প্রেসকার্ড নিউজ ওয়ার্ল্ড ডেস্ক, ১৪ জানুয়ারি: দক্ষিণ আফ্রিকায় অবৈধ খনিতে একশ শ্রমিকের মৃত্যু, ঘটনায় শিউরে উঠেছেন সবাই। খনিতে আটকে পড়া এই শ্রমিকরা কয়েক মাস ধরে ক্ষিদে-তৃষ্ণার সঙ্গে লড়াই করছিলেন। দক্ষিণ আফ্রিকার স্টিলফন্টেইন শহরের কাছে বাফেলসফন্টেইনে অবস্থিত সোনার খনিতে প্রায় ১০০ জন শ্রমিক আটকা পড়েন। তাদের বের করে আনতে গিয়ে দেখা যায় ক্ষিদে-তৃষ্ণায় তাঁদের মৃত্যু হয়েছে। খনি শ্রমিকদের প্রতিনিধিত্বকারী একটি দল সোমবার বলেছে। এই ঘটনা সম্পর্কিত তথ্য পাওয়া গেছে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে শ্রমিকদের পাঠানো ভিডিও থেকে, যাতে প্লাস্টিকে মোড়ানো মৃতদেহ দেখানো হয়েছে।
মাইনিং অ্যাফেক্টেড কমিউনিটি ইউনাইটেড ইন অ্যাকশন গ্রুপের মতে, ত্রাণ কাজের সময় এখনও পর্যন্ত ২৬ জন শ্রমিককে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে এবং ১৮ জনের মৃতদেহও বের করা হয়েছে। তবে এই খনি এতটাই গভীর যে সেখানে এখনও প্রায় ৫০০ শ্রমিক আটকে থাকতে পারেন। খনির গভীরতা ২.৫ কিলোমিটার বলে জানা গেছে।
মাইনিং অ্যাফেক্টেড কমিউনিটি ইউনাইটেড ইন অ্যাকশন গ্রুপের একজন মুখপাত্র সাবেলো মনগুনি দ্য অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে বলেছেন যে, শুক্রবার উদ্ধার হওয়া কয়েকজন খনি শ্রমিকের সাথে পৃষ্ঠে পাঠানো একটি সেলফোনে দুটি ভিডিও রয়েছে যেখানে প্লাস্টিকের মাটিতে মোড়ানো কয়েক ডজন মৃতদেহ দেখা যাচ্ছে।
মনগুনি বলেন, উত্তর পশ্চিম প্রদেশের খনিতে "সর্বনিম্ন ১০০ জন লোক মারা গেছে যেখানে পুলিশ প্রথম নভেম্বরে খনি শ্রমিকদের বের করে দেওয়ার জন্য একটি অভিযান শুরু করেছিল।" তাঁদের অনাহার বা ডিহাইড্রেশনের কারণে মৃত্যু হয়েছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে, মনগুনি বলেন। তিনি জানান, শুক্রবার থেকে এ পর্যন্ত ১৮টি দেহ বের করা হয়েছে।
পুলিশ ও শ্রমিকদের মধ্যে সংঘর্ষ
পুলিশ খনিটি সিলগালা করার চেষ্টা করলে শ্রমিক ও পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায়। পুলিশ বলছে, গ্রেপ্তারের ভয়ে শ্রমিকরা বের হচ্ছিলেন না, অন্যদিকে শ্রমিকদের অভিযোগ, পুলিশ তাদের দড়ি সরিয়ে দিয়েছে, যার কারণে তারা বের হতে পারছেন না।
ময়নাতদন্তের রিপোর্টে মৃত্যুর প্রথম কারণ বলা হয়েছে ক্ষিদে। খনিতে খাবার ও জল সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সব শ্রমিক মারা গেছেন। শ্রমিকদের মৃত্যু খনির নিরাপত্তা ও ব্যবস্থাপনা নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন তুলেছে।
উল্লেখ্য, দক্ষিণ আফ্রিকায় অবৈধ খনন একটি সাধারণ সমস্যা। যখন বড় কোম্পানিগুলো খনিগুলোকে অকেজো মনে করে ছেড়ে দেয়, তখন স্থানীয় খনিরা অবশিষ্ট সোনা বের করার চেষ্টা করে। এই বিপজ্জনক পরিস্থিতি তাদের জীবনের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়ায়।
No comments:
Post a Comment