক্সিকিউটিভকে লক্ষাধিক টাকা প্রতারিত করেছে এক তান্ত্রিক।
জানা গেছে, ঘটনাটি সুরাটের ভাটপোর গ্রামের। এখানে ৩৪ বছর বয়সী রাজেশ নারান পারমার টয়োটা কোম্পানিতে সার্ভিস এক্সিকিউটিভ হিসেবে কাজ করেন। বেশ কিছুদিন ধরেই মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন তিনি। টেনশনের কারণে তিনি প্রায়ই মাথাব্যথায় ভোগেন। এই কারণে, তিনি ২০২২ সালে তার আগের চাকরিটিও হারান।
তবে নতুন চাকরি পাওয়ার পর থেকে তিনি দুঃস্বপ্ন দেখতে শুরু করে। তিনি এর থেকে পরিত্রাণ পেতে চেয়েছিলেন। তাই তিনি অনেক চিকিৎসকের পরামর্শ নেন। কিন্তু তাতেও কোনও ফল হয়নি। তারপর একদিন ফেসবুকে এক তান্ত্রিকের আইডি দেখেন। তাতে লেখা ছিল আমি তান্ত্রিক শক্তি দিয়ে সব সমস্যার সমাধান করতে পারি।
রাজেশ তান্ত্রিকের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি তার নাম মনীশ কুমার বিশ্বনাথ বলেন। বলেন, তিনি তান্ত্রিক জ্ঞান জানেন। রাজেশ তাকে তাঁর সমস্যার কথা বললে, মনীশ বলেন যে তার বাড়িতে আত্মাদের বাস। এ জন্য বিশেষ পূজা ও ৩টি ছাগল বলি দিতে হবে, যার দাম পড়বে ১ লক্ষ ২৬ হাজার টাকা।
রাজেশ তান্ত্রিকের কথায় মুগ্ধ হয়ে তাকে টাকা দিয়ে দেয়। তারপরও সমস্যা কাটেনি তাই রাজেশ আবার তান্ত্রিক মনীশের সাথে যোগাযোগ করেন; বলেন যে, 'আমার মাথাব্যথা এখনও দূর হয়নি এবং আমার দুঃস্বপ্ন দেখা বন্ধ হয়নি।' মনীশ বলেন যে, 'আমি বাকি আত্মাদের তাড়িয়ে দিয়েছি, কিন্তু তিনটি জেদি আত্মা বের হচ্ছে না। এজন্য ১০৮টি ছাগল বলি দিতে হবে। আবারও রাজেশ তার কথায় প্রভাবিত হয়। তিনি তার বোন এবং পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের অ্যাকাউন্ট থেকে মনীশের অ্যাকাউন্টে আরও টাকা পাঠায়। মণীশের অ্যাকাউন্টে মোট ১৫ লক্ষ ৫১ হাজার টাকা পাঠানো হয়।
মনীশ আবার কয়েকদিন পর বলেন, 'তোমার কাজ হয়ে গেছে। আত্মারা চলে গেছে।' কিন্তু রাজেশের কষ্ট তখনও শেষ হয়নি। তিনি আবার তান্ত্রিককে ফোন করলে অন্য কেউ তার ফোন ধরেন। জানান মণীশের দুর্ঘটনা ঘটেছে। এর পর ফোন বন্ধ আসতে থাকে। তখনই রাজেশ বুঝতে পারেন যে, তিনি প্রতারিত হয়েছেন। তিনি সঙ্গে সঙ্গে বিষয়টি পুলিশকে জানান। পুলিশ বর্তমানে মামলাটি নথিভুক্ত করে তদন্ত শুরু করেছে।
No comments:
Post a Comment