নিজস্ব সংবাদদাতা, মালদা, ২৭জানুয়ারি: দাবী অনুযায়ী যৌতুকের দু'লক্ষ টাকা না পেয়ে গৃহবধূকে শ্বাসরোধ করে খুনের অভিযোগ। বিয়ের তিন বছরের মাথায় তরুণী গৃহবধূকে খুনের অভিযোগ স্বামী-সহ শ্বশুরবাড়ির লোকেদের বিরুদ্ধে। শ্বশুরবাড়ি থেকে অর্ধ উলঙ্গ অবস্থায় মেয়ের মৃতদেহ উদ্ধার করেন বাপের বাড়ির লোকেরা।
পরিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত গৃহবধূর নাম নুরজাহান খাতুন (২১)। ঘটনাটি ঘটেছে মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুর ২ নম্বর ব্লক এলাকার মালিওর ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের সোনাকুল গ্রামে। এই ঘটনায় নুরজাহানের স্বামী সহ শ্বশুরবাড়ির মোট আট জনের বিরুদ্ধে হরিশ্চন্দ্রপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। পলাতক নুরজাহানের শ্বশুরবাড়ির লোকেরা। পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করে মালদা মেডিক্যালে পাঠিয়েছে ময়নাতদন্তের জন্য।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, তিন বছর আগে হরিশ্চন্দ্রপুর থানা এলাকার টাল বাংরুয়া গ্রামের মনসুর আলীর মেয়ে নুরজাহানের সঙ্গে বিয়ে হয় পার্শ্ববর্তী সোনাকুল গ্রামের মাসুদ আলীর। নুরজাহানের বাপের বাড়ির লোকের অভিযোগ, বিয়ের ছয় মাস পর থেকে নুরজাহানকে বারবার বাপের বাড়ি থেকে টাকা নিয়ে আসার জন্য চাপ দেওয়া হত। জানা গিয়েছে, বিয়ের সময় মাসুদকে ৮৫ হাজার টাকা যৌতুক দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তাতেও মন না ভরাতে বউকে বারবার বাপের বাড়ি থেকে দু'লক্ষ টাকা নিয়ে আসার জন্য চাপ দেওয়া হতো বলে অভিযোগ।
আরও অভিযোগ, এই নিয়ে শ্বশুরবাড়ির লোকেরা নুরজাহানের ওপর শারীরিক-মানসিক অত্যাচার চালাত। নুরজাহানের শ্বশুরবাড়ির পাড়া প্রতিবেশীদের মুখ থেকে তাঁর বাবা মনসুর আলী শনিবার খবর পান, মেয়ে মারা গিয়েছে। তৎক্ষণাৎ শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে দেখতে পান একটি ঘরে মেয়ে অর্ধ উলঙ্গ-মৃত অবস্থায় শুয়ে রয়েছে। গলায় দড়ির দাগ। আশেপাশের রক্ত পড়ে রয়েছে। শ্বশুরবাড়ির লোকেরা সবাই পলাতক। এরপরে তিনি হরিশ্চন্দ্রপুর থানায় খবর দেন। পুলিশ সেদিন রাতেই মৃতদেহ উদ্ধার করে।
নুরজাহানের বাপের বাড়ির লোকের অভিযোগ, মেয়েকে অত্যাচার করে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে। এদিকে ঘটনার অভিযোগ পেয়ে তদন্ত নেমেছে হরিশ্চন্দ্রপুর পুলিশ।
মৃত বধূর বাবা বলেন, 'আমি গরীব, তাও বিয়ের সময় যৌতুক হিসেবে জামাইয়ের হাতে ৮৫ হাজার টাকা দিয়েছিলাম। কিন্তু বছর খানেক থেকে ২ লক্ষ টাকা আনার জন্য জামাই চাপ দিচ্ছিল, মেয়ের ওপর শারীরিক-মানসিক অত্যাচার চালাত। ওর শ্বশুরবাড়ি এসে দেখি মেয়ে মরে পড়ে রয়েছে।'
মৃত বধূর দাদাও অভিযুক্তদের কঠোর শাস্তির দাবী করেছেন।
No comments:
Post a Comment