প্রেসকার্ড নিউজ ওয়ার্ল্ড ডেস্ক, ০৬ ফেব্রুয়ারি: বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতে থাকাকালীন মোহাম্মদ ইউনূস সরকারের বিরুদ্ধে কড়া বক্তব্য দিয়েছেন। ইউনূস সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান শেখ হাসিনা। শেখ হাসিনা যখন ভাষণ দিচ্ছিলেন, তখন বাংলাদেশে তাঁর বাবা ও বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা শেখ মুজিবুর রহমানের বাসভবন রীতিমতো তাণ্ডব চালানো হয়। হাসিনার বক্তব্যে ক্ষুব্ধ বাংলাদেশ সরকার। ইউনূস সরকার ভারতের ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনারের কাছে তীব্র প্রতিবাদ জানায়। বৃহস্পতিবার, এক ব্রিফিংয়ে এই তথ্য জানিয়েছেন ইউনূস সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মহম্মদ তৌহিদ হোসেন।
এদিন ঢাকায় নিযুক্ত ভারতের ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনারকে তলব করা হয়। বলা হয়, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া ‘মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর বক্তব্য’ ঢাকার বিরুদ্ধে শত্রুতা করার মত পদক্ষেপ। ভারতে নির্বাসনে থাকাকালীন তাঁর সমর্থকদের উদ্দেশ্যে ভার্চুয়াল ভাষণে এই বক্তব্য দেন হাসিনা। বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ভারতকে অবিলম্বে যথাযথ পদক্ষেপ করার দাবী জানিয়েছে, যাতে হাসিনা সোশ্যাল মিডিয়া এবং অন্যান্য যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে এমন বিভ্রান্তিকর এবং উস্কানিমূলক বক্তব্য না দিতে পারেন।
বুধবার রাতে শেখ হাসিনার ভাষণের পর এই প্রতিবাদ, যেখানে তিনি দেশবাসীকে বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানান। শেখ হাসিনা যখন ভাষণ দিচ্ছিলেন, তখন বিক্ষুব্ধ বিক্ষোভকারীরা ঢাকায় তার পিতা ও বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা শেখ মুজিবুর রহমানের বাসভবন ভাংচুর করে এবং আগুন ধরিয়ে দেয়। একইভাবে আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজন নেতার বাড়িতেও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নিজ বিবৃতিতে বলেছে যে, ভারত সরকারের কাছে শেখ হাসিনার দেওয়া বিভ্রান্তিকর এবং মিথ্যা" বিবৃতির বিরুদ্ধে কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছে, কারণ তিনি বাংলাদেশে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির চেষ্টা করছেন।
ভারতের ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনারের কাছে জমা দেওয়া প্রতিবাদপত্রে বাংলাদেশ গুরুতর উদ্বেগ, হতাশা ও আপত্তি জানিয়েছে। মন্ত্রণালয় বলেছে, হাসিনার বক্তব্য দেশের জনগণের অনুভূতিতে আঘাত করছে এবং এটি দুই দেশের মধ্যে সুস্থ সম্পর্ককে ব্যাহত করার মত কাজ।
উল্লেখ্য, তাঁর ভাষণে, শেষ হাসিনা ঢাকার ঐতিহাসিক ধানমন্ডি ৩২-এ তাঁর বাবার বাড়িতে হামলার প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেন, তাঁরা একটি ভবন ভাঙতে পারে, কিন্তু ইতিহাস মুছে ফেলতে পারে না... তবে তাদের মনে রাখা উচিৎ যে, ইতিহাস নিজের প্রতিশোধ নেয়। তিনি বলেন, লাখো শহীদের আত্মত্যাগে অর্জিত জাতীয় পতাকা, সংবিধান ও আমাদের স্বাধীনতাকে বুলডোজ করার মতো শক্তি তারা এখনও জোগাড় করতে পারেনি।
হাসিনার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের পদক্ষেপ-
বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল (আইসিটি) "মানবতাবিরোধী অপরাধ ও গণহত্যার" অভিযোগে হাসিনা ও তাঁর প্রাক্তন মন্ত্রী, উপদেষ্টা, সামরিক ও প্রশাসনিক কর্তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে। হাসিনা-সহ ৯৬ জনের পাসপোর্ট বাতিল করেছে অন্তর্বর্তী সরকার।
No comments:
Post a Comment