প্রেসকার্ড নিউজ,লাইফস্টাইল ডেস্ক,১ ফেব্রুয়ারি: ইউরিক অ্যাসিডের ব্যথা একটি সাধারণ সমস্যা,যা শরীরের অনেক অংশে অনুভূত হতে পারে।পিউরিন সমৃদ্ধ খাবার খেলে শরীরে ইউরিক অ্যাসিড তৈরি হয়।এই সমস্যাটি তখন ঘটে যখন আমাদের শরীর বেশি ইউরিক অ্যাসিড তৈরি করে অথবা আমাদের কিডনি এটি সঠিকভাবে ফিল্টার করতে সক্ষম হয় না।এর ফলে জয়েন্টগুলোতে এবং তার চারপাশে ছোট ছোট পিউরিন স্ফটিক তৈরি হতে পারে।এমন পরিস্থিতিতে,সমস্যাটি আরও খারাপ হওয়ার আগেই আপনাকে এটি শনাক্ত করতে হবে।কীভাবে,আসুন জেনে নেই।
ইউরিক অ্যাসিডের ব্যথা প্রথম কোথায় হয়?
ইউরিক অ্যাসিডের ব্যথা সাধারণত প্রথমে পায়ের বুড়ো আঙুলে অনুভূত হয়,বিশেষ করে রাতে।এই ব্যথা খুব তীব্র হতে পারে এবং জয়েন্টগুলিতে ফোলাভাব,লালভাব এবং উষ্ণতাও থাকতে পারে।এরপরে এই ব্যথা হাঁটু,গোড়ালি বা কব্জির মতো অনেক জয়েন্টেও হতে পারে।যখন শরীরে ইউরিক অ্যাসিড জমা হতে শুরু করে তখন জয়েন্টগুলিতে পিণ্ড তৈরি হয়,যার ফলে ব্যথা এবং ফোলাভাব বৃদ্ধি পায়।অতএব,যদি কেউ হঠাৎ তীব্র ব্যথা এবং ফোলা অনুভব করে,তবে এটি ইউরিক অ্যাসিড বৃদ্ধির লক্ষণ হতে পারে।
ইউরিক অ্যাসিড কত হতে পারে?
বেশিরভাগ ইউরিক অ্যাসিড কিডনির মাধ্যমে প্রস্রাব দিয়ে শরীর থেকে বেরিয়ে যায়।সাধারণত শরীরে ইউরিক অ্যাসিডের পরিমাণ ৩.৫ থেকে ৭.২ মিলিগ্রাম/ডেসিলিটারের মধ্যে থাকা উচিৎ।কিন্তু যদি ইউরিক অ্যাসিড অতিরিক্ত পরিমাণে উৎপন্ন হয় অথবা কিডনি তা সঠিকভাবে ফিল্টার করতে অক্ষম হয়, তাহলে রক্তে তা বৃদ্ধি পায়।এই অবস্থাকে হাইপারইউরিসেমিয়া বলা হয়।ইউরিক অ্যাসিড বেড়ে গেলে তা জয়েন্টে জমা হয় এবং গেঁটেবাতের সমস্যা তৈরি করে।এছাড়াও,ইউরিক অ্যাসিড বৃদ্ধি শরীরে অনেক রোগের কারণ হতে পারে।
শরীরের অন্যান্য অংশের উপর ইউরিক অ্যাসিডের প্রভাব -
জয়েন্টে ব্যথা:
ইউরিক অ্যাসিডের ব্যথা সাধারণত প্রথমে পায়ের বুড়ো আঙুলে অনুভূত হয়।একে গাউট বলা হয়।এই ব্যথা খুবই তীব্র এবং জয়েন্টগুলোতে ফোলাভাব ও লালভাবও থাকতে পারে। রাতে বা সকালে হঠাৎ ব্যথা বাড়তে পারে।
শরীরের অন্যান্য অংশের উপর ইউরিক অ্যাসিডের প্রভাব
ফোলাভাব এবং তাপ:
জয়েন্টগুলিতে ফোলাভাব,তাপ এবং লালভাব দেখা দেয়।এই জায়গাটি স্পর্শে উষ্ণ মনে হতে পারে।দিনের পর দিন জয়েন্ট ফোলা এবং ব্যথা বাড়তে পারে।
হাঁটতে অসুবিধা:
ইউরিক অ্যাসিডের ব্যথা খুবই তীব্র এবং এটি জয়েন্টের নড়াচড়াকেও প্রভাবিত করতে পারে।আপনার হাঁটতে,দাঁড়াতে বা সিঁড়ি বেয়ে উঠতে সমস্যা হতে পারে।
ঘাড়,হাঁটু এবং গোড়ালিতে ব্যথা:
ইউরিক অ্যাসিডের ব্যথা কেবল পায়ে নয় শরীরের অন্যান্য অংশ,যেমন- ঘাড়,হাঁটু এবং গোড়ালিতেও হতে পারে।
হঠাৎ আক্রমণ:
ইউরিক অ্যাসিডের ব্যথা হঠাৎ আক্রমণ করতে পারে।এটি হঠাৎ তীব্র ব্যথা হিসেবে দেখা দিতে পারে এবং কয়েক ঘন্টা বা দিন স্থায়ী হতে পারে।
ইউরিক অ্যাসিড নিয়ন্ত্রণে কী করবেন?
আমিষ খাবার,অ্যালকোহল এবং উচ্চ চিনিযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন।সবুজ শাকসবজি,ফলমূল এবং গোটা শস্য খান।সারাদিন প্রচুর পরিমাণে জল পান করুন যাতে ইউরিক অ্যাসিড শরীর থেকে বেরিয়ে যায় এবং জয়েন্টগুলিতে জমা না হয়।ওজন স্বাভাবিক রাখুন।কারণ অতিরিক্ত ওজন ইউরিক অ্যাসিড বৃদ্ধি করে এবং ব্যথা বাড়াতে পারে।হালকা ব্যায়াম করুন,যাতে শরীর সুস্থ থাকে এবং ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে।যদি আপনার ইউরিক অ্যাসিড বৃদ্ধির সমস্যা থাকে,তাহলে একজন ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করুন এবং তার নির্ধারিত চিকিৎসা অনুসরণ করুন।
মনে রাখবেন যে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বেড়ে গেলে গাউটের মতো সমস্যা হতে পারে।তাই সময়মতো এটি শনাক্ত করা এবং চিকিৎসা করা গুরুত্বপূর্ণ।
বি.দ্র: এই বিষয়বস্তু,পরামর্শ সহ, শুধুমাত্র সাধারণ তথ্য প্রদান করে।এটা কোনওভাবেই যোগ্য চিকিৎসা মতামতের বিকল্প নয়। আরও তথ্যের জন্য সর্বদা একজন বিশেষজ্ঞ বা আপনার ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করুন। প্রেসকার্ড নিউজ এর দায় স্বীকার করে না।
No comments:
Post a Comment